ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » ফিচার » বিস্তারিত

ভাইরালের সাত কাহন

২০১৯ অক্টোবর ২৪ ১৬:১৫:১৫
ভাইরালের সাত কাহন

রূপক মুখার্জি : তথ্য প্রযুক্তির চর উৎকর্ষতার এই সময়ে ‘ভাইরাল’ শব্দটি শোনে নাই-এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। নেট অর্থাৎ ইন্টারনেট দুনিয়ায় ভাইরাল শব্দটি একটি জনপ্রিয় শব্দে পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক ভাইরালকে দিয়েছে আলাদা ভাবমূর্তি। হরহামেশা, যখন তখন বিভিন্ন বিষয় অথবা ছবি কিংবা ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। কখনই থামছে না ভাইরাল। সময়কে ধারন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় এগিয়ে চলেছে ভাইরাল। অবস্থা এমনই যে, যাপিত জীবনযাত্রায় অনিবার্য অনুসঙ্গ হয়ে পড়েছে ভাইরাল।

কোনো লেখা, ছবি অথবা ভিডিও অনলাইনে অর্থাৎ ইন্টারনেটে সুনামির মতো আঘাত হানে, তখন সেটিই ভাইরাল হয়ে যায়। ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। প্লাবন বয়ে যায় ভাইরালের। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, ভাইরাল হওয়া লেখা, ছবি বা ভিডিও বানের মতো আসে, আবার বানের মতো চলেও যায়। তবে কিছু কিছু ভাইরাল জীবন, সমাজ এবং রাষ্ট্রের ‘চোখ’ খুলে দেয়। ভাইরালের কারণে বদলে যায় জীবন, সমাজ এবং রাষ্ট্র। ইতিহাসের অংশ হয়ে যায় ভাইরাল। তাই ভাইরালের গুরুত্ব আজকের পরিবর্তিত সময়ে স্বীকার্য সত্যে পরিনত হয়েছে।

ভাইরালের রকমভেদ আছে। কিছু ভাইরাল নির্মল আনন্দ দিয়ে যায়। কিছু ভাইরাল নতুন করে ভাবতে শেখায়। আবার কিছু ভাইরাল কাঁদায়। আজকাল জীবন, সমাজ এবং রাষ্ট্রের সাথে ভাইরাল শব্দটি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। জীবন ব্যবস্থার এক নতুন অনুষঙ্গ হলো ভাইরাল। অন্যান্য অনুষঙ্গের মতো ভাইরাল সৃষ্টির ইতিহাস হয়েছে। ভাইরাল হলো ইন্টারনেটের সন্তান। যা হাল আমলে সবচেয়ে জনপ্রিয় শব্দ হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে। ইন্টারনেট দুনিয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে অহংকারী করে রেখেছে ভাইরাল। যুগের এক নতুন মাত্রা ভাইরাল। সৃষ্টিতে ভাইরাল একটি মোক্ষম অস্ত্র।

ভাইরালের ভালো-মন্দ দুদিকই আছে। ভাইরালের ফলে জীবন, সমাজ ও রাষ্ট্র নড়েচড়ে ওঠে। মানুষ ফিরে পায় তার নায্য অধিকার। সমাজে সুশৃঙ্খলা ফিরে আসে। রাষ্ট্র কাঠামোতে আইনী সেবা আরও ত্বরিৎ হয়। সুতরাং ভাইরাল নিছক ভাইরাল নয়। এরও গুরুত্ব আছে। প্রযুক্তিগত উন্নতির কারনে দেশে দ্রুত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল, ইন্সট্রাগ্রামে বিভিন্ন লেখা, মন্তব্য, ছবি, ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। ভাইরাল হল্ইে সেটি সবার নজর কাটতে সক্ষম হয়। আর ভাইরাল হওয়া বিষয়টি নিয়ে ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবনে প্লাবন বয়ে যায়। তাই মানুষের মধ্যে ভাইরাল হওয়ার প্রবনতা দেখা যায়। আবার ভাইরাল হওয়ার কারণে অনেকের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিসহ। ছড়ায় ভুল তথ্য। ব্যক্তিগত জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। ভাইরাল অনেক সময় মিথ্যা ও অপপ্রচারের মাধ্যম হিসেবে দেখা যায়।

আসলে কোন লেখা, মন্তব্য, কোন ছবি, বা ভিডিও ভাইরাল হবে সেটি বলা সম্ভব নয়। তবে এটুকু বলা যেতে পারে, জীবনে সমাজে কিংবা রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে ঘটে যাওয়া বিষয়েই ভাইরাল বেশি হয়। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, ভাইরাল হওয়া বিষয়গুলোর কোনো সীমানা নেই। দেশের গন্ডির বাইরে বিদেশের কোনো লেখা, ছবি বা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে পারে। নির্দিষ্ট কোনো সীমা রেখার মধ্যে ভাইরালকে আবদ্ধ করা যায় না। ভাইরাল হলো একটি স্বাধীন এবং বহমান অনুষঙ্গ। ভাইরাল আসলে জীবন্ত তথ্য চিত্র। যা ব্যক্তি, সমাজ কিংবা রাষ্ট্রকে পথ দেখায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোয় অন্ধকার ছেড়ে আলোর পথে এগিয়ে চলুক ভাইরাল।

(আরএম/এসপি/অক্টোবর ২৪, ২০১৯)