ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

থানায় বিয়ে : ওসি প্রত্যাহার, এসআই সাসপেণ্ড এবং অতঃপর

২০১৯ সেপ্টেম্বর ১৮ ১৭:১৫:০৩
থানায় বিয়ে : ওসি প্রত্যাহার, এসআই সাসপেণ্ড এবং অতঃপর

রণেশ মৈত্র


সাতাশি বছরের জীবনে ভালো অনেক কিছু দেখার সুযোগ হয়েছে, সুযোগ হয়েছে বহু খারাপ, অনভিপ্রেত, অনাকাংখিত অনেক কিছু দেখারও। কিন্তু মাত্রাহীন ভাল বা মাত্রাহীন খারাপ খুব কমই দেখেছি। কিন্তু সদ্য দিন কয়েক আগে খোদ পাবনায় যা দেখলাম তেমনটি কদাপি দেখিনি বা শুনিনি। সম্ভবত: এমন ঘটনার কথা এ যাবত বাংলাদেশের অন্য কারও দেখার বা শুনারদুর্ভাগ্য ঘটে নি।

ঘটনাটির শেষ ঘটনাস্থল পাবনা সদর থানায়। প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় তা ব্যাপকভাবে প্রচারিত। যে গণমাধ্যম-কর্মীরা সাহস করে খবরটি পরিবেশন করেছেন এবং যে মাধ্যমগুলি তা ব্যাপকভাবে প্রচার করেছেন তাঁরা ধন্যবাদার্হ-যদিও কাজটি তাঁদের কর্তব্যের আওতার মধ্যেই পড়ে।

বিগত ১৩ সেপ্টেম্বর তারিখে দৈনিক সমকালের শেষ প্রষ্ঠায় দুই কলাম ব্যাপী শিরোনামে প্রকাশিত খবরটি তুলে ধরছি প্রিয় পাঠক-পাঠিকাদের স্মরণে সেটাকে বিশেষভাবে আনার জন্য। খবরটি সমকালের পাবনা অফিস থেকে পরিবেশিত এবং সেটি ছিল “পাবনা থানার ও সি প্রত্যাহার, এস আই সাসপে-” শিরোনামে। খবরটিতে বলা হয়েছে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে থানায় এক ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানার ওসি ওবাইদুল হক কে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে উপ পরিদর্শক (এসআই) একরামুল হক কে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাবনার পুলিশ সুপার এই তথ্য সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন।

পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম জানানগণধর্ষণের ঘটনায় মামলা না নিয়ে এক ধর্ষকের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে পুলিশ বিষয়টির তদন্তে নামে।তদন্ত কমিটির তদন্তের রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে থানায় মামলাটি গ্রহণ করে তা নথিভূক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে, এ মামলায় অভিযুক্ত রাসেল ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিশিষ্ট নেতা-শরিফুল ইসলাম ঘন্টুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

দু’দিন আগে আরও দুই আসামী হোসেন আলী ও সঞ্জুকে গ্রেফতার করে। তিনি জানান গ্রেফতারকৃত দুই ধর্ষক রাসেল মিঞা ও হোসেন আলী ওরফে হোসেন ড্রাইভার আদালতে ফৌজদারী কার্য্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, সদর থানার ওসি ওবাইদুল হক থানার মধ্যে বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করলেও তদন্ত কমিটি এর সত্যতা পেয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিয়ের সামগ্রিক আয়োজনে থানার এস আই একরামুল হকের সম্পৃক্ততায় প্রমাণ পাওয়ায় তাকে সাময়িক বরখান্ত করা হয়েছে।

এদিকে এঘটনা অনুসন্ধানে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের নির্দেশে জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ তিন সদস্যের অপর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির প্রধান নিযুক্ত হয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জাহিদ নেওয়াজ। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইবনে মিজান ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা.কেএম আবু জাফর। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটিও দ্রুত তদন্ত শেষ করে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে তাঁদের তদন্ত প্রতিবেদনও দাখিল করেছেন। অত:পর জেলা প্রশাসকও দ্রুততার সাথে তদন্ত প্রতিবেদনটি মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

অন্যদিকে গ্রেফতারকৃত দুই ধর্ষক রাসেল মিয়া ও হোসেন আলী ওরফে হোসেন ড্রাইভার আদলতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। এর আগে এজাহারভূক্ত ঐ আসামীকে টঙ্গী থেকে এবং সঞ্জু নামের আর একজনকে নাটোর থেকে গ্রেফতার করা হয়।

পাবনা সদর উপজেলার সাহাপুর যশোদল গ্রামের এক বিবাহিতা নারীকে গত ২৯ আগষ্ট রাতে একই গ্রামের আকবর আলীর ছেলে রাসেল আহমেদ চার সহযোগি নিয়ে টানা চারদিন ধরে ধর্ষণ করে। পরে ঐ ধর্ষিতা গৃহবধূ বাদী হয়ে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ রাসেলক আটক করলেও মামলাটি নথিভূক্ত না করে ঐ নারীকে রাসেলেরর সাথে থানা চত্বরে বিয়ে দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি ঘটানোর চেষ্টা চালান ওসি।

খবরটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর পরই জনৈক মানবাধিকার আইনজীবী বিষয়টি মহামান্য হাইকোর্টে উত্থাপন করে এ ব্যাপারে আদালতের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দানের আবেদন জানালে মাননীয় আদালাত বলেন, বিষয়টির প্রতি তাঁরা নজর রাখছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছেনবলে জানা যায়। এই কথা বলে আদালতও কোন নির্দিষ্ট আদেশ দানে বিরত থাকেন এবং বলেন, “ঘটনাবলী দেখে প্রয়োজন বোধ করলে পরবর্তী সপ্তাহে আসুন”।

যা হোক, গণমাধ্যমগুলিতে খবর প্রকাশিত হওয়ায়, ঘটনার বেশ কিছুদিন পরে হলেও, তদন্তকাজ বেশ দ্রুতই অগ্রসর হচ্ছে। গণমাধ্যম কর্মীরাও নিয়মিত ফলোআপ প্রকাশ করে বিষয়টিকে জীবন্ত রাখছেন। আমরাও সেই সূত্রে সকল কিছুজানতে পারছি।

আমার নজরে যা বিশেষভাবে পড়ছে এবং মনকে যা বিশেষভাবে আলোড়িত করছে,তা হলো ধর্ষকেরা গ্রেফতার হলেও পরবর্তীতে এক ধর্ষকের সাথেই বিবাহিত নারীর থানায় বিয়ে দেওয়া ঘটনাটিও তদন্তে সত্য বলে বেরিয়ে এলেও পুলিশ কর্মকর্তারা শুধুমাত্র বিভাগীয় শাস্তি পাবেন কেন? অপরাধটাতো বিভাগীয় নয়। পুরোদস্তুর এটি একটি অত্যন্ত নোংরা, জঘন্য, নীতিরীতি বিরোধী, বে-আইনী ফৌজদারী অপরাধ। পুলিশ কর্মকর্তারা দ্রুত একজন ম্যারেজ রেজিষ্ট্রারকে ডেকে এনে প্রথমে বিবাহিতা ঐ নারীকে তালাক দেওয়ানো তার অভিমতের বিরুদ্ধে এবং তালাকের তথাকথিত আনুষ্ঠানিকতার পর পরই বিয়ের কাবিন নামা রেজিষ্ট্রি করানো হয়।

সংশ্লিষ্ট ম্যারেজ রেজিষ্ট্রারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান যে তাঁকে গ্রাম থেকে পুলিশ দিয়ে থানায় ডেকে আনা হয় এবং ঐ তালাক ও বিয়ে পড়াতে বলা হয়। ম্যারেজ রেজিষ্ট্রার জানান “এতে তিনি আপত্তি করেছিলেন এই কারণে যে তালাক হতে হবে স্বেচ্ছায় এবং নোটিশ দিয়ে ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপোষ না হলে তখন। এর পর আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে বিয়ে হতে পারে। কিন্তু এই কাজগুলি তাৎক্ষণিকভাবে একই দিনে করা ইসলাম অনুমোদন করে না। দেশের প্রচলিত আইনেরও তা অবৈধ বলে জানি। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ চাপ দেওয়ায় আমি একাজ করতে বাধ্য হই।”

এরপরও পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে ঐ মামলায় আসামী হিসেবে রেডকর্ডভূক্ত করেগ্রেফতার করা হবে না কেন? জবাব যদি এই হয় যে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং তদন্তে তাঁরা দোষী প্রমাণিত হলে কর্তৃপক্ষ হয় বিভাগীয় শাস্তি নতুবা ফৌজদারী মোকর্দমা দায়ের করতে পারেন। এই যুক্তি খোঁড়া এবং অগ্রহযোগ্য।

কারণ :

এক. তাঁরা স্পষ্টত:ই ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন যা আইনত: একটি ফৌজদারী অপরাধ;

দুই. ধর্ষকরাও তো তদন্তাধীন। তদন্তাধীন থাকা সত্বেও তারা যদি দেশের নানাস্থান থেকে গ্রেফতার হতে পারেন, পুলিশ কর্মকর্তারা হাতের কাছেথেকেও গ্রেফতার হবেন না কেন? এ কাজ অবশ্যই আইন প্রয়োগে বৈষম্য সৃষ্টি করে যা অবশ্যই আইন বিরোধী;

তিন. পুলিশ কর্মকর্তারা যেহেতু অভিযোগের বাইরে নন এবং প্রভাবশালী তাই তাঁরা বাইরে থাকলে, মামলাটিকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে বাধা দেবেন, এমন আশংকা আদৌ অমূলক নয়;

চার. মামলার সাক্ষীদেরকেও প্রভাবিত করে ঐ পুলিশ কর্মকর্তারা মামলাটির অপমৃত্যুও ঘটাতে পারেন;

পাঁচ. ইতোমধ্যেই ঐ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে খবর বেরিয়েছে যে উপযুক্ত পরিমাণ টাকা পেলেই তিনি বহু মামলা নষ্ট করে দিয়েছেন। সুতরাং তাঁদেরকে বাইরে রাখলে এই চাঞ্চল্যকর মামলাটিরও অনুরূপ অপমৃত্যু ঘটানোর আশংকা থেকেই যাবে।

