ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

হাইমচরে মেঘনার ভাঙন, হুমকির মুখে বাঁধ

২০১৭ অক্টোবর ২৩ ১৫:৪৮:১৪
হাইমচরে মেঘনার ভাঙন, হুমকির মুখে বাঁধ

চাঁদপুর প্রতিনিধি : চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর পূর্বপাড় মূল ভূখন্ড রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ প্রকল্প রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার কাজের অভাবে ৩শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ বাঁধ প্রকল্পটি হুমকির মুখে পড়েছে। গত কয়েক দিনে নিন্মচাপের প্রভাবে নদীতে সৃষ্ট জোয়ার ও ঢেউয়ের আঘাতে বাঁধ এলাকার চরভৈরবী আমতলীতে ১শ’ মিটার ও গাজীনগরে ১শ’ ৫০ মিটার সিসি ব্লক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তেলিরমোড় এলাকা এখন চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইমচর অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকারের আমলে হাইমচরে ১৪ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৯শ’ মিটার সিসি ব্লকের স্থায়ী বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেলেও সংস্কার কাজ না হওয়ায় পুরো প্রকল্পটি এখন হুমকির মুখে পড়েছে।

হাইমচর উপজেলার তেলিরমোড়সহ ১৪ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধ এলাকার ক’টি স্থানে রক্ষণাবেক্ষন ও সংস্কার কাজ না হওয়ায় বাঁধ এলাকার একাধিক স্থানে যে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে, তা সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষনের জন্যে ১১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প চাঁদপুর পাউবো কর্তৃপক্ষ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেয়। কিন্তু বরাদ্দ না আসায় সংস্কার কাজ করতে পারে নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে হাইমচর উপজেলার এ ৩শ’ কোটি টাকার স্থায়ী বাঁধ প্রকল্প মেঘনাগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে স্থানীয় অধিবাসীদের। জরুরি ভিত্তিতে এ প্রকল্প বাঁধ রক্ষায় সংস্কার কাজ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

গত ২০ ও ২১ অক্টোবর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপের ফলে প্রচন্ড ঝড়ের সাথে নদীতে পানি বৃদ্ধি ও তীব্র ঢেউ সৃষ্টি হয়। এ ঢেউয়ের আঘাতে হাইমচরের আমতলী, গাজীনগর, তেলিরমোড়সহ বাঁধ প্রকল্প এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেয়। এ ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারীসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাবৃন্দ।

গত ২২ অক্টোবর রোববার সকাল ১০টায় ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শনকালে হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, হাইমচর রক্ষায় আমাদের মাননীয় এমপি মহোদয় ডাঃ দীপু মনির প্রচেষ্টায় জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ৩শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করেছে।

এখন এ বাঁধ সংস্কার কাজের জন্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ১১ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে সংসদ সদস্য ডাঃ দীপু মনির পরামর্শে অচিরেই সংস্কার কাজ জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করে হাইমচর রক্ষাবাঁধ টিকিয়ে রাখা হবে।

পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এসএম কবির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির প্রধানীয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম জাহিদ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আহম্মদ আলী মাস্টার, স্থানীয় মেম্বার দেলোয়ার হোসেন সর্দার, পারভেজ হাওলাদার, শিক্ষক রেজাউল কবির রাজিব প্রমুখ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড হাইমচরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন এ বিষয়ে বলেন, নিন্মচাপের প্রভাবে চরভৈরবীর আমতলীসহ তিন স্থানে প্রায় ২৫০ মিটার বাঁধের সিসি ব্লক নদীগর্ভে চলে গেছে। এছাড়া বাঁধ নির্মাণের পর থেকে একাধিক স্থানে ৭২৪ মিটার বাঁধের সিসি ব্লক নদীতে চলে যাওয়াসহ প্রায় ৯শ’ মিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রকল্পটি রক্ষণাবেক্ষনের জন্যে প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে প্রকল্প বরাদ্দের জন্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকল্প দেয়া আছে। বরাদ্দ সাপেক্ষে বাঁধ রক্ষায় সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।

নিন্মচাপের ফলে ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন হাইমচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাসুম। গতকাল রবিবার সকাল ৮টায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে তিনি ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।

(ইউএইচ/এসপি/অক্টোবর ২৩, ২০১৭)