ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

বিরোধী দল, জাতীয় ঐক্য : আজকের প্রেক্ষিতে

২০১৯ জুলাই ৩০ ১৮:৩৬:০৫
বিরোধী দল, জাতীয় ঐক্য : আজকের প্রেক্ষিতে

রণেশ মৈত্র


আমাদের জাতীয় সংসদে একটি বিরোধী দল আছে। যদিও সংসদীয় কার্য্যকলাপে, সংসদ অধিবেশনগুলির আলাপ-আলোচনায়, তর্ক-বিতর্কে, মাঠে-ময়দানের আন্দোলন সংগ্রামে কোথাও জনগণ তার হদিস পান না। তাঁরা দেখেন, নাম ভিন্ন হলেও সেটিও সরকারি দল বলা চলে দুই নম্বরী। এই দুই নম্বরী দলের দুই নম্বর নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ হলেন সংসদে বিরোধী দলীয় নেত্রী। সরকারি সমর্থনেই নির্বাচিত সরকারি ইচ্ছাতেই প্রতিষ্ঠিত বিরোধী দলীয় নেত্রী। এক সময় আ.স.ম. রবকে আমরা যেমন দেখেছি মানের দিক থেকে ইনি সম্ভবত: তারও নীচে। তবু খাতা-কলমে হলেও একজন বিরোধী দলীয় নেত্রী সংসদে আছেন।

প্রিয় পাঠক পাঠিকারা হয়তো এতোমধ্যে স্মৃতিতে আনতে পেরেছেন, অনুমান করতে পেরেছেন এই দুই নম্বরী দলটির নাম জাতীয় পার্টি যার এক নম্বর নেতাটির নাম প্রয়াত আলহাজ হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ আর দলটির দুই নম্বর নেতা তাঁরই পত্নী বেগম রওশন এরশাদ। তবে কিছুকাল আগে, মৃত্যুর পূর্বক্ষণে এরশাদ দলের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে গেছেন তাঁর ভাইকে স্ত্রীকে নয়। সরকারি দল বেগম এরশাদকে পরিচিত করে দিয়েছেন সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে। এক অসাধারণ বিরোধী দলীয় নেতাই বটে কারণ সাধারণত: সংসদে বিরোধী দলীয় নেতারা তাঁদের বক্তৃতায় সংসদ কাঁপিয়ে তোলেন আর বেগম এরশাদ ? তিনি বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে সংসদকে ঠান্ডা মাথায় ঘুম পাড়িয়ে দেন। অতীতের আ.স.ম. রব অভিহিত হতো গৃহ পালিত বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে- তাঁর দলের নামও ছিল জাসদ(রব)। তিনি মাঝে মধ্যে দু’একটি প্রশ্নে ফোঁস করতেন, আপোষে, সরকারকে আঘাত না করে এবং যথাসময়ে সরকারকে সমর্থন দিয়ে যেতেন বরাবর।

বেগম রওশন এরশাদ বিরোধী দলীয় নেত্রী। আবার তাঁর দলের কয়েকজন নেতা শুরু থেকেই দিব্যি মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী পদেও আসীন দশন সংসদে। আবার দলীয় চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্দ এরশাদ ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত, পূর্ণ মন্ত্রীর মর্য্যাদায়। তিনি দাবী করেন জাতীয় পার্টি বিরোধী দল। কখনও কখনও ফোঁস করেন যদিও তা দেখে লোকে হাসে। অপর পক্ষে বেগম রওশন এরশাদ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে বলেছেন মানুষকে বিশ্বাস করানো যাচ্ছে না যে জাতীয় পার্টি বিরোধী দল। তাই অনুগ্রহ করে তাঁর দলীয় (জাতীয় পার্টি) মন্ত্রীদের অব্যাহতি দিন।

মজার ব্যাপার বিরোধী দলীয় নেত্রী কিন্তু ঐ মন্ত্রীদের তখন পদত্যাগ করতে বলেন নি কারণ হয়তো এই যে তেমন কথা বলে লাভ হতো না কেউ পদত্যাগ করবেন না- এটা তিনি ভালভাবেই জানতেন।

