ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » দেশের বাইরে » বিস্তারিত

‘বাধ্য হয়ে বলেছিলাম আমি ব্রিটিশ গুপ্তচর’

২০১৮ ডিসেম্বর ০৬ ১২:৩৮:০২
‘বাধ্য হয়ে বলেছিলাম আমি ব্রিটিশ গুপ্তচর’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্রমাগত একই প্রশ্ন দুবাইয়ের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের। আর ক্রমাগত উত্তর ‘না’ বলে যাওয়া। কারাগারে অন্য কোথাও সরাতে হলে চোখে পট্টি, হাতে হাতকড়া। বাথরুম গেলে পায়ে বেড়ি। হতাশার রোগী হয়ে ওষুধের পর ওষুধ।

তারপর এক সময়ে বলে ফেলা, ‘হ্যাঁ আমি ব্রিটিশ গুপ্তচর। এমআই-৬ এর ক্যাপ্টেন।’ কিন্তু ‘কাল্পনিক’ জেমস বন্ড ব্রিটেনের যে আন্তর্জাতিক গুপ্তচর সংস্থাকে বিখ্যাত করে গিয়েছেন, সেই বাহিনীতে তো ক্যাপ্টেন পদই নেই।

শুনে ম্যাথিউ হেজেস বলছেন, ‘ওই প্রচণ্ড মানসিক অত্যাচারের মুখে একটা সময়ে আমার কিছু করার ছিল না। ওরাই ‘ক্যাপ্টেন’ পদটার কথা বলছিল। তাই আমিও বললাম।’

গত ৫ মে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই বিমানবন্দরে গুপ্তচরবৃত্তির দায় গ্রেপ্তার হন ব্রিটিশ নাগরিক ম্যাথিউ হেজেস।

তার দাবি, ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজের পিএইচডি-র কাজেই তার দুবাইয়ে যাওয়া। ২০১১ সালের ‘আরব বসন্ত’-পরবর্তী সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি। মে-তে গ্রেপ্তারের পরে ২১ নভেম্বর তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আমিরাত সরকার। কিন্তু ২৬ নভেম্বরই মুক্তি পান নাটকীয়ভাবে। ক্ষমা প্রার্থনা করে আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান-কে চিঠি লিখেছিলেন ম্যাথিউর স্ত্রী ড্যানিয়েলা তেজাডা। ব্রিটেনের বন্ধু-রাষ্ট্র বলে পরিচিত দেশটির প্রেসিডেন্ট সেই আর্জি মঞ্জুর করেন। ম্যাথিউ দেশে ফিরেছেন। প্রথম সাক্ষাৎকারটি দিয়েছেন রেডিওতে। সেখানেই তুলে ধরেছেন তার জেলজীবনের ইতিবৃত্ত।

জেরা করা গোয়েন্দারা প্রস্তাব দিয়েছিলেন ‘ডাবল এজেন্ট’ হয়ে কাজ করার। ‘বলা হয়েছিল, ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফাইল চুরি করে আনতে। আমি বললাম, পারব না। আমি তো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মী নই। যে দিন সাজা ঘোষণা হল, মনে হলো যেন বোমা ফাটল। ড্যানিয়েলা আদালতে ছিল। ওকে বিদায় জানাতেও পারিনি’- বলছিলেন ম্যাথিউ।

এখন কী করবেন? ম্যাথিউ জানাচ্ছেন, তার প্রথম কাজ এখন মাথা ঠান্ডা করা। তারপর দেখা, কলঙ্কের দাগটা কীভাবে মোছা যায়। কারণ আমিরাতে তার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রেকর্ড রয়ে গেলে নানা দেশে অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়বে গতিবিধি। আমিরাতের গোয়েন্দাদের যদিও এখনও দাবিম ম্যাথিউ শতভাগ গুপ্তচর।’

(ওএস/অ/ডিসেম্বর ০৬, ২০১৮)