ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » বিস্তারিত

একজন শহীদ কনক ভূষণ সিকদার ও দুর্গতিনাশিনী শেখ হাসিনার প্রতি লক্ষ-কোটি প্রণাম!

২০১৯ অক্টোবর ১৮ ২০:২৭:৩৬
একজন শহীদ কনক ভূষণ সিকদার ও দুর্গতিনাশিনী শেখ হাসিনার প্রতি লক্ষ-কোটি প্রণাম!

প্রবীর সিকদার


মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সিকদার বাড়ির যারা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীন ব্যক্তিটি হলেন কনক ভূষণ সিকদার। আজ কেন যেন তাঁর কথা খুব মনে পড়ছে! একাত্তরের প্রতি বিকেলে তিনি সিকদার বাড়ির শিশু-কিশোরদের বাড়ির খোলা মাঠে একত্রিত করে আগাম একটি যুদ্ধের গল্প শোনাতেন।

পাকি হায়েনাদের ঢাকায় নৃশংস গণহত্যা পরিচালনার কথা বলতে বলতে তিনি ধূতির আঁচল টেনে নিজের চোখ মুছতেন। সেই দলে ছিলাম আমিও। আগাম সেই যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য তিনি আমাদের শারীরিক ও মানসিক শক্তি সঞ্চয়ের কথা বলতেন। শুধু বলা নয়, তিনি প্রতিদিন বিকেলে আমাদের ব্যায়াম শেখাতেন শক্ত সমর্থ শরীর গঠনে। আমাদেরকে তিনি নিয়ে যেতেন বাড়ির লক্ষ্মী-নারায়ণের মন্দিরে। মন্দিরের দরজা খুলে তিনি লক্ষ্মী-নারায়ণের মূর্তি দেখিয়ে বলতেন, এখন আমাদের নারায়ণ শেখ মুজিব আর লক্ষ্মী ইন্দিরা গান্ধী। যুদ্ধে কী আর লক্ষ্মী নারায়ণের পরাজয় হতে পারে! অবশ্যই না! সেই যুদ্ধে মুজিব-ইন্দিরার জয় অবশ্যম্ভাবী। আমরাও পেয়ে যাবো একটি স্বাধীন দেশ।

খুবই বিস্ময়ের সাথে দেখলাম, সেই যুদ্ধে মুজিব-ইন্দিরারই জয় হল, জয় হল বাঙালির; আমরা পেয়ে গেলাম একটি স্বাধীন দেশ! কিন্তু সেই স্বাধীন দেশের স্বপ্ন যিনি আমাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেই কনক ভূষণ সিকদার স্বাধীন দেশ দেখে যেতে পারলেন না! আজ মনের আকাশে সেই স্মৃতিচারণ করতে করতেই আমি যেন আমার চোখের সামনে শহীদ কনক ভূষণ সিকদারের অস্তিত্ব অনুভব করলাম! তিনি যেন আমাকে আকাশ দেখিয়ে বলছেন, ওই দেখ বাঙালির ভাগ্যাকাশে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা হিসেবেই আবির্ভূত হয়েছেন সেই নারায়ণ মুজিবের কন্যা শেখ হাসিনা! দেখিস তিনি ঠিক ঠিক তোদের মধ্যে বিরাজিত দুর্বৃত্ত-লুটেরারূপী অসুরদের বিনাশ করে বাংলাদেশকে স্বর্গের চেয়েও সুন্দর দেশ হিসেবেই প্রতিষ্ঠা করবেন!

আমি আরও বেশি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লাম! আমার বাবা কাকা দাদুসহ ত্রিশ লাখ কনক ভূষণ সিকদারের স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষা তো আসলেই বিফলে যাওয়ার নয়! আমি অজান্তেই শহীদ কনক ভূষণ সিকদার ও দুর্গতিনাশিনী শেখ হাসিনার প্রতি লক্ষ-কোটি প্রণাম জানালাম!