যাহোক এই বিচিত্র দলটি বস্তুত: সৌভাগ্যবান কারণ তাদের মূল নেতার বিরুদ্ধে থাকা যাবতীয় দুর্নীতির মোকর্দ্দমা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল এবং তাদেরকে ক্ষমতাশীন বিরোধী দল বানিয়ে নতুন ধরণের বিরোধী দলের বিচিত্র মর্যাদায় অভিষিক্ত করা হয়েছিল। আশির দশকের তীব্র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও দেশের জনগণের ঐতিহ্যবাহী আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাসকেও কার্য্যত: ইতিহাসের পাতা থেকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পর্য্যায়ে পৌঁছেছে।

যাহোক, শতকরা একজন মানুষও মনে করেন না জাতীয় পাটি বিরোধী দল। তবুও যেহেতু তেমন একটা দাবী তুলে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয় তাই এতটা স্পেস গুরুত্বহীন দলটিকে আরও দিকভ্রান্ত, মর্য্যাদাহীন এবং আভ্যন্তরীণ অনৈক্যে জর্জরিত। প্রকৃতপক্ষে মানুষ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে বিরোধী দল বলে মনে করে। আর এই বিবেচনা পরিপূর্ণভাবে স্থান পেয়েছে তাদের প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা এগুলির বিবেচনায়। বস্তুত: বিবেচনার থেকে আমরা যদি এগুলিকেই প্রাধান্য দিই তবে তো মানতেই হয় যে, এই দুটিই হোল আসল বিরোধী দল। যদিও এ জাতীয় বিবেচনা কদাপি আদর্শিক চেতনা প্রসূত নয় সামাজিক অর্থনৈতিক দেশপ্রেমিক বা জনস্বার্থ কেন্দ্রিক মৌলিক কোন চিন্তা প্রসূতও নয়।

ক্ষমতায় দীর্ঘকাল যাবত রয়েছে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন সরকার । এই দলটি মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী-শামসুল হক- শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত। দলটি বহু আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭০ সালে সমগ্র বাঙালি জাতির ঐক্যবদ্ধ এবং দ্বিধাহীন সমর্থনে অভূতপূর্ব বিজয় লাভে সমর্থ হয়। কিন্তু সে রায় অস্বীকার করায় গণরোষ বহুগুণে বৃদ্ধি পায় পাকিস্তানী সামরিক শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এবং শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে ও শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদের (বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী) নেতৃত্বে দেশ বিদেশের বিপুল সমর্থনে নয় মাস যাবত সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটিয়েছিল।

দীর্ঘকাল যাবত দেশের সকল আন্দোলন সংগ্রামে আওয়ামীলীগের মিত্র হিসেবে লড়াই করেছে বামপন্থী দু্িট ঐতিহ্যবাহী দল- ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। এই দল দুটি ১৯৭০ এর নির্বাচনে নির্মমভাবে পরাজিত হলেও বিজয়ী আওয়ামীলীগকে তারা বিজয়ের সাথে সাথে অকৃত্রিম অভিনন্দন জানিয়েছিল এবং অবিলম্বে ঐ রায় কার্যকর করার জন্য বঙ্গবন্ধুর হাতে গোটা পাকিস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবীও জানিয়েছিল। ঐ দাবিতে আন্দোলনের বিশ্বস্ত সহযোগি হিসেবেও দিবারাত্র কাজ করেছিল। ১৯৭১ এর মহান সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধেও ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা ছিল অসাধারণ এবং গভীর তাৎপর্যময়।

ঐ সময়ে অর্থাৎ পাকিস্তান আমলে ন্যাপের সাংগঠনিক শক্তি ছিল বিপুল-যদিও তা প্রধানত: মধ্যবিত্ত ভিত্তিক। সর্বজন স্বীকৃত ছিল যে ন্যাপ হলো দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে। নির্বাচনী ফলাফলেও তার বহি: প্রকাশ ঘটেছে ন্যাপের প্রাপ্ত ভোট সংখ্যার বিবেচনায়। যদিও ন্যাপের প্রাপ্টত আসন সংখ্যা হতো অত্যন্ত কম।

বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) তখন ছিল নিষিদ্ধ। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ন্যাপের অব্যন্তরে কাজ করতে এবং সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমরেড অমূল্য লাহিড়ী, রবি নিয়োগী, অজয় রায়, আমিনুল ইসলাম বাদশা, প্রসাদ রায় আমিসহ পূর্ব বাংলার সকল জেলার বহু পরিচিত অপরিচিত বামপন্থী নেতাকর্মী ন্যাপে থেকে কাজ করতেন। সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ-একচেটিয়া পুঁজিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সমাজতান্ত্রিক ও সম্পদশালী দেশ গড়ার দাবীতে ছিল চ্যাম্পিয়ন।

