ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

দুর্নীতি মাদক জুয়া বিরোধী অভিযানে শেখ হাসিনার পাশে থাকি

২০১৯ সেপ্টেম্বর ২৫ ১৬:৩০:৫১
দুর্নীতি মাদক জুয়া বিরোধী অভিযানে শেখ হাসিনার পাশে থাকি

মানিক বৈরাগী


এক সপ্তাহ ধরে ঢাকার বাতাস ভারি হয়েগেছে, নিশ্বাস প্রশ্বাসে অবিশ্বাস আতংকে কাটে শ'তিনেক মনুষ্য প্রাণীর। যারা দেহে সাইনবোর্ড লাগানো আছে এরা রাজনৈতিক জীব। এমনিতেই বিশ্বের বসবাসের অযোগ্য নগরী ১ থেকে দশের মধ্যে উঠা নামা করে।বিশ্বের পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন ঢাকার বাতাসে অতিমাত্রায় শিষা সহ বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাসীয় পদার্থের উপস্থিতি। এখন যোগ হয়েছে টাকার গন্ধ,সাথে যোগ হয়েছে বাহারি মদের মাদকতা। এমনই পরিস্থিতিতে আমরা যারা মফস্বলে বাস করি শত অভান অনটন বৈশম্য প্রতিকূলতার ভেতর সরকারি কালো বাহিনি কখন এসে ধরে নিয়ে যায় এমন কোন টেনশন নাই। তবে আমাদের দুটি টেনশন কাজ করছে -বাংলাদেশের শান্তি ও প্রশান্তি যেনো পূর্বের মতো কালো মেঘে ঢেকে না দেয়। ২. বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা,সে যেনো থাকে নিরাপদে।

বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ ৭৫ সনে ক্ষমতা হারানা দেশি-বিদেশি চক্রান্ত, সরকারের ভেতর মীর জাফর মোনাফেকের সহযোগিতায় বিপদগামী সামরিক বাহিনীর রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। এতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তাঁর পরিবার পরিজন কে এরা শহীদ করেন।শহীদ হন জাতিয় চার নেতা।

সেই রক্তাক্ত প্রান্তরে জাতির জনক যাদের জন্য প্রাণ হারিয়েছেন তারা ঠিকই খন্দকার মুস্তাকের সাথে যোগদান করেন।শুধু হাত মেলান নি জাতীয় চার নেতা ও তৃতীয় চতুর্থ সারির কিছু ছাত্র যুব নেতারা।আর তৃণমূল কর্মী ও বাংলার মুক্তি কামি মানুষ। এরপর পদ্মা মেঘনা যমুনা কর্ণফুলী মধুমতী মাতামুহুরিতে বয়ে গেলো রক্ত শ্রোত। মুক্তি মেলেনি বাংলার মানুষের।

বঙ্গকন্যার ৮১ থেকে ৯৬ একুশটি বছর লড়াই সংগ্রামের পথ চলা।এই একুশ বছরে তাকে একুশবার হত্যা প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল, সর্বশেষ ২১শে আগস্ট। ৯৬ সনে ক্ষমতায় আসার পর আবারো সেই আরাধ্য ক্ষমতা থেকে বিচ্যুত হতে হলো দেশি-বিদেশি চক্রান্ত ও অরাজনৈতিক আলোচিত,শিক্ষিত ব্যক্তির প্রতি বিশ্বাসের কারনে। আবার সেই নির্ঘুম অনিশ্চিত মৃত্যু বুক পকেটে রেখে রাজপথের লড়াইয়ে পথ চলা।এভাবেই জামাত বিএনপি জোট সরকারের চরম নির্মম নির্যাতন সইতে হয়েছে মাঠের কর্মীদের। সারাদেশ যেনো জেলখানা আর কসাই খান।

জঙ্গিদের বোমা উৎসব যেনো নিত্যকার বিষয়। সারাদেশে হত্যা লুটপাট মদ জোয়ার সরাইখানা। এসবের ভেতর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা কে হত্যার উদ্যেশে রাজধানীর বুকে ঘটানো আর্জেস গ্রেনেড বিস্ফোরণ। মুহূর্তেই কালো ধোঁয়া আর রক্তশ্রোত।কত শত লোক পঙ্গু হলো, কত লোক শহীদ হলো।

এসব জুলুম নির্যাতন লুটপাট মদ জোয়া নারী অপব্যবহারের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিপুল ভোটে দেশরত্ন শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ কে ক্ষমতায় বসালো। সেই থেকে বর্তমান অবধি তিন মেয়াদ হতে চল্লো।
কিন্তু পাল্টালোনা আওয়ামীলীগ নেতা এমপি মন্ত্রীর খাসলত।পূর্বের থেকে আরো অধোপতিথ হতে হতে পঁচে গলে এক্কেবারে খাদের কিনারে।

