ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » খেলা » বিস্তারিত

ভারতের কাছে ৫ রানে হেরে রানার্সআপ বাংলাদেশ

২০১৯ সেপ্টেম্বর ১৪ ১৭:০০:২২
ভারতের কাছে ৫ রানে হেরে রানার্সআপ বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক : ইতিহাস গড়ার উপলক্ষ্য প্রস্তুত ছিলো। প্রয়োজন ছিলো ৫০ ওভার ব্যাট করে মাত্র ১০৭ রান করা। কিন্তু এ ছোট লক্ষ্যটিকেই পাহাড়সম বানিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ব্যাটসম্যানরা। বোলারদের দুর্দান্ত প্রদর্শনীর বিপরীতে ব্যাটসম্যানদের হতাশাজনক পারফরম্যান্স ম্লান করে দিয়েছে শিরোপা জেতার স্বপ্ন।

ভারতের বাঁহাতি স্পিনার অথর্ব আঙ্কোলেকারের ঘূর্ণিতে নাকাল হয়ে মাত্র ১০১ রানেই অলআউট হয়ে গেছে টাইগার যুবারা। যে কারণে শিরোপার খুব কাছেই গিয়েও হারতে হয়েছে মাত্র ৫ রানে। দুর্দান্ত এ জয়ে যুব এশিয়া কাপের আট আসরের মধ্যে সপ্তমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত।

১০৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে টপঅর্ডারের ব্যাটসম্যানরা করতে পারেননি কিছুই। মাত্র ১৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে যুবারা। দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ০ ও পারভেজ হোসেন ইমন করেন ৫ রান। দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয় ০ এবং মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাট থেকে আস ১ রান।

পঞ্চম উইকেট জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক আকবর আলি ও শাহাদাত হোসেন। কিন্তু অধিনায়ককে একা করে দিয়ে স্কোরবোর্ডে মাত্র ৪০ রান উঠতেই সাজঘরে ফিরে যান ৩ রান করা শাহাদাত। দলের সংগ্রহটা ৫০ পেরুতেই ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন শামীম হোসেন।

মাত্র ৫১ রানেই ৬ উইকেট তুলে নিয়ে তখন আত্মবিশ্বাস টইটুম্বুর ভারতীয় যুবারা। কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র ছিলেন না যুবা টাইগারদের অধিনায়ক আকবর। আট নম্বরে নামা স্পিনিং অলরাউন্ডার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে শেষ আক্রমণটা করেন তিনি। দুজনের জুটি এগুচ্ছিলো ভালোই, নিমিষেই যোগ হয় ২৭টি রা।

কিন্ত হঠাৎ করেই কী যেন হয় আকবর আলীর। যখন জয়ের জন্য বাকি মাত্র ২৯ রান, তখন অযথাই বড় শট খেলতে গিয়ে লং অফ অঞ্চলে ধরা পড়ে যান তিনি। আউট হওয়ার আগে ৩৬ বলে করেন ২৩ রান। এক বলই অধিনায়কের পথ ধরেন মৃত্যুঞ্জয়। তিনি ২৬ বলে ২১ রান করে ফিরে গেলে দলীয় ৭৮ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।

তখন ম্যাচের দখল ছিলো পুরোপুরি ভারতের হাতে। তবু যেন বাকি ছিলো ম্যাচের নাটকীয়তা। তাই তো টাইগার যুবাদের দুই বোলার রাকিবুল হাসান ও তানজিম হাসান সাকিব মিলে খেলেন ১১.২ ওভার, গড়ে ফেলেন ২৩ রানের জুটি।

এ দুজনের ৬৮ বলের জুটিতে যখনই মনে হচ্ছিলো লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশ, তখনই ভারতকে শিরোপা জেতানোর জন্য আবির্ভাব আঙ্কোলেকারের। বাকি থাকা ২ উইকেট তুলে নিতে ১ ওভার খরচ করেন বাঁহাতি এ স্পিনার। ইনিংসের ৩৩তম ওভারের তৃতীয় বলে ১২ রান করা তানজিম ও শেষ বলে শাহীন আলমকে আউট করে মাত্র ৫ রানে জয় পাইয়ে দেন দলকে।

নিজের ৮ ওভারের স্পেলে ২ মেইডেনসহ মাত্র ২৮ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন আঙ্কোলেকার। এছাড়া আকাশ সিং ৩ এবং বিদ্যাধর পাতিল ও সুশান্ত মিশ্র নেন ১টি করে উইকেট।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলারদের মুখে খেই হারিয়ে ফেলে ভারতের ব্যাটসম্যানরা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ভারতীয় ইনিংসে আঘাত হানে বাংলাদেশের বোলাররা। পেসার তানজিম হাসান সাকিবের বলে উইকেটের পেছনে আকবর আলির হাতে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে ফিরে যান ভারতীয় ওপেনার অর্জুন আজাদ।

এরপর মাঠে নেমে দাঁড়াতেই পারেনি তিলক ভার্মা। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর বলে তানজিদ হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ভারতের অন্যতম সম্ভাবনাময়ী এই ব্যাটসম্যান। নামের পাশে লিখেছেন কেবল ২ রান।

দলীয় ৮ রানের মাথায় পতন ঘটে তৃতীয় উইকেটের। ওপেনার সুভেদ পারকার মাত্র ৪ রানেই ফিরে যান রানআউটের খাঁড়ায় কাটা পড়ে।

এরপর অধিনায়ক ধ্রুব জুরেল এবং সাসওয়াত রাওয়াত মিলে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। ৪৫ রানের জুটি গড়ার পর আঘাত হানেন অফ স্পিনার শামীম হোসেন। এলবিডব্লিউর শিকার করেন তিনি রাওয়াতকে। ১৯ রান করে ফিরে যান ভারতের মিডল অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। একই ওভারে এক বলের ব্যবধানে মাঠে নেমেই শূন্য রানে ফিরে যান বরুন লেভান্ডে।

৫৩ রানে ৫ম উইকেট পড়ার পর ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে অধিনায়ক জুরেল আর অথর্ভ আনকোলেকার মিলে চেষ্টা করে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার। কিন্তু আবারও রানআউটের খাঁড়ায় পড়তে হলো ভারতকে। মাহমুদুল হাসান জয়ের সরাসরি থ্রোতে দলীয় ৬১ রানের মাথায় রানআউট হয়ে ফিরে যান আনকোলেকার। করলেন মাত্র ২ রান।

৬২ রানের মাথায় ফিরে গেলেন বাংলাদেশের সামনে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা অধিনায়ক ধ্রুব জুরেল। ৫৭ বল খেলে তিনি করেন ৩২ রান। কিন্তু দলীয় ৬২ রানের মাথায় শামীম হোসেনের বলে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ভারত অধিনায়ক।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৯)