ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » খেলা » বিস্তারিত

অন্যরকম সেঞ্চুরির অপেক্ষায় পঞ্চপাণ্ডব

২০১৮ ডিসেম্বর ১০ ১৮:৫৩:১৩
অন্যরকম সেঞ্চুরির অপেক্ষায় পঞ্চপাণ্ডব

স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ ক্রিকেটকে গত এক দশকের বেশি সময় ধরে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন পঞ্চপাণ্ডব খ্যাত মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিশ্ব ক্রিকেটে এমন পাঁচ ক্রিকেটারের সমন্বয় খুবই কম দেখা গেছে।

এর আগে বিভিন্ন সময় ৬৪বার এমন উদাহারণ দেখা গেলেও, বাংলাদেশ ক্রিকেটে ব্যাপারটি সম্পূর্ণ আলাদা। কেননা পূর্বে নির্বাচকরা সিনিয়র ক্রিকেটারদের দীর্ঘ সময় এমন সুযোগ দেননি।

আর এই পঞ্চপাণ্ডবই এবার দারুণ একটি মাইলফলকের সামনে। ১১ ডিসেম্বর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তারা খেললেই দেশের হয়ে একসঙ্গে সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১০০টি ম্যাচ খেলার অনন্য গৌরব অর্জন করবেন।

পঞ্চপাণ্ডব নিয়ে এখন পর্যন্ত ৯৯ ম্যাচে ৪৭টি জয় ও ৪৮টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। ৪টি ম্যাচের কোনো ফলাফল হয়নি। তবে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে পরের ম্যাচ জিতলেই জয়-পরাজয় পরিসংখ্যান সমান হয়ে যাবে।

ক্রিকেটের জনপ্রিয় পোর্টাল ক্রিকইনফো এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।

বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন সাকিব। প্রতি মৌসুমেই তিনি নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। ওপেনার তামিম ইকবালের আছে দেশের হয়ে ব্যাটিংয়ের প্রায় সব রেকর্ড। বিশেষ করে ২০১৫ সালের পর থেকে তার ধারাবাহিকতা চোখে পড়ার মতো। বিদেশের মাটিতে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান মুশফিক মিডঅর্ডারের অন্যতম ভরসা। আর সক্ষিংপ্ত ফরম্যাটে লোয়ারঅর্ডারে মাহমুদউল্লাহ নিজেকে বার বার প্রমাণ করেছেন। সম্প্রতি টেস্টেও তিনি দুটি সেঞ্চুরি করেছেন।

দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফির কথা আলাদা করেই বলতে হয়। এই পাঁচের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে সিনিয়র। বেশ কয়েকবার ইনজুরির ধাক্কা সামলেও বর্তমানে তিনি দলের সেরা পেসার। ২০১৫ সাল থেকে তার নেতৃত্বেই মূলত এই টাইগারদের রূপ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০০তম ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তার অধীনে রয়েছে এই ফরম্যাটে সর্বোচ্চ উইকেটও।

২০০৭ সালে মাহমুদউল্লাহ’র অভিষেকের পর থেকেই মূলত পঞ্চপাণ্ডবদের একসঙ্গে পথচলা। আর তাদের হাত ধরেই পরিবর্তনের হাওয়া বইতে শুরু করে। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের পর ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালীদের ওয়ানডে সিরিজে দেশের মাটিতে সিরিজ হারানোর অভিজ্ঞতা। ২০১৮ সালে আবার উইন্ডিজদের তাদের মাটিতে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারিয়েছে।

সাকিব, তামিম, মুশফিক এবং মাহমুদউল্লার সমন্বয়ে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তদেরই মাটিতে টেস্ট জয়। আর সম্প্রতি ঘরের মাঠে ক্যারিবীয়দের ২ ম্যাচ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ।

এই পাঁচ ক্রিকেটার আসার আগে বাংলাদেশ তখন নিয়মিত কেনিয়া ও জিম্বাবুয়ের মতো দলের বিপক্ষেই জয় পেত। যেখানে ২০০৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দলটি সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১৪৭ ম্যাচের মধ্যে ১১৪টিতেই হেরেছে। তবে সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ প্রধান নির্বাচক ও ডেভ হোয়াটমার হেড কোচ হওয়ার পর চেহারা বদলে যায়।

২০০৮ সালে কোচ জিমি সিডন্সের সময় আবার এই পঞ্চপাণ্ডব খারাপ সময়ও পার করে। যদিও সে সময় দেশের প্রতিষ্ঠিত বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ভারতের নিষিদ্ধ টি-২০ টুর্নামেন্ট আইসিএলে যোগ দেন। কিন্তু ২০১০ সালে সাকিবের প্রায় একক পারফরম্যান্সে সুসময় ফিরে আসে। সেবার ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে ওয়ানডেতে ৪-০তে ধবলধোলাই করে টাইগাররা।কিন্তু সেই সিরিজে মাশরাফি ও তামিম ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি।

২০১১ সালে কঠিন সময় পার করার পর ২০১২ সালে পঞ্চপাণ্ডব এশিয়া কাপ প্রায় জিতেই গিয়েছিলেন। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে এক রানের কান্নার হার বরণ করতে হয়। কিন্তু সেবছরই ক্যারিবীয়দের ঘরের মাঠে ওয়ানেডতে ৩-২ ব্যবধানে হারানোর পর কিউইদের ৩-০তে হোয়াইটওয়াশ করে টাইগাররা।

২০১৪ সালটা এ যাবৎকালের বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভুলে যাওয়ার মতো একটি বছর ছিল। যেখানে ২২টি ম্যাচ খেলে মাত্র ২টিতে জয় পায় তারা।

পরবর্তীতে মাশরাফি দলের ওয়ানডে ও টি-২০’র দায়িত্ব নেন। এরপরই ঘুরে দাঁড়ায় দল। আর ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ থেকে হয়ে ওঠে আরও ধারাবাহিক। ২০১৭ সালে খেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল। আর এ বছর ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজ জয়। মাশরাফি যদিও ২০১৭ সালের পর টি-২০তে অবসর নেন। তবে ২০১৫ সাল থেকে তারা সবাই ৫০ ওভারের ম্যাচ একইসঙ্গে খেলছেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে চলমান সিরিজসহ ওয়ানডেতে দলের বর্তমান জয়ের শতাংশ ৫৪। যেখানে ২০০৭ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ছিল ৩৯.৬০ শতাংশ।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ১০, ২০১৮)