ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » মুক্তিযুদ্ধ » বিস্তারিত

১০ ডিসেম্বর, ১৯৭১

নিরপেক্ষ দেশের পতাকা উড়িয়ে পাকবাহিনী পালাবার পথে ধরা পড়ে 

২০১৮ ডিসেম্বর ১০ ০০:০৫:০৩
নিরপেক্ষ দেশের পতাকা উড়িয়ে পাকবাহিনী পালাবার পথে ধরা পড়ে 

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক :যুদ্ধে পরাজয়ের আশংকায় লে. জেনারেল নিয়াজী পালাবার পায়তারা করে। তার এই গোপন অভিসন্ধি বিবিসি ফাঁস করে দেয়। নিয়াজী স্বীয় দুর্বলতা ঢাকার জন্য আজ ইন্টার-কন্টিনেন্টাল হোটেলে দম্ভভরে বলেন, কোথায় বিদেশী সাংবাদিকরা, আমি তাদের জানাতে চাই, আমি কখনো আমার সেনাবাহিনীকে ছেড়ে যাব না।

মিত্রবাহিনীর জঙ্গী বিমানগুলো ঢাকা বেতার কেন্দ্রের উপর আক্রমণ করে এবং কুর্মিটোলার উপর বার বার রকেট হামলা অব্যাহত রেখে নিজেদের কর্তৃত্ব স্থাপন করে।

মিত্রবাহিনীর বিমান আক্রমণে চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দর অচল হয়ে পড়ে। কয়েকটা জাহাজ ভর্তি পাকবাহিনী বঙ্গোপসাগর দিয়ে পালাবার সময় ধরা পড়ে। একটি জাহাজে নিরপেক্ষ দেশের পতাকা উড়িয়ে পাকবাহিনী সিঙ্গাপুর পালাবার পথে মিত্র নৌবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে।

জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আগা শাহী উ থান্টের সঙ্গে সাক্ষাত করে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি ব্যক্ত করেন। চীনের অস্থায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রী চিপো ফেই বলেন, ভারতের কার্যকলাপে তার সম্প্রসারণবাদী নগ্নরূপ প্রকাশ হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, সমাজতন্ত্রী সা¤্রাজ্যবাদীরা নির্লজ্জের মতো ভারতীয় সম্প্রসারণবাদের ত্রাণকর্তার ভূমিকা গ্রহণ করে বর্বরোচিত কাজ করেছে।

সম্মিলিত বাহিনী উত্তরাঞ্চলের যুদ্ধে সর্বাত্মক সাফল্য অর্জন করেছে। মিত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে দিনাজপুর, রংপুর ও সৈয়দপুরের শত্রুবাহিনীকে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। যৌথবাহিনী এই তিন শহর ছাড়া রংপুর ও দিনাজপুর জেলা সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত করে। রাতে পাকবাহিনী জামালপুর গ্যারিসন ছেড়ে ঢাকার দিকে পালাবার সময় শহরের অদূরে যৌথবাহিনীর মুখোমুখি হয়। এ-যুদ্ধে প্রায় ১৫০০ পাকসেনা হতাহত হয়। বাকিরা আত্মসমর্পণ করে।

দিবাগত রাতে আল-বদরবাহিনী গুপ্তঘাতকদল দৈনিক ইত্তেফাকের কার্যনির্বাহী সম্পাদক সিরাজুদ্দিন হোসেন ও পিপিআই-ও চিপ রিপোর্টার সৈয়দ নাজমুল হককে তাঁদের বাসভবন থেকে অপহরণ করে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী নয়াদিল্লীতে বলেন, যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত জাতিসংঘের আহবান ভারত প্রত্যাখ্যান করেনি বা গ্রহণও করেনি। প্রস্তাবটি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজয় শুধু তখনই সম্ভব হবে যখন বাংলাদেশ সরকার কায়েম হবে এবং বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত এক কোটি শরণার্থী তাদের বাস্তুভিটায় ফিরে যেতে পারবে।

তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ১০, ২০১৮)