ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » শিক্ষা » বিস্তারিত

তিনি মানুষ গড়ার কারিগর

২০১৭ সেপ্টেম্বর ২৮ ১০:১৫:০৫
তিনি মানুষ গড়ার কারিগর

স্টাফ রিপোর্টার : ছাত্র নং অধ্যয়ং তপঃ বাক্যের পরিপূর্ণতা মেলে শিক্ষকের জ্ঞানের ছোঁয়ায়, জ্ঞানগর্ভ পাঠদানে। এমন অনেক গুণী শিক্ষক রয়েছেন দেশে। ছাত্রদের সাথে মিশে কখনো বন্ধুত্ব, কখনো বা স্নেহ, ভালবাসায় বাবার মতো আদর্শ স্থাপনের দৃষ্টান্ত চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের শিক্ষক মো. লোকমান আহমেদ তালুকদার। ছাত্রদের বড় হওয়ার ক্ষেত্রে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করতে হৃদয়বান এ শিক্ষক যেমন তুলার মতো নরম, আবার ছিলেন ইস্পাতদৃঢ় কঠিন।

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জের প্রত্যাশী গ্রামের মানুষদের জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করেছেন মো. লোকমান আহমেদ তালুকদার। তার হাতেই স্বনামের সাথে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে প্রত্যাশী আর. এ উচ্চ বিদ্যালয়। আর তিনি ছিলেন এর প্রধান কারিগর প্রধান শিক্ষক। এমন একজন গুনীশিক্ষককে কাছে পেয়ে সম্মাননা জানাতে ভোলেননি তার সাবেক ছাত্ররা।

রাজধানীর গুলশান-১ এর ৩ নং সড়কের মিরাজ রেস্টুরেন্টে সংবর্ধনার আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের গড়া সংগঠন ‘অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন প্রত্যাশী আর. এ উচ্চ বিদ্যালয়।’ ১৯৬৮ সালে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানটির অর্ধশতাধিক প্রাক্তন ছাত্র অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে নিজের অনুভূতির প্রকাশ ও স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এ প্রধান শিক্ষক।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের কাজ জ্ঞানের আলোয় ছাত্রদের আলোকিত করা। উঠতি সময়েই যদি শিক্ষার্থীদের আলোকিত করা না যায় তবে পরবর্তী জীবন হয়ে উঠে ওদের অনেক কঠিন। আজ মনে হচ্ছে একটুও হলেও আমি সে কাজ করতে পেরেছি। আজ আমারই ছাত্র দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি চাকরি, ব্যাংকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের দেখে আমার মন ভরে গেল।

তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে সালে পাশ করা এএসসি ব্যাচের ছাত্ররা ক্লাস এইটে ৮ জন বৃত্তি পেয়েছিল। যা ওই সময় বেশ আলোচনায় আনে প্রতিষ্ঠানকে। একটি জেলার পাড়ার প্রতিষ্ঠানকে জ্ঞানের বাগান বানানোর উদ্যোগে সাথী হিসেবে পেয়েছিলাম মেধাবী ছাত্রদের, গ্রামের মানুষ ও বন্ধুদের।

তিনি বলেন, জ্ঞান, সুশিক্ষা কখনো মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না। সে জ্ঞান ও সুশিক্ষা তোমাদের ধরে রাখতে হবে। গুরুজনদের শিক্ষা জীবনের কোনো না কোনো সময় কাজে লাগেই। যারা সফল তা নিশ্চয় বুঝতে পেরেছো। স্ত্রী মোর্শেদা আহমেদসহ দুই ছেলে ও পুত্রবধুকে নিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি।

১৯৯৭ সালের ব্যাচের মেধাবী শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন মজুমদার বর্তমানে পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত এসপি হিসেবে প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত। তিনি বলেন, আমাদের জীবনের বড় প্রাপ্তি স্যারের মতো গুরুজন পেয়েছি। তার জ্ঞান, শাসন আমাদের পথকে প্রশস্ত করেছে। স্যারের দীর্ঘায়ু কামনা করি।

প্রাক্তন ছাত্র ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম মিজি বলেন, জীবনে আমরা অনেক পেয়েছি। কিন্তু স্যারের মতো গুনীজনকে নিয়ে আমরা অহঙ্কার করতে পারি। তার কারণে আমাদের প্রত্যাশী গ্রামের মানুষের মধ্যে শিক্ষার বিপ্লব ঘটেছে।

নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ২০ বছর আগে স্যার আমাদের পড়িয়েছেন। অথচ আজও দেখা হলে স্যার নাম ধরে ডেকে কথা বলেন। অবাক হই, স্যার হাজার হাজার ছাত্র পড়িয়েও আমার মতো অনেক ছাত্রের নাম মনে রেখেছেন।

আহমেদ নোমান বলেন, আজকের অনু্ষ্ঠানে ওয়াদা করেছি সব ভাল কাজে আমরা এগিয়ে থাকব। এলাকার শিক্ষার মানোন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখব।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৭)