ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » প্রবাসের চিঠি » বিস্তারিত

মহিলা নেতৃত্বে বাংলাদেশে কোন সমস্যাই নেই : ক্লার্ক

২০১৯ মার্চ ১৮ ১৭:২৫:৩৮
মহিলা নেতৃত্বে বাংলাদেশে কোন সমস্যাই নেই : ক্লার্ক

প্রবাস ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ব্রুকলিনের কংগ্রেসওমেন ও ডেমোক্রাট নেতা ইভেট ডায়ান ক্লার্ক বলেছেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে তাঁর একটি বিশেষ ধারণা রয়েছে সেটি হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে মহিলা নেতৃত্বে বাংলাদেশ পরিচালনায় কোন সমস্যাই হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্র পরিচালনায়ও এ ধরনের মহিলা নেতৃত্বের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

স্থানীয় সময় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রুকলিনের একটি রেস্তোঁরায় যুক্তরাষ্ট্রস্থ বাংলাদেশি অ্যান্ড আমেরিকান সোসাইটি আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রস্থ বাংলাদেশি অ্যান্ড আমেরিকান সোসাইটির সভাপতি আবুল বাশারের সভাপতিত্বে এবং সাবিনা শারমিন নিহারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কংগ্রেসওমেন ইভেট ডায়ান ক্লার্ক সাম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সম্প্রদায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছেন বলে উল্লেখ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানদের ভয়ের কোন কারণ নেই। আমরা সব সময় তাদের পাশেই থাকবো।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন বর্তমান সিস্টেম এখন প্রায় ভঙ্গুর।এটা আর কাজ দিচ্ছে না-সকলেই চান-ইমিগ্রেশন সিস্টেম রিফর্ম। কিন্তু রাজনৈতিক খেলার মারপ্যাচে সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামার আমল থেকে এ পর্যন্ত নিয়ে টানাপোড়েন চলছেই। সর্বশেষ এই টানাপোড়েনে ফেডারেল সরকারের কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়ে। এর ফলে ফেডারেল সরকারের বেশকিছু কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

কংগ্রেসওমেন ইভেট বলেন, তরুণ ইমিগ্রান্টদের সুরক্ষায় ওবামা প্রশাসনের ঘোষিত ‘ড্রিমার প্রজেক্ট’-এ বরাদ্দ অর্থ নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয় সিনেট। যে সাড়ে আট লক্ষেরও বেশি আনডকুমেন্টেড শিশু বয়সে আমেরিকায় ঢুকেছেন, ডেমোক্র্যাটরা চাইছেন তাদের বহিষ্কারের হাত থেকে রক্ষা করতে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের সাময়িক আইনি বৈধতা দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন তিনি এ কর্মসূচি বন্ধ করে দেবেন এবং কংগ্রেসকে একটা নতুন পদক্ষেপ চূড়ান্ত করতে মার্চ মাস পর্যন্ত সময় দেন।

তিনি আরো বলেন, পিতা-মাতার হাত ধরে শিশু অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে আনডকুমেন্টেড অবস্থায় প্রবেশ করে যুক্তরাষ্ট্রের স্কুল-কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া করেছে সেই সব তরুণ-তরুণীকে অস্থায়ীভাবে বৈধতা দিয়েচিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ‘ড্রিমারস’ বলে আখ্যায়িত এই তরুণ-তরুণীরা প্রেসিডেন্ট ওবামার ঘোষিত ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভাল প্রোগ্রামের অধীনে বৈধবাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও দুই বছর পরপর নবায়নযোগ্য ওয়ার্কপারমিট। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ডেকা প্রোগ্রাম বাতিল কওে তাদের আদেন আর নবায়ন না করার ঘোষনা দিয়ে একটি আদেশ জারী করে।

তিনি উল্লেখ করেন, ডেমোক্রেটদের আপত্তি এখানেই। তারা চাইছে এসব ইমিগ্রান্টদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেয়ার ঘোষণা থেকে সরে আসতে হবে হোয়াইট হাউসকে। এমন ড্রিমারসের সংখ্যা কমপক্ষে সাড়ে আট লাখ। তাদেরকে বের করে দেয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার কারণে ডেমোক্রেটদের ঘায়েল করে বক্তব্য দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার দল। তারা বলতে চান, এসব ইমিগ্রান্টদের পক্ষ নিয়ে ডেমোক্রেটরা তাদের ভোটব্যাংক নিশ্চিত করতে চান। এ ইস্যুতে আটকে যায় নতুন বাজেট সংক্রান্ত বিল।

তিনি উল্লেখ করেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চাইছেন ডিভি ও ফ্যামিলি ভিাসা বন্ধ করে দিতেসেই সাথে ১ কোটি ২০ লাখ আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে। অন্যদিকে ডেমোক্রাটরা এর ঘোর বিরোধী। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের ভঙ্গুর ইমিগ্রেশন সমস্যার সমাধান তো হবেই না বরং এ সমস্যা দিন দিনই আরো বাড়তে থাকবে।

সভাপতির ভাষণে বাংলাদেশি অ্যান্ড আমেরিকান সোসাইটির সভাপতি আবুল বাশার বলেন সাবেক মেম্বার অব সিটি কাউন্সিল এবং বর্তমান কংগ্রেসওমেন ইভেট ডায়ান ক্লার্কের মা ড. উনা ক্লার্ক একজন প্রবাসী বান্ধব মহীয়সী নারী। যারা তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছেন শুধু তারাই জানেন এই মহীয়সী নারীর গুণের কথা। তিনি বলেন যে কোন সমস্যা নিয়ে যত রাতই হোক না কেন তাকে ফোন করলে তিনি তা রিসিভ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে থাকেন।প্রবাসী বান্ধব এ ধরনের পরোপকারী মানুষ পাওয়া খুবই দুষ্কর।এ পর্যায়ে তিনি তাঁকে মাদার তেরেসার সঙ্গেও তুলনা করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাবেক মেম্বার অব সিটি কাউন্সিল ড. উনা ক্লার্ক, কিংস কাউন্টির জাষ্টিস ক্যাথী জে কিং, জাষ্টিস লিসা এস ওটলে, জাষ্টিস ইনগ্রিট যোসেফ, জাষ্টিস অ্যাশ, ডেরিফিন বি নিকলস, চিনাইলু উদো, এডওয়ার্ড কিং,জোভিয়া রাডিক্স,সাঈদ রেজা, সুদীপ্ত দেব, হাজী মোস্তফা, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ প্রমুখ।বাংলা প্রেস।

(ওএস/এসপি/মার্চ ১৮, ২০১৯)