ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » প্রবাসের চিঠি » বিস্তারিত

অবিস্মরণীয় মানুষ বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান

২০১৯ মার্চ ১০ ১৮:৪২:৫৭
অবিস্মরণীয় মানুষ বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান

প্রবীর বিকাশ সরকার


বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান (১৯২৮-২০১৪) অসাধারণ একজন মেধাবী ও পণ্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। এমন স্পষ্টভাষী মানুষ খুব কমই আছেন জগৎসংসারে। তিনি একজন ব্যতিক্রম মানুষ ছিলেন। মনেপ্রাণে ছিলেন ন্যাশনালিস্ট যদিও সাম্যবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। স্বদেশ, মাতৃভাষা, স্বাধীনতা এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়ে তাঁর মতো চিন্তা-ভাবনা সমকালীন কম মানুষই করেছেন একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মে নিয়োজিত থেকে।

আইন-আদালত এবং বিচারপতির দায়দায়িত্বে থেকে সৃজনশীল বিষয়াদি নিয়ে চিন্তা করার ফুসরৎ সহজে পাওয়া যায় না। কিন্তু জানার আগ্রহ তাঁকে এই সীমাবদ্ধতাকে তুড়ি মেরে ভেঙ্গে দিয়েছে বললে বেশি বলা হয় না। তাঁর রচনাসমগ্রই প্রমাণ করে তাঁর মনন কেমন ছিল।

খুব দীর্ঘদিনের পরিচয় বা ঘনিষ্ঠতা তাঁর সঙ্গে আমার ছিল না। হঠাৎ করেই পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা। ২০০৮ সালে আমার গ্রন্থ ‘জানা অজানা জাপান’ এর ১ম খণ্ডের প্রকাশনানুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে আসনগ্রহণ করেছিলেন। কী পরম সৌভাগ্য আমার! তবে এর জন্য অন্তরালে যারা কাজ করেছেন তারা হলেন, বহুবছরের পুরনো বন্ধু রফিকুল আলম, অনুজপ্রতিম বন্ধু কবি ও গবেষক শিহাব শাহরিয়ার এবং প্রিয়জন কবি, সাংবাদিক ও গবেষক বাবলু রহমান।

এরপর হঠাৎ একদিন জানতে পেলাম অগ্রজপ্রতিম বন্ধু স্বপন কুমার দাশের কাছে যে, বহুদিন ধরে তিনি বিচারপতি হাবিব স্যারের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। স্বপনদা জন্মগতভাবে কমিউনিস্ট। আমার কৈশোরে আমরা কুমিল্লায় পাশাপাশি বাসায় ছিলাম ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত। বর্তমানে ঢাকার আরামবাগে তাঁর একটি ছাপাখানা রয়েছে ‘মেঘমালা’ নামে। এহেন স্বপনদাই একদিন বললেন, চলো হাবিব স্যারের বাসায় যাই গুলশানে। আমি ২০০৭ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে ফিরেছি এবং ঢাকা ও কুমিল্লাতে কিছু কাজে ‍নিযুক্ত ছিলাম। তখন মাঝেমাঝে স্বপনদার প্রতিষ্ঠানে ও বাসায় গিয়েছি।

এই যাওয়া-আসার মধ্যে বেশ কয়েকবার হাবিব স্যারের বাসায় নিয়ে গিয়েছেন তিনি আমাকে। স্যারের সঙ্গে বেশ সময় নিয়ে নানা বিষয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। জাপান সম্পর্কে তাঁর জানার আগ্রহ ছিল অত্যন্ত প্রবল। জাপান ভ্রমণের চিন্তাও করেছিলেন। মেইল করে জানিয়েছিলেন আমাকে। সাকুরা ফোটার সময় আসতে চেয়েছিলেন ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে। আমিও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু এর মধ্যে তিনি চলে গেলেন আমাদেরকে ছেড়ে।

হাবিব স্যার আমার ‘রবীন্দ্রনাথ এবং জাপান: শতবর্ষের সম্পর্ক’ গ্রন্থটি পড়েছিলেন এবং একটি নাতিদীর্ঘ আলোচনা লিখেছিলেন দৈনিক ইত্তেফাকের সাহিত্য সাময়িকীতে। তাঁকে নিয়ে আমার দীর্ঘ একটি প্রবন্ধ আছে, দৈনিক কুমিল্লার কাগজে লিখেছিলাম প্রয়াত হওয়ার পরে।

মাতৃভাষা নিয়ে কবিতাশীর্ষক তাঁর একটি গ্রন্থ আছে, যাতে বিভিন্ন দেশের কবিদের কবিতা তুলে ধরেছেন। বইটি ইংরেজি ভাষায় সম্পাদিত ও প্রকাশিত। আমার কাছে কপিটি নেই, সেটা কুমিল্লার বাসায় আছে, স্যার উপহার দিয়েছিলেন আমাকে। সেই গ্রন্থটিতে জাপানি কোনো কবির কবিতা মুদ্রিত করতে আগ্রহী তিনি, তাই আমাকে ফোন করে জানালেন।

অনেক খুঁজে খুঁজে একজন কবির কবিতা পেলাম ইন্টারনেটে। তাও জাপানি ভাষায়, ইংরেজি নেই। আমি ইংরেজি ভুলে গেছি বহু আগেই। ২৪ ঘণ্টা আমাকে জাপানি বলতে হয়, বাংলা বলারও সুযোগ নেই। এখন স্যার চাইছেন, কবিতাটির ইংরেজি ও বাংলায় অনুবাদ! হাবিব স্যার বলে কথা! লড়াই করতে হবে আমাকে। জাপানি ভাষা থেকে ইংরেজি ও বাংলায় অনুবাদ করে স্যারকে মেইল করেছি কবির পরিচিতিসহ। সেটা গ্রন্থে স্থান দিয়েছেন তিনি। ফোন করে আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন, বলেছিলেন, তোমার কপিটি আমার কাছে আছে। ঢাকায় এলে বাসায় এসো।

Mother language
Iijima Kouichi

During the six months in foreign country
Didn't think
To write a poem
I forget to myself
Were walking around
Why don't write poem asked by
I could not answer all the time.

Coming back to Japan
In a few days
Could not stay without writing a poem
Its to me now
Finally understandable walking without writing a poem
That of six months.
I came back again
Into mother language .

Mother language, to speak, in this word
Mother and country and language have
From mother and country and language
Cut off to myself admonished by six months
Not hurting me
Were walking in practical condition.
I did not need to write a poem
Almost.

In April Paul Celan
In to river Seine thrown himself for suiside
Was Jewish this poet's act
I feel understand.
Poetry that is sad thing
Poetry and country language correct to be said
It is not for me.
I am by native language hurt the people
I every night to another mother tongue should departure
This still make me to write poem still let me to exist.

লেখক : জাপান প্রবাসী।