বস্তুত: সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা পাকিস্তানের বুকে সেই প্রতিক্রয়াশীল আদর্শের ভিত্তিতে গঠিত পাকিস্তানে দেশবাসীর মধ্যে প্রগতিশীল চেতনা গড়ে তোলা ও তা দৃঢ় ও বদ্ধমূল করার ক্ষেত্রে ন্যাপের ভূমিকা ছিল তুলানাহীন-তার অবদান ছিল অবিস্মরণীয়। তেমনি সাম্রাজ্যবাদ বিশেষ করে মার্কিণ সা¤্রাজ্যবাদ যে পাকিস্তানসহ গোটা বিশ্বের তত্ব যথার্থভাবে তুলে ধরতে এবং যুবসমাজ ও দেশবাসীকে বিপুলভাবে সেই মতের অনুসারী করে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েচিল তৎকালীন পাকিস্তানের এই বৃহত্তম বামপন্থী দলটি।

মহান মুক্তিযুদ্ধেও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির ভূমিকা চিল অবিষ্মরণীয়। কিন্তু বিশ্বের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলির বিপর্যয়, নেতৃত্বের মতদ্বৈধতা, ন্যাপ থেকে কামিউনিস্টদেরকে প্রত্যাহার করে কমিউটিস্ট পার্টি গড়ে তোলা প্রকাশ্র দল হিসাবে এবং তাতেও ভাঙ্গন সৃষ্টি হওয়া এবং নানাবিধ কারণে এই দলগুলি আজ অত্যন্ত ছোট ও দুর্বল দলে পরিণত হওয়ায় দু্িট বড় দলের বিকল্প শক্তি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়ানো তাদের পক্ষে কার্যত: সম্ভব হয়ে উঠছে না। তদুপরি অস্ত্রের ব্যবহার ও রাজনীতির দুবৃত্তায়ন ঘটায় নীতিনিষ্ঠ রাজনীতিও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।

এহেন পরিস্থিতিতেই বিএনপি জামায়াতে ইসলামী শক্তিশালী বিরোধী দল বলে বিবেচিত হয়ে আসছে সেই আশির দশক থেকেই। কিন্তু নীতিগত অবস্থান যদি (বড়া দলগুলির) ধীরস্থির ভাবে বিবেচনা করা যায়-আদর্শগত দিকগুলিকেও যদি সূক্ষ্ণ পর্যালোচনায় সামনে আনা যায়- তবে দিব্যি প্রতিভাত হয় যে বস্তুত: বিএনপি প্রধান বিরোধী দল হিসাবে ময়দানে বিবেচিত হলেও নীতি আদর্শের বিবেচনায় আদৌ তা নয়। শ্রেণীগত অবস্থানের ক্ষেত্রেও পার্থক্য ক্ষীয়মান।

এই আলোচনায় গভীর ভাবে স্মরণে রাখতে হবে পাকিস্তানের ২৩টি বছরের দীর্ঘ ও ধারাবাহিক গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা এবং একাত্তরের মহান সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ কালীন সরকারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে যে জীবন বাজি রাখা যুদ্ধে বাঙালি জাতি বিজয় অর্জন করেছিল তার মাধ্যমে পাকিস্তানের মৌল আদর্শ সাম্প্রদায়িকতা ও পুঁজিবাদী ব্যবস্থা হয়েছিল পরিত্যক্ত ও পরাজিত আর বিজয় ও সাফল্য অর্জন করেছিল ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্র।

দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে ২৩ বছর আন্দোলন কালীন ও মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ও পরবর্তীতে বাহাত্তরের সংবিধান গ্রহণে আওয়ামীলীগের যে বলিষ্ঠ আদর্শিক চরিত্র ও অবস্থান দেশে বিদেশে প্রতিফলিত ও সমাদৃত হয়েছিল-সেই অবস্থানে আওয়ামীলীগ আজ আর নেই। আজকের আওয়ামীলীগ বঙ্গবন্ধুর ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শগুলিকে আর আঁকড়ে ধরে নেই বরং সংবিধানে জিয়ার বিসমিল্লাহ জামায়াত ও ধর্মাশ্রয়ী দলগুলির সাংবিধানিক বৈধতা প্রদান, হেফাজতে ইসলঅমীর সাথে সমঝোতা, এরশাদের রাষ্টধর্ম এর সাংবিধানিকীকরণ ও ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর পরিচালিত নির্যাতনে অংশগ্রহণ নেপথ্য ভূমিকা পালন এবং অপরাধীদের বিচারামলে না আনা প্রভৃতির মাধ্যমে আজকের আওয়ামীলীগ ভয়ংকরভাবে নীতি আদর্শের বিচ্যুতিতে নিপতিত। এবং ঠিক এ কারণেই বিএনপির সাথে তার মৌলিক আদর্শগত গড়মিল আজ প্রায় অন্তর্হিত।

