ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » অর্থ ও বাণিজ্য » বিস্তারিত

ঘুরে দাঁড়িয়েছে মোংলা বন্দর

২০১৭ ডিসেম্বর ০১ ১৭:১৫:০২
ঘুরে দাঁড়িয়েছে মোংলা বন্দর

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ৬৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী শুক্রবার পালিত হয়েছে। ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলার যাত্রা শুরু হয়। মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার প্রথম দিক থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানী এবং খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ও সার আমদানীর মধ্যদিয়ে জমজমাট হয়ে উঠে এ বন্দর। তারপর থেকে শুরু হয় বিভিন্ন ধরণের পণ্য আমদানী-রপ্তানী। কিন্তু বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এ বন্দরের দিকে তেমন নজরদারী না থাকায় ড্রেজিংয়ের অভাবে পশুর চ্যানেলের নাব্যতা কমার ফলে জাহাজ আসা কমে যায়। ফলে স্থবির হয়ে পড়া এ বন্দরকে মৃত বন্দর হিসেবে ঘোষণা ও আখ্যা দেন তৎকালীন নৌ পরিবহণ মন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদেশে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের ড্রেজিং, নিজস্ব ড্রেজার ও আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয়সহ বন্দরকে আধুনিক হিসেবে গড়ে তোলায় সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এরপর মৃত মোংলা বন্দর লোকসানী দুর্নাম ঘুচিয়ে ঘুরে দাড়াতে শুরু করে। দিনকে দিন বাড়তে থাকে মোংলা বন্দরে জাহাজের আগমন, পণ্য হ্যান্ডেলিং ও লোকসানের র্দূনাম ঘুচিয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়। ইতিমধ্যেই মোংলা বন্দরে জাহাজ আগমনের সংখ্যা বিগত সকল অর্থ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. মোস্তফা কামাল জানান, ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে এ বন্দরে জাহাজ ভিড়ে ছিল ৬২৩টি। আর ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের প্রথম ৫ মাসে (জুলাই থেকে নভেম্বর) জাহাজ এসেছে ২৯৪টি। এরমধ্যে শুধু নভেম্বরে এসেছে ৮০টি জাহাজ। জাহাজ আগমনের এ সংখ্যা বিগত সকল বছরের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এর আগে ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ৪৮২টি, ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে ৪১৬টি আর ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে জাহাজ আগমনের সংখ্যা ছিল ৩৪৫টি।

বিশেষ করে ২০০১-২০০২ অর্থ বছর থেকে জাহাজ আগমন সংখ্যা কমতে থাকলেও তা পুনরায় ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছর থেকে বাড়তে শুরু করে। বাড়তে বাড়তে এখন মোংলা বন্দরে রেকর্ড সংখ্যক জাহাজের আগমন-নির্গমন হচ্ছে। এতে বন্দরে পণ্য হ্যান্ডেলিংয়ের পাশাপাশি আয়ও অনেক বেড়েছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর একেএম ফারুক হাসান বলেন, পদ্মা সেতু, খুলনা- মোংলা রেলে, খারজাহান বিমান বন্দর ও মোংলায় অর্থনৈতিক চালু হলে মোংলা বন্দরের উপর আরো চাপ বাড়বে। সেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় বন্দর জুড়ে ব্যাপক উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড চলছে।

বর্তমানে বন্দরে যে পরিমাণ জাহাজ আসছে এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং আরো বেশি অগ্রগতির ক্ষেত্রে বন্দর চ্যানেলের নাব্যতা ঠিক রাখা, মোংলা থেকে যশোর বিমান বন্দর পর্যন্ত সড়কপথ সংস্কারসহ সকল শ্রেণীর মানুষকে একাত্ম হয়ে কাজ করতে হবে।

এদিকে শুক্রবার সকালে মোংলা বন্দরের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মিলাদ-মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়।

(এসএকে/এসপি/ডিসেম্বর ০১, ২০১৭)