ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণে ভূমিদখল রূখতে হবে

২০১৮ মে ১০ ১১:৪১:১১
জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণে ভূমিদখল রূখতে হবে

মাহবুবুর রহমান সানি
আমরা দোষ দিতে জানি। এটা খুব সহজ। কিছু হলেই অমুক এটা করতে পারেননি, তিনি ব্যর্ত। তাকে ক্ষমতায় দেখতে চাই না, তার নেতৃত্ব আমাদের দরকার নেই। আরও অনেক অপদোষ আমরা দেই। কিন্তু একবারও কি ভাবি এর জন্য দায়ী কে। কার আগ্রাসনে শহরে আজ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আসলে এ সমস্যা অবৈধ ভূমি দখলদারদের তৈরি। কেননা পুরাতন খাল-নদী ভরাট করে দখলে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা দিন দিন কমে আসছে। তাই আসুন অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই, তবেই নিয়ন্ত্রণে আসবে জলাবদ্ধতা।

হ্যা জলাবদ্ধতা, এখনকার সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতমই বলা চলে। আর হবিগঞ্জে এ সমস্যাটি আরো প্রকট! একটু বৃষ্টি হলেই ডুবে যায় বিভিন্ন সরকারি অফিসের চত্বরসহ হবিগঞ্জ জেলা শহরের রাস্তা-ঘাট। এছাড়া নিচু এলাকার বাসা-বাড়ির মানুষ হয়ে যান পানিবন্দি। সব মিলিয়ে চরম দুর্ভোগে হবিগঞ্জ শহরবাসী।

জলাবদ্ধতা হলেই অনেকে ফেসবুকে স্টেটাস দেই। এতে কমিশনার, মেয়র, এমপিসহ সংশ্লিষ্টদের দোষারোপ করে নানা সমালোচনা করি। কিন্তু এটা কি ঠিক? তা আমরা জানি না।

বিশ্লেষণে বলতে গেলে, জীবনযাত্রার মান-উন্নয়নেরর সঙ্গে সঙ্গে হবিগঞ্জ পৌরসভায় বহিরাগত মানুষের আগমন বেশি। এছাড়া পৌরসভার মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ মানুষ নবাগত। তাই আমরা অনেকে ১৫ থেকে ২০ বছর আগের হবিগঞ্জ পৌরসভা সম্পর্কে অবগত নন।

আমাদের শহরের পানি নিষ্কাশন হওয়ার যে জায়গাগুলো ছিল তার ৯৭ শতাংশ জায়গা এখন অবৈধ দখলদারদের কবলে। পৌরসভার ২নং, ৩নং, ৫নং ও ৭নং ওয়ার্ডের পানি নিষ্কাশন হত শহরের কালীগাছতলা থেকে আধুনিক স্টেডিয়াম পর্যন্ত রেলের জায়গা হয়ে জালালাবাদ হাওরে। আর ৪নং, ৬নং এবং ৯নং ওয়ার্ডের পানি নিষ্কাশন হত পুরাতন খোয়াই নদীতে। কিন্তু এই নদী ও শহরের পানি নিষ্কাশনের প্রায় সব মাধ্যমই অবৈধ দখলে। এছাড়া ৮নং ওয়ার্ডের পানি রেলের জায়গা হয়ে পশ্চিমের হাওয়রে। সেটাও একই অবস্থা।

মনে হয় দখলদারদের কবল থেকে এই জায়গাগুলো অবমুক্ত না করা হলে কখনো আমাদের হবিগঞ্জ পৌরসভার জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এমনকি পানি সেচের মেশিন দিয়েও নয়!

আসুন আমাদের শহর সুন্দর বসবাস উপযোগী রাখার স্বার্থে ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার হই। ২০ থেকে ৩০ জন অবৈধ দখলদারদের জন্য পৌরসভার ৫২ থেকে ৬০ হাজার ভোটার জলাবদ্ধতায় ভোগতে পারেন না।

এই অবৈধ ভূমি দখলদাররা কারা, আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু বিভিন্ন কারণে আমরা প্রতিবাদ করতে পারি না। আমাদের মনে রাখা উচিত অন্যায় করা যেমন অপরাধ, অন্যায় সহ্য করাও তেমন অপরাধ।

লেখক: সহ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।