ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

দিনাজপুরে রামসাগর দীঘিতে দূর্লভ প্রজাতির কাছিম

২০১৭ অক্টোবর ২৩ ১৫:৩২:২৫
দিনাজপুরে রামসাগর দীঘিতে দূর্লভ প্রজাতির কাছিম

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : প্রায় সাড়ে ২৪ কেজি ওজনের এক দূর্লভ প্রজাতির কাছিম ধরা পড়েছে দিনাজপুরের ঐতিহাসিক রামসাগর দীঘিতে। জেলা প্রশাসনের আহবানে সৌখিন মাছ শিকারীরা হুইল ফেলে মাছ শিকারের সময় শনিবার সন্ধায় এই কাছিমটি হুইলে আটকা পড়ে। মাছ ভেবে হুইল টানার পর বিশাল আকৃতির ওই কাছিমটি উঠানোর পর তা তাৎক্ষণিক মোটর সাইকেল যোগে বাইরে নিয়ে লাপাত্তা হয়।

এই খবর যায় রামসাগর জাতীয় উদ্যানের ন্যাশনাল পার্কের কিউরেটর এ.এম.আব্দুস সালাম তুহিনের কাছে। তিনি তাৎক্ষনিক উদ্যোগ নেন এই বিরল প্রজাতির কাছিম উদ্ধারের। স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করেন। তরুণ মৎস্য শিকারির নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন। ফোনও দেন। বলেন, ভাই কাছিম তো আর মাছ নয়; ওকে জলদি নিয়ে আসুন, দীঘির জলে ছেড়ে দিতে হবে! বন্যপ্রাণী আইনে কাছিম ধরা,আটক রাখা,বিপনন ইত্যাদি দন্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু কিছুতেই কাজ হল না।

সে বলে কাছিম ধরেছিলাম ঠিকই কিন্তু সে আর আমার কাছে নেই; বিক্রী হয়ে গেছে। বুঝলাম সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবে না! ইতোমধ্যে বগুড়া অঞ্চলের বনসংরক্ষক ও দিনাজপুর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মহোদয়ের কাছ থেকে কাছিম উদ্ধারের নির্দশনাও পেয়ে গেছি।তাই আর বিলম্ব না করে উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলাম,পেলামও তৎক্ষনাৎ।

অবশেষে নানান নাটকীয়তার এক পর্যায়ে কোতোয়ালী থানার ওসির নির্দেশে একটি পদোস্থ পুলিশ টিম কাছিম নাটকের নটরাজ এর আউলিয়াপুরের বাড়ী ঘেরাও করে।এবারে বরফ গলতে শুরু করে। তবে কাছিম পেলাম না। জানতে পারলাম শহরের বড়বন্দর এলাকার এক হিন্দু মাছ ব্যবসায়ীর কাছে কাছিমটি ১৬৬০০/- টাকায় বিক্রীত হয়েছে। বিক্রিতকালে এর ওজন ছিল ২৪.২ কেজি। পুলিশী তৎপরতার এক পর্যায়ে কাছিমটি উদ্ধার হয় এবং এনডিসি মাধ্যমে কাছিম ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়। রামসাগর জাতীয় উদ্যানে কাছিমটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে এনডিসি ও এসি ল্যান্ড সদর এর উপস্থিতিতে দীঘির জলে অবমুক্ত করা হয়।

রামসাগর জাতীয় উদ্যানের ন্যাশনাল পার্কের কিউরেটর এ.এম.আব্দুস সালাম তুহিন জানায়,যেহেতু একটি’র সন্ধান মিলেছে,সেহেতু আরো অনেক কাছিম আছে রাম সাগর দীঘীর জলে। তারা নিয়মিত ডিমও দিয়ে থাকে। বাচ্ছাও ফোটায়। মুলত কাছিম ডিম পাড়ে উচুতে। হয়তো ডিম কেউ নিয়ে যায়। নয়তো শেয়াল কুকুর খেয়ে ফেলে। এ দিকে নজর রাখতে হবে। বিশাল আকৃতি’র ওই কাছিম উপমহাদেশে আর নেই বলে ধারনা করছে বিশেষজ্ঞরা।

(এসএএস/এসপি/অক্টোবর ২৩, ২০১৭)