ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » প্রবাসের চিঠি » বিস্তারিত

নিউইয়র্কে ম্যানহাটান বাংলা সাংস্কৃতিক স্কুলে বই উৎসব

২০১৭ অক্টোবর ১০ ১৬:২৮:৫৬
নিউইয়র্কে ম্যানহাটান বাংলা সাংস্কৃতিক স্কুলে বই উৎসব

সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, নিউইয়র্ক : বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিউইয়র্কে ম্যানহাটান বাংলা সাংস্কৃতিক স্কুলে বাংলা পাঠ্যপুস্তক উৎসব উদযাপিত হয়েছে। স্থানীয় সময় গত ৮ অক্টোবর রোববার অপরাহ্নে ম্যানহাটানের পিএস ১৭১ এ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বাংলা স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি-রাষ্ট্রদূত ও চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এ কে আবদুল মোমেন।

ম্যানহাটান বাংলা সাংস্কৃতিক স্কুলের সিইও ইকবাল আহমেদ মাহবুবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান এবং বাংলাবাজার বিজনেস এসোসিয়েশন ও বাংলাবাজার জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ গিয়াস উদ্দিন।

ম্যানহাটান বাংলা সাংস্কৃতিক স্কুলের সাংস্কৃতিক পরিচালক মনিকা রায় এবং পরিচালক প্রশাসক মো. তাজুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম সম্পাদক ও টিভি উপস্থাপক সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক মো. শাহাদাত হোসাইন, আমেরিকান-বাংলাদেশী ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন ইনক’র সাধারণ সম্পাদক জামাল হুসেন, এবিবিএ কর্মকর্তা বিলাল চৌধুরী, ছাতক সমিতির সভাপতি মো: আবদুল খালেক, বাংলা স্কুলের সিনিয়ার শিক্ষক কবি আশরাফ হাসান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল রুখসানা রাজ্জাক খান, শিক্ষিকা রুনা লায়লা, সানজিদা খানম, স্কুলের পরিচালক মানিক আহমেদ, মো.মনির উদ্দিন, আজমান আলী, দীন ইসলাম, আবদুর রহিম সেলিমা, মো. ইসমাইল, কাওসার ভূইয়া, সুফিয়া আলী, শিল্পী, তৌহিদুর আহম্মদ, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট ইফজাল চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্কুলের শিক্ষার্থীরা অতিথিদের ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানায়।

উৎসবমুখর পরিবেশে আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেন স্কুলের কর্মকর্তারা। আনন্দ-উচ্ছ¡াসে এসব বই গ্রহণ করে ছাত্রী-ছাত্রীরা। এসময় সৃষ্টি হয় ভিন্ন এক আমেজ। অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা ছাড়াও বিপুল সংখ্যক প্রবাসীও উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. এ কে আবদুল মোমেন বাংলাদেশের দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, এমন একদিন আসবে ছেলে-মেয়েরা আমেরিকায় পড়া-শুনা শেষ করে বাংলাদেশে গিয়ে কাজ করবে। তখন এ বাংলা শিক্ষাটা তাদের বড় কাজে আসবে। তিনি এসময় কমিউিিনটি ও দেশ সেবায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে বাংলাদেশীদের মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।

কনসাল জেনারেল শামীম আহসান ম্যানহাটান বাংলা সাংস্কৃতিক স্কুলের কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, এ প্রজন্মের সন্তানদের বাংলা শিক্ষায় উৎসাহ দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বই বিনামূল্যে বিতরণের এ উদ্যোগ নেয়া হয়। বাংলাদেশী তরুণ প্রজন্মের চিন্তা চেতনায় বাংলা ভাষা সাহিত্য সাংস্কৃতিক বিকাশ সাধনে বাংলা স্কুল নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের বাংলাভাষা ও সংস্কৃতি চর্চা সহজতর হবে।

আলহাজ গিয়াস উদ্দিন এ প্রজন্মের সন্তানদের বাংলা শিক্ষায় উৎসাহ দেয়ার জন্য এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগের প্রশংসা করে নিজ পরিবার থেকে সন্তানদের বাংলা শিক্ষায় উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান।

ম্যানহাটান বাংলা সাংস্কৃতিক স্কুলের সিইও ইকবাল আহমেদ মাহবুব প্রবাসী বাংলাদেশী এ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মাঝে ফ্রি স্কুল বই বিতরণ করার জন্য কনসাল জেনারেল ও বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্কুলের কার্যক্রম আরো এগিয়ে নিতে সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিগত ২ বছর যাবত বাঙালী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ফ্রি স্কুল বই বিতরণ করা হচ্ছে। এতে তার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা দারুণভাবে উপকৃত হচ্ছে। উৎসবকে সাফল্যমন্ডিত করে তোলার জন্য সংগঠনের সকল সদস্য, শুভানুধ্যায়ী ও সহযোগীদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইকবাল আহমেদ মাহবুব।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বক্তা এ ধরনের উদ্যোগের প্রশংসা করে প্রবাসে জন্ম নেয়া ও বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের জন্য এর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। ম্যানহাটানে বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেওয়ার যে প্রয়াস নেয়া হয়েছে তা মাইল ফলক হয়ে থাকবে।

তারা বলেন, প্রবাসে শিশুদের বাংলা শেখানোর কাজ অনেকের কাছে কঠিন মনে হলেও আসলে এটা মোটেও কঠিন নয়। এজন্য অভিভাবকদের উদ্যোগী হতে হবে। ঘরে ঘরে নিজ সন্তানদের সাথে সব সময় বাংলায় কথা বলার চর্চা রাখতে হবে। প্রবাসে নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাভাষা ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরা সকল অভিভাবকেরই কর্তব্য বলে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।

(এসএইচএস/এসপি/অক্টোবর ১০, ২০১৭)