ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » বিস্তারিত

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে এ কোন আওয়ামীলীগ!

২০১৭ ডিসেম্বর ২৭ ১১:৪২:২৯
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে এ কোন আওয়ামীলীগ!

প্রবীর সিকদার


আগামীকাল ২৮ ডিসেম্বর ফরিদপুরের আলফাডায় আলফাডাঙ্গা পৌরসভা, আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদ, গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ ও বুড়াইচ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনের বৈশিষ্ট্য হল, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সবাই আওয়ামীলীগের। এলাকাটি বরাবর বঙ্গবন্ধুভক্তদের ঘাঁটি। সেখানকার নির্বাচনে আওয়ামীলীগের হারের কোনই সম্ভাবনা নেই।

সেই আলফাডাঙ্গায় অতি উৎসাহী এক হাইব্রিড নেতা নৌকা দরদী হয়ে ওঠায় এলাকায় ভয়ঙ্কর আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সময়োচিত তৎপরতায় সেখানে এখন বইছে স্বস্তির সুবাতাস। মানুষের মনে আস্থা ফিরে এসেছে, কালকের নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। তবে কারা আলফাডাঙ্গায় সেই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, কি ছিল তাদের উদ্দেশ্য, এখন এই প্রশ্ন আলফাডাঙ্গা তথা আলফাডাঙ্গা-বোয়ালমারী-মধুখালি সংসদীয় আসন এলাকায়।

আলফাডাঙ্গা-বোয়ালমারী-মধুখালি সংসদীয় আসন এলাকাটি আওয়ামীলীগের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত। এই আসনে জে. জিয়ার দুর্বিষহ শাসনামলে তথা ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামীলীগের নৌকা বিজয়ী হয়। সেই এলাকায় দুর্দান্ত সফল আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে নৌকা বিজর নিয়ে এতো আতঙ্ক সৃষ্টির কি আছে!

আলফাডাঙ্গার নানা স্তরের মানুষের সাথে কথা বলে যায়, হাল আমলে অতি উৎসাহী এক হাইব্রিড নেতা এক মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে এলাকায় আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ও অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি এবং বিভাজন সৃষ্টি করে স্থানীয় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সর্বনাশা ধারা সৃষ্টি করে চলেছেন। মন্ত্রীর আত্মীয় এই পরিচয়ের কারণে কেউ ভয়ে মুখ খুলছেন না। ওই হাইব্রিড নেতার খায়েস হয়েছে, তিনি নাকি আগামী সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা-বোয়ালমারী-মধুখালি আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন! আর সেই মনোনয়ন নিশ্চিত করতে তিনি আওয়ামীলীগের দুর্গে ফাটল ধরানোর কাজটি দারুণ চাতুর্যের সাথে করে চলেছেন! আগামীকালের এই স্থানীয় পরিষদের নির্বাচনকে তিনি তার স্বার্থে ব্যবহার করে আওয়ামীলীগের ঐক্যের ধারায় সর্বনাশা ভাঙন ডেকে আনছেন! আওয়ামীলীগের কর্মী-সমর্থকেরা বিস্মিত, বিএনপি আমলে যিনি বিএনপি দলীয় এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর আত্মীয় ছিলেন, আজ তিনিই আওয়ামীলীগ দলীয় প্রভাবশালী এক মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন কি করে?

সেই প্রশ্ন শুধুই আলফাডাঙ্গার বঙ্গবন্ধুভক্তদের নয়, আমারও। আলফাডাঙ্গার স্থানীয় পরিষদদের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মাথা ঘামানোর কিছুই নেই। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সবাই আওয়ামীলীগেরই নেতাকর্মী। ভোট যুদ্ধে যেই জয়লাভ করুক, তিনিই আওয়ামীলীগের। আওয়ামীলীগের কর্তাব্যক্তিদের কেউ কি আওয়ামীলীগের দুর্গের এই সর্বনাশা খেলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না? হে আওয়ামীলীগ, জাগো! এখনো সময় আছে এই ভয়ংকর হাইব্রিড নেতার হাত থেকে আওয়ামীলীগকে দ্রুত রক্ষা কর। বঙ্গবন্ধুভক্তদের দুর্গে ওই হাইব্রিড নেতা যে ভয়ংকর খেলা খেলছেন, এর পরিণাম হবে ভয়াবহ! নিশ্চিত ওই সংসদীয় আসনটি স্বাধীনতা বিরোধীদেরদীয় কব্জায় নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র এখনই ভেঙে গুঁড়িয়ে দাও। আমি নিশ্চিত, আওয়ামীলীগে উড়ে এসে জুড়ে বসা ওই হাইব্রিড নেতা কালকের ব্যালটে জীবনের সেরা ধাক্কাটি খাবেন। মানুষ সেই ধাক্কা দেওয়ার জন্যই প্রহর গুনছেন। জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু! জয় হোক আলফাডাঙ্গার বঙ্গবন্ধু অন্তপ্রাণ গণমানুষের।

(পিএস/অ/ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭)