ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » প্রবাসের চিঠি » বিস্তারিত

বিজ্ঞাপনে বিব্রত প্রবাসীরা

যুক্তরাষ্ট্রে সোনালী এক্সচেঞ্জ বন্ধের উপক্রম

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ০৭ ১৫:৫৩:২৬
যুক্তরাষ্ট্রে সোনালী এক্সচেঞ্জ বন্ধের উপক্রম

নিউ ইয়র্ক : যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে বৈধ উপায়ে অর্থ প্রেরণের একমাত্র সরকারি মাধ্যম সোনালী একচেঞ্জ বন্ধের উপক্রম হয়েছে। দেশ-বিদেশে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপকহারে ‘জুম পে-পাল মানি ট্রান্সফার’ নামক অ্যাপ প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন চলায় যুক্তরাষ্ট্রের সোনালী এক্সচেঞ্জের গ্রাহক সংখ্যা দিনদিন কমছে।একই সঙ্গে গ্রাহকরা বিব্রতবোধ করছেন। বাংলা প্রেস।

যুক্তরাষ্ট্রের সোনালী এক্সচেঞ্জ পরিচালনা করে থাকেন বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক।আবার জুম মানি ট্রান্সফার অ্যাপের ওই বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে স্বয়ং সোনালী ব্যাংকের সিইও এবং এমডি ওবায়েদুল আল মাসুদ প্রবাসীদের জুম মানি ট্রান্সফার অ্যাপে ব্যবহার করতে বলছেন।এ নিয়ে প্রবাসীরা চরম বিভ্রন্তিতে ভুগছেন।

প্রবাসে সোনালী এক্সচেঞ্জ দেশের সোনালী ব্যাংকের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। প্রবাসীদের অর্থ নিরাপদে বৈধ পথে দেশে পাঠানোর সুবিধা দিতে ১৯৯৪ সালের ১২ ডিসেম্বর নিউ ইয়র্কে যাত্রা শুরু করে সোনালী ব্যাংকের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সোনালী এক্সচেঞ্জ। হেড অফিস নিউ ইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ১০টি শাখা রয়েছে।

জুম পে-পাল মানি ট্রান্সফার অ্যাপে ব্যবহার সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে নিউ ইয়র্কে সোনালী এক্সচেঞ্জের জেনারেল ম্যানেজার জহুরুল ইসলাম গণমাধ্যম কর্মিদের বলেন, তিনি বিজ্ঞাপনটি দেখেছেন। তবে কেন এই বিজ্ঞাপনটি চলছে এব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।

যুক্তরাষ্ট্রে সোনালী এক্সচেঞ্জ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এমন সম্ভাবনাকে তিনি নাকচ করে দিয়ে বলেন সোনালী এক্সচেঞ্জ সেন্টারের কাছাকাছি যারা থাকেন না বা অফিসে আসতে সময় পান না, তারা এখনো ডাকযোগে মানি অর্ডার বা চেক পাঠিয়ে দেশে অর্থ পাঠাচ্ছেন। এছাড়াও সোনালী এক্সচেঞ্জের অনলাইন সার্ভিসও রয়েছে। যা ঘরে বসে যে কোন সময়ে দেশে টাকা পাঠানো যায়। রয়েছে ক্যাশ পিকআপ সার্ভিস।প্রিয়জনদের কাছে টাকা পাঠালেই তা সঙ্গে সঙ্গে তুলতে পারছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, সোনালী এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠানোর পর কোন সমস্যা দেখা দিলে গ্রাহক বা তাদের লোকজন যে কোন শাখায় গিয়ে তা সহজেই সমাধান করতে পারছেন। কিন্তু জুম পে-পাল মানি ট্রান্সফার অ্যাপে কোন সমস্যা হলে তারা কোথায় যাবেন বলে প্রশ্ন করেন তিনি? তাদের কাস্টমার সার্ভিসে কল করতে হবে। হয়তো দেখা যাবে ঘন্টার পর ঘন্টা ফোন ধরে বসে থাকতে হবে।

ক্যালিফোর্নিয়ায় বন্ধ হওয়া সোনালী এক্সচেঞ্জ ভবিষ্যতে চালু হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ শাখাটি নতুন করে খোলার চিন্তা-ভাবনা আমাদের রয়েছে। নিউ ইয়র্কের পর পরই ক্যালিফোর্নিয়া হচ্ছে দ্বিতীয় বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা। উল্লেখ্য, সোনালী এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ১শ’ ডলার পাঠাতে সর্বনিন্ম কমিশন ফি লাগে মাত্র ২ ডলার। আর জুম অ্যাপে খরচ ৫ ডলার।

জুম পে-পাল সার্ভিস ব্যবহার করলে অতিরিক্ত খরচ লাগবে ৩ ডলার। এই জুম পে-পাল অ্যাপের মালিক হচ্ছেন একজন ভারতীয় ব্যক্তি। তাহলে এই অতিরিক্ত কে পাচ্ছেন বাংলাদেশ নাকি ভারত একজন প্রশ্ন উঠেছে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে। বর্তমানে সোনালী এক্সচেঞ্জ ইউএস ১ ডলারের সমপরিমাণ বাংলাদেশি মূদ্রা ৮৩ টাকা। আর জুম পে-পাল সার্ভিসে দর ৮২ টাকা (২৮ জানুয়ারী ২০১৮)।

সোনালী ব্যাংকের সিইও এবং এমডি ওবায়েদুল আল মাসুদ প্রবাসীদের সঙ্গে কেন এ ধরনের প্রতারণা করছেন তা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের কারও বোধগম্য নয়।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৮)