স্পষ্টতই বলা যায় দু’দলের লড়াই আদর্শিক দ্বন্দ্ব বা মতানৈক্যের কারণে নয় তা পূরোদস্তুর ক্ষমতায় থাকা ও ক্ষমতায় যাওয়াকে কেন্দ্র করে পরিচালিত বিগত দিনের কোন আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য নয়।

ঠিক এ কারণেই আওয়ামীলীগের বিরোধী অবস্থানে থাকলেও বিএনপি আওয়ামীলীগের আদর্শের বিরোধীতা করছে না বরং নেতিবাচক অবস্থান থেকে ক্ষমতা লিপ্সাই তার প্রধান ও মুখ্য বিষয় হওয়াতে এ জাতীয় দলকে বিরোধীদল বলে প্রকৃত পক্ষে বিবেচনা করা দেশের ও জনগণের জন্যই ক্ষতিকারক।

বিএনপি, কদাপি বিসমিল্লাহর প্রশ্নে, জামায়াতে ইসলামী ও ধর্মাশ্রয়ী অপরাপর দলকে বৈধাত প্রদানের প্রশ্নে, রাষ্ট্রধর্মের প্রশ্নে বা সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার না করার প্রশ্নে আওয়ামীলীগ ও তার পরিচালিত সরকারের বিন্দুমাত্র সমালোচনা কি সংসদে কি রাজপথে কোথাও কদাপি করে নি। এরশাদের জাতীয় পার্টিও নয়।

এমতাবস্থায় এরা বিরোধী দলের ভেক ধারী মাত্র ? ক্ষমতাধর্মী ক্ষমতা বহিভূত নীতি আদর্শ বিহীন দল মাত্র। তাই মুখে বললেও এরা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে অক্ষম। উপরোক্ত বিষয়গুলিকে তাই আজকের প্রয়োজনে গভীর ভাবে বিবেচনায় রেখে ভাবতে হবে কেমন একটা বিরোধী দল দেশ ও জনগণের স্বার্থে আজ অপরিহার্য।

যেমন একটি বিরোধীদল চাই তাকে অবশ্যই হতে হবে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী, পুঁজিবাদ বিরোধী, শোষণ-বিরোধী ও নারী-পুরুষের বৈষম্য বিরোধী এবং সকল সরকারি গণ বিরোধী পদক্ষেপেরও বিরোধী। এমন একটি বিরোধী দলকে যেমন গড়ে তুলতে হবে তেমনি তাকে গণভিত্তি সম্পন্ন লড়াকু দক্ষ হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করতে হবে। যেমন দলটি রাজপথ কাঁপাবে-তেমনি তারা সংসদকেও প্রাণবন্ত করে তুলবে জনসাধারণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সংসদে গিয়ে।

এই বিরোধীদল অবশ্যই চাইবে ক্ষমতায় যেতে কারণ যতদিন তা না যেতে পারবে ততদিন তো ঐ মহান আদর্শ গুলির বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। তাই জনগণের স্বার্থেই জনমত প্রবলভাবে গড়ে তুলে তাকে ক্ষমতায় যাবার চেষ্টাও অব্যাহত রাখতে হবে-আদর্শবিবর্জিত হয়ে বা কোন প্রকার আপোষের ভিত্তিতে নয়।

দেশের তরুণ সমাজ দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায় এবং দেশবাসী ভুগছেন দীর্ঘকাল যাবত এমন একটি বিরোধী দল গড়ে না উঠার কারণে। সমাজ ও নারী সমাজকে এবং বুদ্ধিজীবি সমাজকে ঐক্যব্ধ করে যত দ্রুত এমন একট্ িদল গড়ে তুলবেন ততই দেশের মঙ্গল। আবার যতই বিলম্ব হবে দেশবাসী ততই ক্ষতির সম্মুখিন হবেন। নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় ঐক্যের ভিতও গড়ে তোলা অপরিহার্য।

লেখক : সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ, সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রাপ্ত।