আওয়ামীলীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ভাষায় যদি বলি এই আওয়ামীলীগ যেমন বীরের জন্মদেয় তেমনি মোনাফেকের ও জন্ম হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া যাদেরকেই বিশ্বাস করেছেন পদায়ন করেছেন দলে সরকারে সংসদে অধিকাংশই তাঁর সাথে ভেতরে আদর্শ বিচ্যুত হয়ে দেশ জাতি ও রাজনীতির সাথে বেইমানি বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। কেউ শেখ হাসিনা রেহেনার বিশ্বাস ভালোবাসা শ্রম ত্যাগের মুল্য দিলোনা।

এসব আওয়ামী নেতাদের কারনে আওয়ামী রাজনীতি যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে,তেমনি বেদনাহত হয়েছে শেখ হাসিনা। প্রতারিত হয়েছে রাষ্ট্র, মানুষ ও আওয়ামীলীগের তৃণমূল কর্মী। তাদের কারণে আস্থা হারা হচ্ছে মুজিব হাসিনা ভক্ত সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিভিন্ন কারণে রাজনৈতিক আন্তর্জাতিক সামাজিক ক্রান্তিকাল চলছে।

এশিয়ার তৃমুখি ভূরাজনৈতিক কারনে পঞ্চাশ বছরের পুরাতন রোহিঙ্গা সমস্যা ২০১৭ সাল নতুন করে গজব হিসাবে নাজিল হয়েছে।সাথে জামাত জঙ্গির বোমাবাজি ও মানুষ হত্যা। রাষ্ট্র বিরোধী বিএনপি জামাত ও উন্নয়ন বিরোধী রাজনৈতিক সকস্যা। এর মধ্যে নতুন করে যোগ হয়েছে আওয়ামীলীগের ভেতর আদর্শ বেচাবিক্র। এর ফলে ৭৪-৭৫র পর্যন্ত গোটা বাংলাদেশ যেমন রাজাকার যুদ্ধাপরাধী আমলা সবাই এক যোগে বাকশালে যোগাদান পাশাপাশি জাসদ ও মাওবাদী সন্ত্রাসীদের বোমাবাজি ও মানুষ খুন। আমলা সহায়তায় সেই সময়ের মন্ত্রী এমপি নেতাদের ব্যাপক দুর্নীতি চলছিল। বর্তমান সময়ে তারই পদধ্বনি দেখতে পাচ্ছি।

পিতা মুজিবের সময়ে যেমন তৃণমূল মানুষ কে নেতারা বঞ্চিত করে রাজাকার মজাকারের সাথে দুর্নীতি লুটপাটে জড়িয়ে পড়ে।চলে আন্তদলিয় কোন্দল ও একে অপরকে ঘায়েলের অপচেষ্টা। বর্তমান সময় কি তার বাইরে। ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে 'বর্তমান সময় কে তুল্যমূল্য করি তারই রুপ রেখা পরিলক্ষিত হয়। তবে আচার আচরণ কৌশলের ভিন্নতা আছে বৈকি। সেই সময় যেমন চাটুকার তোষামোদ কারেরা যেমন ঘিরে রেখেছিলো পিতা মুজিব কে বর্তমান সময় কি তার বাইরে? না মোটেও না। সেই সময় যেমন পিতা মুজিবের কানে সবসময় তাজউদ্দীন সহ অন্যান্য নির্মোহ নেতাদের বিরুদ্ধে মুস্তাক গং নিয়মিত বিষ ঢেলে দিতো রক্তের কতিপয় আত্মিয় সহযোগে।যার কারণে পিতা মুজিবের বিশ্বস্ত নির্ভিক সৈনিক হারানোর পর যা হবার তাই হলো।

এখনো কি তাই হচ্ছে। হয়েছিলো তাজউদ্দীন পুত্র মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করলো, দেশ ছাড়লো আরো কতো কি।এরপর শেখ হাসিনার চরম দুর্দিনে পাশে দাঁড়ানো সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কে সম্মেলনের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বিদায় জানানো হলো।কাউয়া গং আশরাফের বিরুদ্ধে নিয়মিত কুৎসা রটাতো,বিষ ঢালতো শেখ হাসিনার কানে।আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন আশারাফ তা নিরবে হজম করতে করতে এক্কেবারে অসুস্থ হয়ে নিরবেই চিরপ্রস্থান করলেন। আর শয়তান ফিরে আসে বার-বার।

তবে হ্যাঁ বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই ভয়াল ভয়ানক দিন নিজে দেখেছেন, প্রত্যক্ষ মোকাবিলা করেছেন এবং করছেন। শেখ হাসিনার কাজের প্রতি ঈমান আকিদা সাহিত্য সংস্কৃতি প্রগতি সততা ন্যায় নিষ্টা অভিজ্ঞতার প্রতি বাংলার মানুষের শতভাগ আস্থা রাখে, বিশ্বাস করে। আওয়ামীলীগের তৃণমূল কর্মীরা প্রাণ উৎসর্গ করতে কুন্ঠা বোধ করেনা,করেনি।এম উদাহরণ ভূরি ভূরি। কিন্তু পরিতাপের বিষয় ৭৫ র ১৫আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত পিতা মুজিব -শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ সহ অপরাপর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মী শহীদ হয়েছেন, চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তার কোন ডাটা আওয়ামীলীগের কাছে নেই ।নেওয়া হয়নি তাদের জীবন জীবিকার জন্য আর্থ-সামাজিক উদ্যোগ। করা হয়নি তাদের সামাজিক রাজনৈতিক ভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা।

