ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি » বিস্তারিত

বিশ্বের প্রথম স্যাটেলাইট

২০১৭ সেপ্টেম্বর ২৬ ১৪:১৮:৪৬
বিশ্বের প্রথম স্যাটেলাইট

আনিসুর রহমান আলিফ : স্যাটেলাইট নামটির সাথে প্রায় সকলেই পরিচিত আছেন। স্যাটেলাইট হচ্ছে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ যা পৃথিবীকে কেন্দ্র করে একটি নির্দিষ্ট কক্ষ পথে ঘুরতে থাকে এবং উক্ত স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করার জন্য ভূ-পৃষ্ঠে একটি ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র থাকে।

বর্তমান যুগে স্যাটেলাইট ছাড়া চলা মুশকিল। এর মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয় জরিপ এবং নজরদারির জন্য স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয় যেমন: টেলিভিশন, সেল ফোন, ইন্টারনেট, সেনা, নৌ, বিমানবাহিনীর নিজস্ব যোগাযোগের কাজ এবং নজরদারিতে, আবহাওয়া ব্যবস্থা, মহাকাশ সম্পর্কে গবেষণাসহ আরো অনেক অনেক কাজে স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বঙ্গবন্ধু-১ নামে বাংলাদেশ তার প্রথম স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করবে এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশ মহাকাশ বিজ্ঞানে তার যাত্রা শুরু করবে। অবশ্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্রাক প্রতিষ্ঠান একটি ন্যানো স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়েছে এবং তথ্য আদান প্রদান করছে।

বিশ্বের প্রথম স্যাটেলাইট :

১৯৫৪ সালের ১৭ই ডিসেম্বর তৎকালিন সোভিয়েত রাশিয়ার রকেট বিজ্ঞানী সের্গেই করলভ একটি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনার কথাপ্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান দিমিত্রি আস্টিনভকে জানান। এবং স্যাটেলাইটটি পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠাতে রকেট ডিজাইনের কাজ শুরু করেন।

তখন চলছিল আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যে স্নায়ূযুদ্ধ। এই স্যাটেলাইট প্রেরণ বিষয়টি স্নায়ূ যুদ্ধটিকে আরো উষ্কে দেয় কারণ রাশিয়া স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে খবর পেয়ে তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোয়াইটডি. আইজেন হাওয়ার ঘোষণা দেন তারাও পৃথিবীর কক্ষ পথে স্যাটেলাইট প্রেরণ করবে। শুরু হয়ে যায় প্রতিযোগিতা। এরপর দুই দেশের অনেকগুলো ব্যর্থ প্রচেষ্টার পরে ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭ টা ১৯ মিনিটের সময় সোভিয়েত রাশিয়া সর্বপ্রথম স্পুটনিক-১ নামের একটি স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপন করে।

স্পুটনিক-১ নামের স্যাটেলাইটটি ছিল ৫৮ সেঃমিঃ এর একটি লোহার গোলক। যাতে চারটি রেডিও অ্যান্টেনা ছিল এবং এটি পৃথিবীতে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি পাঠাতে সক্ষম হয়েছিল। ব্যাটারি ফুরিয়ে যাওয়ার পর ১৯৫৭ সালের ২৬ অক্টোবর এটি তথ্য প্রেরণ বন্ধ করে দেয়। তবে এটি পৃথিবীর উপরিভাগে কক্ষপথে ছিল প্রায় তিন মাস। এই তিন মাসে কৃত্রিম উপগ্রহটি পৃথিবীর চারপাশে সাত কোটি মাইল পরিভ্রমণ করেছিল। অবশেষে ১৯৫৮ সালের ৪ জানুয়ারি বিজ্ঞানীরা এটিকে ধ্বংস করে দেন। নিজস্ব কক্ষপথে পরিভ্রমণকালে এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৯ হাজার কিলোমিটার বা ১৮ হাজার মাইল। নির্ধারিত কক্ষপথে পৃথিবীর চারপাশে একবার ঘুরে আসতে এটির ৯৬ মিনিট দুই সেকেন্ড সময় লাগত। পরিভ্রমণের সময় পৃথিবীর উপরিভাগ থেকে কৃত্রিম উপগ্রহটি সর্বনিম্ন ২১৫ এবং সর্বোচ্চ ৯৩৯ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করত। এটির ভর ছিল ৮৩ দশমিক ছয় কিলোগ্রাম।

(এআরএ/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭)