ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » বিনোদন » বিস্তারিত

তারেক মাসুদকে হারানোর সাত বছর

২০১৮ আগস্ট ১৩ ১৫:৪৫:৩৯
তারেক মাসুদকে হারানোর সাত বছর

বিনোদন ডেস্ক : একজন নির্মাতা হিসেবে তারেক মাসুদের কথা সবারই জানা। এ দেশের চলচ্চিত্রকে তিনি বিশ্বদরবারে পরিচিত করিয়েছেন। তার পরিচালিত আদম সুরত, মুক্তির গান, মাটির ময়না, রানওয়ে, অন্তর্যাত্রা ছবিগুলো সর্বমহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। এমনকি কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে বিশেষ সমালোচক পুরস্কারও জয় করেছে। এককথায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন এ নির্মাতা।

আজ এই নির্মাতার সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১১ সালের আজকের এই দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় পৃথিবী থেকে বিদায় নেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রজগতের শক্তিশালী এ নির্মাতা। একই দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ছাড়াও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরসহ চারজন প্রাণ হারান।

তারেক মাসুদের জন্ম ফরিদপুরে ১৯৫৬ সালে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই তিনি সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনে। তিনি শর্ট ফিল্ম ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, দেশের প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসবের অন্যতম পুরোধা তিনি।

১৯৮২ সালে চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র আদম সুরত-এর মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে যাত্রা করেন। তারেক মাসুদ ছিলেন প্রথাগত ধারনার বাইরে গিয়ে মুক্ত চিন্তার মানুষ। তার ‘মুক্তির গান’, ‘মুক্তির কথা’ কিংবা ‘মাটির ময়না’ স্বাধীনতা যুদ্ধের এক প্রামাণ্য দলিল।

তারেক মাসুদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এই নির্মাতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তারেক মাসুদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নূরপুরে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে নূরপুরে তারেক মাসুদের সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, স্মরণসভা, সম্মাননা প্রদান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ।

এদিকে তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ নির্মিত চলচ্চিত্র নিয়ে তিন দিনব্যাপী এক কর্মশালার শেষ দিন আজ। তারেক মাসুদের মৃতুবার্ষিকী উপলক্ষে তার ও ক্যাথরিন মাসুদের নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর পাঠ ও বিশ্লেষণের জন্য তিন দিনব্যাপী কর্মশালাটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। শনিবার শুরু হয় কর্মশালাটি, শেষ হচ্ছে আজ সোমবার।

কর্মশালায় তারেক মাসুদ নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে আলোচনা করছেন ক্যাথরিন মাসুদ, চলচ্চিত্র গবেষক ও অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, চলচ্চিত্র সমালোচক ও অধ্যাপক আ-আল মামুন, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক নূরুল আলম আতিক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক বেলায়েত হোসেন মামুন।

২০১১ সালের ১৩ আগস্ট তার পরবর্তী চলচ্চিত্র ‘কাগজের ফুল’-এর শুটিং স্পট নির্বাচন করে ফেরার পথে মানিকগঞ্জের ঘিওরে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন চলচ্চিত্রের এই অবিসংবাদিত ফেরিওয়ালা। তার সঙ্গে প্রাণ হারান তার দীর্ঘদিনের বন্ধু মিশুক মুনীরও।

আশির দশকের গোড়ার দিকে খ্যাতনামা শিল্পী এসএম সুলতানের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘আদম সুরত’ দিয়েই তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের সম্পর্কের শুরু। তখন দুই বন্ধু এসএম সুলতানের সঙ্গে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে বেড়ান। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত সাত বছর সুলতানের সান্নিধ্যে থেকে নির্মাণ করেন প্রামাণ্যচিত্র ‘আদম সুরত’।

এরপর তারেকের অধিকাংশ ছবিতে ক্যামেরার জাদু দেখিয়েছেন মিশুক মুনীর। সিনোমাটোগ্রাফার হিসেবে মিশুক মুনীর নিজেকে অন্যরকম উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। অনেক প্রতিষ্ঠিত সংবাদকর্মীর আদর্শ ছিলেন মিশুক মুনীর।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ১৩, ২০১৮)