ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » দেশের বাইরে » বিস্তারিত

সু চি-বরিস সাক্ষাৎ, রোহিঙ্গা ফেরানোর আহ্বান

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ১১ ১৫:৩৫:১১
সু চি-বরিস সাক্ষাৎ, রোহিঙ্গা ফেরানোর আহ্বান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী বরিস জনসন। রবিবার দেশটির রাজধানী নেইপিদোতে সু চির সঙ্গে সাক্ষাত করেন তিনি। এসময় রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারের ফেরার ব্যবস্থা করতে সু চির প্রতি আহ্বান জানান ব্রিটিশ এ মন্ত্রী।

এর আগে শনিবার রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বরিস জনসন। একই সঙ্গে সীমান্তের কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন তিনি।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানের মুখে গত আগস্টের শেষের দিকে বাংলাদেশে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে আসে।

বিবিসির রিতা চক্রবর্তী বলেছেন, মিয়ানমারে সু চির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় দু'জনকেই হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেছে। এসময় তারা দুজনই হ্যান্ডশেক করেন। তবে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার বিষয়টি কঠিন হবে।

রবিবার আরো পরের দিকে ব্রিটিশ এই পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে রাখাইনে নেয়া হবে; যেখান থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়েছে। এছাড়া রাখাইন অ্যাডভাইজরি কমিশনের চেয়ারম্যান সুরাকিয়ার্ট সাথিরাথির সঙ্গে সাক্ষাত করবেন তিনি।

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পর বরিস জনসন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ভয়াবহ জীবন-যাপন পরিস্থিতি সঙ্কটের শক্তিশালী সমাধান খুঁজে বের করতে তাকে সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, পরিস্থিতি ঠিক হওয়া সাপেক্ষে আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন অবশ্যই স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে হতে হবে।

শনিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর বরিস জনসন বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে বাংলাদেশ এবং ব্রিটেন সরকারের অবস্থান একই রকম। মিয়ানমারের সরকারের কাছে সমস্যা সমাধানের উপায়গুলো তুলে ধরতে হবে।

গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে শুরু হওয়া দেশটির সেনাবাহিনীর রক্তাক্ত অভিযান, জ্বালাও-পোড়াওয়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়েছে। জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এ অভিযানকে জাতিগত নিধনে পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণের শামিল বলে চিহ্নিত করেছে। একই সঙ্গে গণহত্যার অভিযোগ আনা হলেও তা বরাবরই অস্বীকার করে দেশটি।

তবে গত ডিসেম্বরে সংখ্যালঘু ১০ রোহিঙ্গা মুসলিম হত্যায় দেশটির নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা জড়িত বলে প্রথমবারের মতো স্বীকার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। সহিংসতায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরানোর লক্ষ্যে ডিসেম্বরে দুই দেশের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়।

আগামী দুই বছরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে দুই দেশ ঐক্যমতে পৌঁছেছে। প্রতি সপ্তাহে মাত্র দেড় হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার কথা জানিয়েছে মিয়ানমার। আন্তর্জাতিক দাতাসংস্থাগুলো রোহিঙ্গা ফেরত নেয়ার এ সংখ্যাকে নগন্য উল্লেখ্য করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে বাংলাদেশ বলছে, দুই বছরের মধ্যে সব রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে তারা চুক্তি করেছে।

এদিকে, রাখাইনে ফেরার পর সেখানে নিজেদের অধিকার ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে রোহিঙ্গারাও।

গত এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো কোনো ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে বরিস জনসন বাংলাদেশ সফর করলেন। মিয়ানমার সফর শেষে থাইল্যান্ড সফরের কথা রয়েছে তার। সেখানে থাই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চ্যান ও চ্যার সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। সূত্র : বিবিসি।

(ওএস/এসপি/ফেব্রয়ারি ১১, ২০১৮)