তাই স্পষ্ট করেই দাবী জানাই ঐ দুই পুলিশ কর্মকর্তা এবং যদি থানায় তাদের আরও সহযোগী কেউ থেকে থাকে তাদের সকলকেই অবিলম্বে মামলাটির আসামী তালিকাভূক্ত করে তাদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা করা হোক।

পাবনার নানা সামাজিক সংগঠন ও মহিলা পরিষদ মানববন্ধন করে ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং এর জন্যে দায়ী সকলের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তি দাবী করেছেন।

সংবাদ-কর্মীরা নির্ভীকভাবে খবর পরিবেশন করেছেন কিন্তু তাঁরাও ভয়ভীতি মুক্ত নন। কারণ একদিকে থানার পুলিশ অপরদিকে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় একজন নেতা ঘটনার সাথে ওত:প্রোতভাবে জড়িত। ইতোমধ্যেই জোর করে চারদিনযাবত আটকে রেখে গণধর্ষনের শিকার মহিলার নিরাপত্তাই বা কোথায়? এসব দিকের প্রতি কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সকলের মনে আশংকা সৃষ্টির আরও কারণ আছে। বছর দেড়েক আগে পাবনা জেলার একমাত্র মহিলা সাংবাদিক সুবর্ণা নদী নিজ কর্মক্ষেত্র থেকে দায়িত্বপালন শেষে বাসায় যাওয়ার পথে রাধানগর এলকায় বাড়ীর ঠিক সন্নিকটে। জোরে সোরে এই খুনের তদন্ত শুরু হয়। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াগুলিও গুরুত্ব সহকারে দু’তিন সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই তদন্তের অগ্রগতি এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে খবর প্রকাশ করেন। প্রায় ষাটটি জেলায় সাংবাদিকেরা দেশজোড়া তার প্রতিবাদ ধ্বনিত হচ্ছিল। প্রায় ৬০ টি জেলায় সাংবাদিকেরা ঘটনার প্রতিবাদে এবং দায়ী খুনীদের কঠোর শাস্তি দাবী করে মানববন্ধন করেন। সংবাদপত্রে বেশ কয়েকটি নিবন্ধও প্রকাশিত হয় অনুরূপ দাবী জানিয়ে।

মামলা বেশ ভালভাবেই অগ্রসর হচ্ছিল। একজন আসামীও খুনের দায়ে গ্রেফতার হলো। আদালতে তার জামিনের প্রর্থনা নামঞ্জুর হলো।

কিন্তু হঠাৎ করেই সব যেন শীতল হয়ে গেল। স্থগিত হয়ে গেল তদন্ত কাজ। বাজারে রটানো হলো সুবর্ণার চরিত্র সন্দেহজনক। আর যায় কোথায়? মেয়েটি যেহেতু সন্দেহজনক চরিত্রের অধিকারী তাই তাকে খুন করায় অপরাধ কোথায়?

আরও দেখা গেল স্থানীয় কোন কোন পত্রিকায় সুবর্ণা নদীর চরিত্র নিয়ে নানা রসালো খবর বিশাল বিশাল করে ছাপা হতে। ব্যাপারটা কি? পুলিশ কেন থেমে গেল? আসামী কেন মুক্তি পেল? সাংবাদিকদের একাংশই বা কেন স্থানীয় পত্রিকায় ঐ একমাত্র মহিলা সাংবাদিকের চরিত্র হনন করে বিশাল বিশাল গল্প ফাঁদলেন? বিষয়টা রোবধম্য নয় তাতো নয়। কারণ খুন কাউকেই করা যায় না-সে সৎ চরিত্রের অধিকারী কেউ হোক বা না হোক। এমন কি একজন বারবনিতা হত্যা ও বাজরাণীহত্যায় কোন পার্থক্য নেই। উভয়ক্ষেত্রেই শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তাই পুনরায় সুবর্ণা নদীর হত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরুর দাবী জানাই। যে মহিলাকে নিয়ে বর্তমান নিবন্ধের অবতারণা সেই ধর্ষিতা মহিলার ক্ষেত্রেও তার চরিত্র নিয়ে বাজারে গুজব ছড়ানো ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। ঘটনা মিথ্যে বলে রটনাও চলছে। যদিও তা এখনও কোন পত্র-পত্রিকায় আসে নি। তবে দু’একটি প্রভাবশালী পত্রিকায় এ সংক্রান্ত কোন আদৌ খবর প্রকাশ না হওয়ায় এক্ষেত্রেও কিছু তয়-তদবির হয়তো শুরু হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।

যা হোক বর্তমান প্রশাসনিক ও পুলিশের কর্তপক্ষ বিষয়টি নিয়ে দৃঢ়তার সাথে অগ্রস হচ্ছেন। আশা করি এই দৃঢ়তা শেষ পর্য্যন্ত তাঁরা বজায় রাখবেন। এব অপরাধীরাও কঠোর শাস্তি পাবে।

লেখক : সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ, সাংবাদিকতায় একুশে পদকপ্রাপ্ত।