ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » রাজনীতি » বিস্তারিত

রিজভীকে বিচারের আওতায় আনুন

২০১৮ অক্টোবর ১৫ ১৫:৫৮:৩৫
রিজভীকে বিচারের আওতায় আনুন

স্টাফ রিপোর্টার : ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার জন্য আওয়ামী লীগই দায়ী’- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এ মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘আমি আদালতের প্রতি অনুরোধ করবো, স্বপ্রণোদিত হয়ে রিজভীর ওই বক্তব্যের জন্য তাকে বিচারের আওতায় আনা হোক।’

সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

গতকাল রবিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘সব বিচার বিশ্লেষণে এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ সৃষ্টি হয় যে, ২১ আগস্ট বোমা হামলায় আওয়ামী লীগ বা তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরাই দায়ী। যেহেতু তখন সরকার পরিচালনা করেছে বিএনপি সেহেতু নিজের সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হবে- এমন আত্মবিধ্বংসী কাজ বিএনপি কেন করতে যাবে?’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভার ওপর ভয়াবহ বোমা হামলা হলে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রতি সাধারণ মানুষের ব্যাপক সহানুভূতির সৃষ্টি হবে এবং বিএনপির বিরুদ্ধে মানুষের আস্থা কমবে। এতে আওয়ামী লীগের লাভ। ঠিক এই উদ্দেশ্য নিয়েই আওয়ামী লীগের সভার ওপর বোমা হামলা করা হয়েছে, শেখ হাসিনার মঞ্চকে পাশকাটিয়ে। ওই বোমা হামলার আরেকটি উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারকে জঙ্গি সরকার বা তার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে প্রমাণ করা। সেজন্য পরবর্তীতে শেখ হাসিনা ও তার সহকর্মীরা হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সম্মিলিত কণ্ঠস্বরে দেশে-বিদেশে বিএনপি ও জোট সরকারের বিরুদ্ধে অপবাদের কোরাস গেয়েছেন। অথচ জঙ্গি উৎপাদন করেছে আওয়ামী লীগ, আর তাদের দমন করেছে বিএনপি।’

রিজভীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ের পর সবদিক থেকে ধিকৃত হচ্ছে বিএনপি। তাই দলটি রায় নিয়ে মিথ্যাচারের রাজনীতি করেছে।’

‘গতকাল সংবাদ সম্মেলনে রিজভী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা জাতির সঙ্গে নির্মম মশকরা। আদালত অবমাননার শামিল। তার ওই বক্তব্য রায়ের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনেরও শামিল।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রিজভীর ওই বক্তব্য বিএনপির রাজনৈতিক মিথ্যাচারেরই অংশ।
২১ আগস্ট হামলার পর প্রশাসনের দায়িত্বরতদের চাকরিচ্যুত করা তো দূরের কথা তদন্ত পর্যন্ত করা হয়নি। তার ওই বক্তব্য আদালতের রায়ের প্রতি কটাক্ষ করা।’

তিনি বলেন, ‘২১ আগস্ট হামলার পর বিচারপতি জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে বিএনপি তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল। সেই তদন্ত কমিশনও জাতির সঙ্গে মশকরা করেছিল। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় বিএনপি শুধু যুক্তই নয়, তাদের পরিকল্পনায় তারেক রহমান ও বাবরের নেতৃত্বে ওই ঘটনা ঘটিয়েছিল দলটি।’

বিএনপি ও ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘২১ আগস্ট হামলার পর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণতদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল। সেই তদন্ত কমিশন রিপোর্ট দিয়েছিল, ওই হামলার সঙ্গে বিএনপির জোট জড়িত। ২১ আগস্ট হামলাকারীদের সঙ্গে ড. কামালের ঐক্য রাজনৈতিক চরম অধপতন।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। যেদিন ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় সেদিন খালেদা জিয়া অনেক ভোরেই তার বাড়ি থেকে গোপনে বেরিয়ে যান। যিনি কোনোদিন দুপুর ২টার আগে ঘুম থেকে ওঠেন না, রাত ৮টার আগে স্থায়ী কমিটির বৈঠক করতে পারেন না, কেন সেদিন তিনি এত ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাসা থেকে চলে গেলেন- এ প্রশ্ন পুরো জাতির।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষযক সম্পাদক আবদুস সবুর, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ১৫, ২০১৮)