বর্তমান সময়ে তারা ক্ষমতার নেতা এমপি মন্ত্রীর কাছে গলগ্রহ ও বিরক্তির কারণ। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় আমলা কামলা নির্ভরতা, ক্ষমতার নেতার রাজনৈতিক অর্থনৈতিক চারিত্রিক অধপতনের জন্যে ঐসব দুর্দিনের জীবন বাজী রেখে শ্লোগান মিছিলে জাগিয়ে তোলা ভাগ্যহত বেদনার দীর্ঘশ্বাস নয়তো।

অনুপ্রবেশ কারি দুষ্ট লোকের যখন চারদিকে রমরমা অবস্থা তাহলে রাষ্ট্রের রন্দ্রে অবস্থান করছে দুর্নীতি, জোয়ার ক্যাসিনো, মাদক আর যৌনতা। তাই শেখ হাসিনার এই দুর্নীতি মদ জোয়া বিরোধী ভূমিকা কে তৃণমূলের কর্মী সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষ স্বাগত জানিয়েছে অভিমান ভুলে শেখ হাসিনা কে প্রাণের চেয়ে ভালোবেসে।

এই অভিযান কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে সেই সুবিধাবাদী পাপিষ্ঠ আমলা,পুলিশ ও লুটেরা জোট বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। সেইদিকে তৃণমূল কর্মী কে পাহারা দিতে কে জাগাবে ফের।প্রাণোচ্ছল করতে কাউকে তো দেখছিনা। যখন টিভির খবর, কর্পোরেট পত্রিকার খবর পড়ি ও দেখি ছিদকাটা চুর যুবলীগের নেতা হয়ে কোটিপতি, ফ্রীডম পার্টির লোক রাজনীতির হর্তাকর্তা, রাজাকার, জামাত জঙ্গি রাজনীতি প্রশাসনের নীতিনির্ধারকদের আসনে বসে থাকেন।লুট করে নিয়ে যায় হাজার কুটি টাকা।

পথে ঘাটে ভাসে বস্তা বস্তা হাজার কোটি টাকার বস্তা।সিন্দুক ভেঙ্গে বের করা হচ্ছে শত শত ভরি স্বর্ণালঙ্কার। তখন জখমী ক্ষতে মনের অজান্তেই চিনচিন করে বাড়ে ব্যথা জ্বলে দগদগে ঘা।প্রশ্ন এমন একটি সরকার ব্যবস্থাপনা ও এমন নষ্ট ভ্রষ্ট দুর্নীতিবাজ জুয়াড়ি দেখার জন্যেই কি জীবনের ঝুকি নিয়েছিলাম? প্রশ্ন জাগে বহু মিথ্যা মামলা,রিমান্ড জেল থেকে মুক্তির জন্যে পৈতৃক জমি মায়ের স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করেছিলাম? কষ্ট বাড়ে,নিরবে অশ্রু ঝরে।

এসব খবর দেখে বউ এসে বলে যে রাজনীতির জন্যে জীবন আজ বিপন্ন,ছন্নছাড়া, চিকিৎসা বিহীন তারা আজ কি করছে আর আপনি কি করছেন।নিরুত্তর অপলক চেয়ে থাকি আকাশ পানে। সম্বিত ফিরে আবারো শেখ হাসিনার কথা ভাবি। ভালোবাসি প্রাণের নেত্রী হাসু বুবু কে। পরিশেষে বলতে চাই নেত্রীর এই অভিযান ব্যার্থ হতে দেবোনা।
সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে কেউ যেনো দালাল, প্রশাসনের দুর্বৃত্ত কর্মকর্তা কর্মচারী পুলিশের সহায়তায় পালাতে না পারে। কেউ যেনো এই অভিযান কে সাবোটাজ করে বিতর্কিত করে ব্যর্থ করতে না পারে।

ইতিমধ্যে তার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। কারণ শেখ হাসিনা দেশে নাই।এটাই চুড়ান্ত সময় তাদের পালানোর ও সাবোটাজ করার।মিড়িয়াও অপব্যবহার হতে পারে বা তারা নিজেরাই করতে পারে। তাই প্রত্যেক মুজিব সেনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সজাগ সতর্ক পাহারায় চোখকান খোলা রাখতে হবে কেউ যেনো আর পালাতে না পারে। অতিতেও পালিয়েছে বি ডি আর বিদ্রোহের সময়ে,যুদ্ধাপরাধী বিচারের সময়ে।এবার ও খুব সন্তর্পণে নেপালি জুয়াড়ি। আর যেনো কেউ আশ্র‍য় না দেয় কোন বাসা বাড়িতে। আসুন শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়াই দেশ বাঁচাই নিজে বাঁচি।

লেখক : নব্বইয়ের নির্যাতিত ছাত্রনেতা ও কবি, কক্সবাজার।