ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » বিনোদন » বিস্তারিত

ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন ডাইনো পার্ক

২০১৮ জুন ১৩ ১১:৪২:৪০
ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন ডাইনো পার্ক

স্টাফ রিপোর্টার: সাগর, পাহাড়, বন-জঙ্গল, ঝরনা— ইতোমধ্যে যাদের সবই দেখা শেষ; তারা ভাবছেন, এবার ঈদের ছুটিতে কোথায় ঘুরতে যাবেন। চিন্তা নেই, প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুর আসতে পারেন ডাইনো পার্ক থেকে।রাজধানী থেকে কাছের শহর; কুমিল্লায় এ ডায়নো পার্কের অবস্থান। খুব বেশি সময় লাগবেনা ঘন্টা খানেকের পথ।

নতুন এ বিনোদনকেন্দ্রের নাম ডাইনোসর পার্ক যা ডাইনো পার্ক নামে সারা দেশে পরিচিতি পেয়েছে। ঢাকার অদূরে কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের ১২ একর জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নতুন ধরনের একটি পার্ক। ঝোপ-জঙ্গলে ঘেরা এই পার্কে ঢুকে পিলে চমকে যেতে পারে। এখানে হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া প্রাণীর দেখা মিলবে! যারা বেড়াতে ভালোবাসেন আর রোমাঞ্চকর অনুভুতির সারথী হতে চান তাদের জন্যে এ পার্কটি স্বপের জায়গা হতে পারে বলে মনে করছেন দর্শনার্থীরা। পার্কে চীন থেকে আনা পাঁচটি কৃত্রিম ডাইনোসর রাখা হয়েছে। সুইচ টিপলেই যারা গর্জন করে, লেজ নাড়ে আর চোখ ঘুরায়।

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, নতুন প্রজন্মকে বিলুপ্ত ডাইনোসরের সম্পর্কে ধারণা দিতেই এ উদ্যোগ। সারা দেশ বিশেষ করে কুমিল্লা ও আশপাশের জেলার লোকজনকে নির্মল আনন্দ দেওয়ার জন্য মাশফিকা হোল্ডিংস লিমিটেড এই পার্ক তৈরি করেছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে এক পরিবারের চার ভাই ও তাঁদের বাবা এর উদ্যোক্তা। পার্কে প্রবেশপথে হেরিটেজের মতো তিনতলা ভবন রয়েছে। দিনের চেয়ে রাতের বেলায় এ পার্ককে আরও আকর্ষণীয় মনে হয়। কেবল ডাইনোসর দেখা নয়, এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রাইড।

সমতল ভূমি থেকে ৪৫ ফুট ওপরে অবস্থিত এ পার্ক । তারও ওপরে রয়েছে প্যারিজ হুইল, যা আই অব লালমাই নামে পরিচিত। ওই রাইড থেকে ১০০ ফুট ওপরে লালমাই পাহাড়ের মনভোলানো রূপ দেখা যায়। ডাইনোসর দেখার পর দক্ষিণ দিকের টিলায় ওঠার জন্য ৪০টি সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে।

বেড়ানোর ফাঁকে খাওয়ার জন্য এখানে রয়েছে দ্য হিল ক্যাফে রেস্টুরেন্ট। বাঁশের মাচার ওপর তৈরি ওই হোটেলে খেতে বসে প্রকৃতি দেখতে পারবেন। রোস্তোরাঁর এক পাশে আছে দ্য ডেক সাইড। যেখানে একসঙ্গে ১৩৫ জন বসতে পারে।

আই অব লালমাইতে ১২টি বগি রয়েছে। যাতে ২৪ জন একসঙ্গে বসতে পারবে। অক্টোপাসে একসঙ্গে বসতে পারে ১৫ জন, মেরি গো রাউন্ডে ২৪ জন, সেলফ কন্ট্রোল প্লেনে ৮ জন, বাম্পার কারে ১০ জন এবং ড্রাগন কোস্টারে ২০ জন। শিশুদের জন্য আছে ১৩টি রাইড।

পার্কের বিষয়ে জানান ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এইচ এম আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি বলেন, চীনে ঘুরতে গিয়ে ডাইনোসর জাদুঘর দেখি। সেই ধারণা কাজে লাগিয়ে কুমিল্লায় দুই বছর ধরে এ কাজ করেছি। চীন থেকে লোক এনে এই রাইড ও ডাইনোসর বসানো হয়েছে। এটি আমাদের পারিবারিক উদ্যোগ।’

তিনি আরো বলেন, আমরা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে লালমাইতে পার্কটি স্থাপন করি ।গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিনোদনকেন্দ্রটি যাত্রা শুরু করে।

এখানে বেড়াতে আসা লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডাইনো পার্কে এসে আশপাশের শালবন বৌদ্ধবিহার, ময়নামতি জাদুঘর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বোটানিক্যাল গার্ডেন, বৌদ্ধ সভ্যতা নিদর্শন দেখা যায়।

প্রবেশ মূল্য:

পার্কে প্রবেশমূল্য ২০০ টাকা। এছাড়া বড়দের জন্য রাইডের ফি ১০০ টাকা, ছোটদের জন্য ৫০ টাকা। সেই সঙ্গে যেকোনো প্রতিষ্ঠান চাইলেই এখানে পিকনিক কিংবা কর্মশালার আয়োজন করতে পারে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পার্ক খোলা থাকবে।

যেভাবে যাবেন:

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বেলতলি অথবা নন্দনপুর এলাকা দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পার হয়ে কিছুটা সামনে গেলেই ডাইনো পার্ক। এ ছাড়া কুমিল্লা শহর থেকে ২২০ টাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করেও যাওয়া যায়। দল বেঁধে কিংবা ভেঙে ভেঙে গেলে কোটবাড়ি থেকেও কম ভাড়ায় যাওয়া যায়।

(ওএস/পিএস/জুন ১৩, ২০১৮)