ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি » বিস্তারিত

কৃত্রিম সূর্য তৈরি করল চীন!

২০১৮ নভেম্বর ১৭ ১৭:৫৬:০৬
কৃত্রিম সূর্য তৈরি করল চীন!

বিজ্ঞান ডেস্ক : বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির হাত ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব। আর নানা ধরনের অভিনব আবিস্কারে চীনের জুড়ি মেলা ভার। আর এবার তৈরি করে ফেলল এক কৃত্রিম সূর্য! পৃথিবী থেকে ১৫০ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে থাকা একটা নক্ষত্র যার তাপমাত্রা ৫,৫০৪ ডিগ্রি।

সূর্যের চেয়েও ছয়গুণ বেশি উত্তাপ তৈরি করতে সক্ষম এই ‘কৃত্রিম সূর্য’। কয়েকদিন আগে সেটি ১৮০ মিলিয়ন ডিগ্রি ফারেনহাইট উত্তাপের মাধ্যমে নতুন রেকর্ড গড়েছে। খুব সুলভ মূল্যের অফুরন্ত শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম এটি।

সূর্যের মতোই শক্তি উৎপাদন করার লক্ষ্যে এই কৃত্রিম সূর্য তৈরি করা হয়েছে। আমাদের সৌরজগতের নক্ষত্র সূর্যের অভ্যন্তরে যে ব্যাপক উত্তাপ সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত, তার চেয়েও ছয়গুণ বেশি উত্তপ্ত এক কৃত্রিম সূর্য তৈরি করেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। সূর্যের রেপ্লিকা হিসেবে তৈরি করা এই কৃত্রিম সূর্যে হাইড্রোজেনকে সবুজ শক্তি বা বিদ্যুতে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চালানো হবে। কয়েকদিন আগে কৃত্রিম ওই সূর্য প্রথমবারের মতো ১৮০ মিলিয়ন ডিগ্রি ফারেনহাইট উত্তাপ উৎপন্ন করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এই উত্তাপ নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রক্রিয়ার জন্য জরুরি।

বিশ্বে প্রথম কার্যকর নিউক্লিয়ার ফিউশন রিঅ্যাকটর তৈরিতে বিজ্ঞানীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে সফলতা পেলে হাজার হাজার কোটি টাকা মূল্যের পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ ও শক্তি উৎপাদন সম্ভব হবে জানিয়েছেন গবেষকরা। তারা বলছেন এতে করে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা থেকে পৃথিবীকে অনেকটাই রক্ষা করা সম্ভব হবে। চীনের হেফেই ইনস্টিটিউট অব ফিজিক্যাল সায়েন্সের বিজ্ঞানীরা তাদের এই কৃত্রিম সূর্য নিয়ে গবেষণা চালিয়ে আসছেন কয়েক বছর ধরে। এক্সপেরিমেন্টাল অ্যাডভান্সড সুপার কন্ডাকটিং টোকামাক, ইস্ট নামের এই প্রজেক্টে ফিউশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিশদ জানা ও পরিপূর্ণ রিঅ্যাকটর তৈরি করাই মূল লক্ষ্য। শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে ফিশন প্রক্রিয়ার তুলনায় ফিউশন প্রক্রিয়া ভিন্ন ভাবে কাজ করে। এক্ষেত্রে বস্তুর নিউক্লিয়াসকে পৃথক না করে নিষ্ক্রিয় করে দেয়া হয়।

এই ফিউশন প্রক্রিয়া সুলভ মূল্যের অফুরন্ত শক্তি উৎপাদনের পথ খুলে দেবে বলেই আশা করছেন বিজ্ঞানীরা। আর তা ফিশন প্রক্রিয়ার চেয়ে পরিবেশবান্ধব, যাতে ক্ষতিকর নিউক্লিয়ার বর্জ্যও উৎপন্ন হবে না। বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক ম্যাগনেটিক সিস্টেম টোকামাক, এর মাধ্যমে অনেক আধুনিক ফিউশন রিঅ্যাকটর তৈরির কাজ চলছে। এই সিস্টেমে হালকা পদার্থ, যেমন হাইড্রোজেনকে ভারী পদার্থ হিলিয়ামে রূপান্তর করা হয়। টোকামাক এনার্জি নামের বৃটেনের একটি নিউক্লিয়ার ফিউশন কোম্পানি দাবি করছে, তারা ২০৩০ সালের মধ্যে ফিউশন রিঅ্যাকটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৭, ২০১৮)