ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

জেলা পরিষদের জায়গা দখল 

ভোমরা বন্দরে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ অব্যহত

২০১৮ জানুয়ারি ১৬ ১৯:০৪:০৭
ভোমরা বন্দরে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ অব্যহত

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ অব্যহত রয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করতে দিন রাত শ্রমিক কাজ করে চলেছে। অভিযোগ, জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেও মিলছে না কোন প্রতিকার।

ভোমরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম আনারুল ইসলাম জানান, ১৯৮১ সালের ১২ আগষ্ট ভোমরা বন্দরের গ্রামীন ফোনের টাওয়ারের রাস্তার দক্ষিণ পাশের এক একর ৬৫ শতক জমি শহরের কাটিয়ার আবুল হোসেন মহকুমা প্রশাসকের কাছ থেকে কৃষি কাজ করার জন্য বাংলা ১৩৭৬-১৩৮১ সাল (ছয় বছর) পর্যন্ত লীজ নেন। ছয় মাসের আগে হস্তান্তর অযোগ্য ১৪ আগষ্ট ওই জমি অবৈধভাবে সাবেক তহশীলদার গোলাম মোস্তফা ও জিন্নাত আলীর কাছে রেজিষ্ট্রি দলিল মূলে এক একর ৬০ শতক বিক্রি করেন আবুল হোসেন।

১৯৮৯ সালের ৪ ডিসেম্বর তাদের কাছ থেকে ওই জমি কেনেন ভোমরা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ও আছিয়াসহ কয়েকজন। ২০১৪ সালে ওই জমি জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাকেসহ জালালউদ্দিন আকবর ও কামারুজ্জামানসহ ১৫জনকে ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আছিয়া ও রফিকুলসহ তাদের সহযোগিদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৯ ফেব্র“য়ারি দু’টি দেওয়ানী মামলা করা হয়। তিনিসহ ১৫জন ডিসিআর গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আছিয়া ও রফিকুলসহ কয়েকজন আদালতে মামলা করেন। যাহা চলমান রয়েছে বরে জানান তিনি।

আনারুল ইসলাম আরো জানান, গত বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে নাশকতা মামলার আসামী মিজানুর রহমান মিন্টু, রফিকুল ইসলাম, শহীদুল ইসলামসহ ভূমিদস্যুরা তাদের (ইজারা গ্রহীতাদের) জমি জবরদখল করার চেষ্টা করে। পহেলা ফেব্র“য়ারি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে জানালে তিনি সার্ভেয়র পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন।

জেলা পরিষদ থেকে ৯ ফেব্রুয়রি উভয়পক্ষকে নোটিশ করে ১৩ ফেব্র“য়ারি সকাল ১০টায় শুনানীর জন্য দিন ধার্য করা হয়। শুনানী শেষে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় প্রধান নির্বাহী মঈনুল ইসলাম বিরোধপূর্ণ জমিতে কাজ না করার জন্য উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেন। কিন্তু আদেশ অমান্য করে গত বছরের ২ জুন থেকে সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন কামরুলের বন্দোবস্ত নেওয়া জমিতে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। সেটি শেষ হওয়ার পর গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ওই জমিতে দিন রাত ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক লাগিয়ে জোরপূর্বক বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ অব্যহত রেখেছেন।

সরজমিনে মঙ্গলবার সকালে ভোমরা বন্দর এলাকায় গেলে কামরুজ্জামানসহ কয়েকজন জানান, রফিকুল মেম্বরের নেতৃত্বে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে অবৈধ নির্মাণ কাজ দিন রাত চলছে। প্রতিবাদ করে লাভ হচ্ছে না।

তবে সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, তারা ক্রয়সূত্রে ওই জমির মালিক। তাই সেখানে নির্মাণ কাজ করতে কোন বাধা নেই।

জেলা পরিষদের সদস্য আল ফেরদৌস আলফা জানান, চোখের সামনে জায়গা জবরদখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজের বিষয়টি তিনি সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে অবহিত করেছেন। তাতেও কোন কাজ না হওয়ায় তিনি অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধে চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।তবে ওই জমিতে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, রফিকুল ইসলাম যেখানে ঘর নির্মাণ করছেন সেখানে তিনি আদালতের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন । জেলা পরিষদের আইনজীবীদের মাধ্যমে আইনি লড়াই করে সমস্যার সমাধান করা হবে।

(আরকে/এসপি/জানুয়ারি ১৬, ২০১৮)