ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

টানা বর্ষণে পানিবন্দী রংপুর নগরীর নিম্নাঞ্চলের মানুষ  

২০১৯ জুলাই ১২ ০০:১৬:১০
টানা বর্ষণে পানিবন্দী রংপুর নগরীর নিম্নাঞ্চলের মানুষ  

মানিক সরকার মানিক, রংপুর : কখনও হালকা কখনও ভারি টানা বর্ষণে রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। একেতে বৃষ্টির পানি অন্যদিকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ডালিয়ায় অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারেজের পানি বর্তমানে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তাসহ বিভিন্ন নদীর চরাঞ্চল ছাড়াও মহানগরীর বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার পরিবারের মানুষজন। এদিকে মহানগরীর আমাশু কুকরুল এলাকার ব্রীজটি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সেখানকার মানুষজনকে চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছে। জীবনের ঝুকি নিয়ে পারাপার করছে তারা।

স্থানীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে গত ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র রংপুর জেলায় তারা ৬২ দশমিক ৪ মিলিমিটার এবং গত ৭দিনে ৩০৫ দশমিক ২ মিলিমিটার পানি রেকর্ড করেছে। তাদের মতে, বৃষ্টি আর দু’চারদিন লাগাতার হলে ভয়াবহ বন্যার আশংকা দেখা দিতে পারে। এদিকে কখনও ভারি কখনও হালকা বৃষ্টিপাতের কারণে গ্রামীণ জনপদের বিভিন্ন সড়কে পানি জমে থাকায় চলাচলে মারাত্মক সমস্যার মুখে পড়েছে স্থানীয়রা।

এছাড়াও নগরবাসীরা ঘর ছেড়ে বের হতে পারছেন না। সবকিছু মিলিয়ে বৃষ্টিপাতের কারণে এক ধরণের স্থবিরতা নেমে এসেছে নগরবাসীর মাঝে। সবচে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তার চরের ১৫ টি গ্রামের প্রায় ৫’শ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। সেখানকার কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল বেরিবাঁধে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

এছাড়া একই উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ, চর ইসলী, কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল, চর মুটুরকপুর, নোহালী ইউনিয়নের বাঘডোহরা, চর নোহালী, কচুয়া এলাকার প্রায় ৫’শ পরিবার পানিবন্দী হয়ে আছে। কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রাজু জানান, তার ইউনিয়নের বিনবিনিয়ার চর এলাকায় ৭০ পরিবার এখনও পানিবন্দী।

তিনি জানান, দুর্গত মানুষদের দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। এদিকে একই অবস্থা জেলার কাউনিয়া, পীরগাছাসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন চর এবং নিম্নাঞ্চলের।

কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে হঠাৎ পনি বৃদ্ধি পাওয়ায় তার ইউপির বিশ্বনাথ, চর গনাই, হয়বত খা,চরগনাই, ঠুসমারার চর, বালাপাড়াসহ কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছে। অনেক এলাকার স্কুল মাদ্রাসার মাঠে পানি জমে থাকায় সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ রয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় বিঘ্নিত ঘটছে।

এছাড়া পানি বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন চরাঞ্চলের আবাদী জমি ও বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি গবাদি পশু ও হাস মুরগি নিয়ে চরম আশংকা করছেন কষক-গৃহস্থরা।

(এম/এসপি/জুলাই ১২, ২০১৯)