ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

নেশাদ্রব্য না এনে দেওয়ায়  হত্যা

২০১৯ জুন ১০ ২০:০৫:২৬
নেশাদ্রব্য না এনে দেওয়ায়  হত্যা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে ইয়াবা ট্যাব এনে না দেওয়ায় সহযোগী মাদকসেবীরা হাত ও মুখ বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে মুকুল হোসেন নামের এক মাদক সেবীকে। মুকুল সাতক্ষীরার কুখ্যাত ছিচকে চোর নামে পরিচিত। সোমবার সকালে পুলিশ সাতক্ষীরা শহরের কাশেমপুর বাইপাস সড়কের মেহের আলীর নির্মাণাধীন ইট ভাটার সামনে থেকে তার লাশ উদ্ধার করে।

নিহত মুকুল(৩০) সাতক্ষীরা শহরতলীর ইসলামপুর চরের হরজেন ওরফে টেনু মোল্লার ছেলে।
বাকাল ইসলামপুর চরের সায়রা বানু বলেন, পাঁচ সন্তানের মধ্যে মুকুল হোসেন সেঝ। সে মাঝে মাঝে বিভিন্ন বিভিন্ন স্থানে চুরি করতো। নেশাও করতো সে। চেষ্টা করেও তাকে শোধরানো যায়নি। ফলে তাকে বিয়ে ও দিতে পারেননি তিনি।
তিনি আরো জানান, রোববার দুপুরে মুকুল বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সামনের পথ ব্যবহার না করে পিছনের পথ দিয়ে বের হয়। তাকে পিছন দিক দিয়ে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে মুকুল কান্না জড়িত কণ্ঠে বলে, একই এলাকার পিয়ার আলীর ছেলে মিজানুর রহমান, আব্দুল আজিজের ছেলে সাইফুল ও হযরত আলীর ছেলে নক্কু ভারত থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট কিনে আনার জন্য ১৫ দিন আগে তাকে পাঁচ হাজার টাকা দেয়। অবৈধপথে ভারতে যাওয়ার সময় বিএসএফ তাকে আটক করে টাকা কেড়ে নেওয়ার তার আর ইয়াবা নিয়ে আসা হয়নি। বিএসএফ টাকা কেড়ে নিয়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছে এটা মিজান ও তার দু’ বন্ধু মানতে চায় না। একপর্যায়ে টাকা না দিলে তাকে দেখতে পেলে মেরে ফেলবে বলে মোবাইল ফোনে হুমকি দেয়। শনিবার ও রোববার কয়েকবার মিজান বাড়িতে মুকুলকে খুঁজতে আসে। রোববার দুপুরে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর আব্দুল আজিজের ছেলে সাইফুল তাকে ডেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফার্মেষীর পাশে রফিকুলের দোকানে নিয়ে যায় মুকুলকে। সেখান থেকে বাকাল ব্রীজের পাশে কথিত যুবলীগ অফিসে তাকে আটক করে মারপিট করে ছেড়ে দেওয়ার পর মুকুল আর বাড়ি ফেরেনি। সোমবার সকালে পুলিশ কাশেমপুর বাইপাস সড়কের পাশে মেহের আলীর ইটভাটার সামনে গামছা দিয়ে মুখ, দড়ি দিয়ে হাত বাঁধা উপুড় করে তার পিঠের উপর দু’টি মাটির ঢিল রাখা অবস্থায় মুকুলের লাশ উদ্ধার করে। সাইফুল, মিজান ও নক্কুসহ কয়েকজন মুকুলকে ধরে নিয়ে যেয়ে হাত ও মুখ বেঁধে হত্যার পর লাশ বাইপাস সড়কের পাশে ফেলে রেখে যায় বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। লাশের গলায় তার দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার দাগ ছিল। এর আগে তার মুখ থেতলে দেওয়া হয়। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে মুকুলের লাশ সোমবার সন্ধ্যার পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তবে তাদের মামলা করার আগে পুলিশ তড়িঘড়ি করে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে মামলা করায় তারা হতাশ হয়েছেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মুকুলের বিরুদ্ধে সদর থানায় কমপক্ষে দু’ ডজন চুরির মামলা রয়েছে। তবে মুকুলকে শাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় উপপরিদর্শক মহসিন আলী বাদি হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে সোমবার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

(ওএস/পিএস/১০ জুন, ২০১৯)