ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » মিডিয়া » বিস্তারিত

সকল মিডিয়ার জন্য অভিন্ন ওয়েজবোর্ড

২০১৮ অক্টোবর ১৫ ১৮:০৩:১৯
সকল মিডিয়ার জন্য অভিন্ন ওয়েজবোর্ড

স্টাফ রিপোর্টার : দৈনিক পত্রিকা, বেতার, টেলিভিশন ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলোসহ সকল গণমাধ্যম কর্মীর জন্য অভিন্ন ওয়েজবোর্ড এবং বিধি লঙ্গন করলে মালিকদের জরিমানার বিধান রেখে গণমাধ্যম কর্মী (চাকরির শর্তাবলী) আইন ২০১৮ অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ আইনের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

আইনে গণমাধ্যমকে নিয়ে অভিন্ন ওয়েজবোর্ডে নিয়ে আসা হয়েছে। এই ওয়েজবোর্ডটি গণমাধ্যম কর্মী ওয়েজবোর্ড নামে পরিচিত হবে। এছাড়া বিধি লঙ্ঘন করলে মালিকদের সর্বনিম্ন ৫০ হাজার এবং সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

শফিউল আলম বলেন, ‘যারা গণমাধ্যমে কাজ করবে তারা শ্রমিক না, গণমাধ্যমকর্মী। শ্রমিক কথাটি থাকবে না। শ্রম আইনে যেখানে শ্রমিক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে ওখান থেকে বেরিয়ে আসবে।’

‘আইনে গণমাধ্যম কর্মীর পরিষ্কার সংজ্ঞায়িত করা আছে। তা হলো, গণমাধ্যমে পূর্ণকালীন সাংবাদিক, কলাকৌশলী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা অথবা কর্মচারী, নিবন্ধিত সংবাদপত্রের মালিকানাধীন ছাপাখানা এবং বিভিন্ন বিভাগে নিয়োজিত কর্মী। ছাপাখানা বলতে সংবাদপত্র রিলেটেড ছাপাখানা।

সচিব বলেন, ‘আইনে ওয়েজবোর্ডের কথা বলা হয়েছে। এটা শ্রম আইনের নয়, স্বাধীন ওয়েজবোর্ড। এই ওয়েজবোর্ডে অনলাইন নিউজ পোর্টাল, পত্রিকা, রেডিও, টেলিভিশনসহ সকল গণমাধ্যমকে নিয়ে আসা হয়েছে। এই ওয়েজবোর্ডটি গণমাধ্যম কর্মী ওয়েজবোর্ড নামে পরিচিত হবে।’

‘আইনে ১০ ধারায় নতুন একটি প্রস্তাবনা আছে। তা হলো পরিদর্শন কমিটি। এ কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান নিজস্ব চাকরিবিধি থাকবে। ৪ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো গণমাধ্যমকর্মীর নিয়োগপ্রাপ্তির একবছর সমাপ্তির পর প্রদেয় ভবিষ্যৎ তহবিলে মাসিক চাদা প্রদান আরম্ভ করতে পারবে। যিনি মালিক তিনিও সমানহারে ওখানে কন্ট্রিবিউট করবেন।’

‘দৈনিক ৬ ঘণ্টার বেশি কাজ হলে ওভারটাইম’

আগে সপ্তাহে একজন সংবাদকর্মীর ৪৮ ঘন্টা কর্মঘন্টা থাকলেও নতুন আইনে সেটি ৩৬ ঘন্টা করা হয়েছে। আর এর বেশি কাজ করলে ওভারটাইম দিতে হবে বলে জানান সচিব।

বলেন, ‘ছুটির বিষয়েও এখানে অগ্রগতি আছে। আগে যেটা ১০ দিনের সিএল ছুটি ছিল সেটা এই আইনের ৬ ধারায় ১৫ দিন ধার্য করা হয়েছে। এছাড়া অর্জিত ছুটি আগে ছিল ৬০ দিন সেটা এখন ১০০ দিন হবে। সেটা ১১ দিনে ১ দিন করে জমা হবে।’

তিনি জানান, ‘প্রত্যেক গণমাধ্যমকর্মী তাদের চাকরির মেয়াদের ১৮ ভাগের ১ ভাগ পূর্ণ বেতনে অসুস্থ্যতাজনীত ছুটি পাবে। গণমাধ্যমকর্মীরা উৎসব ছুটি পাবে সর্বোচ্ছ ১০ দিন। প্রত্যেক নারী গণমাধ্যমকর্মী ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রাপ্ত হবে। প্রত্যেক গণমাধ্যমকর্মী ৩ বছর অন্তর ৩০ দিন শ্রান্তি-বিনোদন ছুটি পাবে।’

সচিব আরো জানান, ৭ ধারায় চিকিৎসা সুবিধার সুবিধার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, প্রত্যেক গণমাধ্যমকর্মী স্বাস্থ্যবীমা সুবিধা পাবে। ৮ ধারায় নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, ৯ নম্বর ধারায় বলা আছে, সরকার এ আইনর সাথে সামঞ্জস্য রেখে গণমাধ্যমের সাথে জড়িত গণমাধ্যমকর্মী ও কর্মচারীদের ওয়েজ নির্ধারণের জন্য প্রজ্ঞাপনমূলে গণমাধ্যমকর্মী ওয়েজবোর্ড গঠন করবে।

১৪ ধারায় বলা হয়েছে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ওয়েজের নিম্নতর হার সংশ্লিষ্ট সকল গণমাধ্যম মালিকের উপর অবশ্যই পালনীয় হবে। অর্থাৎ মিনিমাম এমাউন্টটা গণমাধ্যমকর্মীকে দিতে হবে।

সচিব বলেন, ১৬ ধারায় বলা আছে, যদি কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের নিকট কোনো গণমাধ্যমকর্মীর বকেয়া পাওনা থাকে তাহলে ওই গণমাধ্যমকর্মী স্বয়ং অথবা তার লিখিত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি কিংবা মৃত গণমাধ্যমকর্মীর ক্ষেত্রে তার পরিবারের কোনো সদস্য আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবে।

‘আইনের ১৯ ধারায় শান্তির বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনে বর্ণিত ধারা অথবা ধারাসমূহ অথবা এর অধীন প্রণীত বিধি লঙ্গন করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা যাবে।’

সচিব আরও বলেন, ১৯ এর ৩ এ বলা হয়েছে, সরকার এ আইন লঙ্গনকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়াসহ যেকোনো পর্যায়ে সরকার প্রদও যেকোনো সুযোগ-সুবিধা বন্ধ অথবা স্থগিত রাখতে পারবে।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ১৫, ২০১৮)