ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » খেলা » বিস্তারিত

মুশফিকের ফিফটি, যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন মিরাজ

২০১৯ নভেম্বর ১৬ ১৫:০৪:২১
মুশফিকের ফিফটি, যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন মিরাজ

স্পোর্টস ডেস্ক : লিটন দাস সাজঘরে ফিরে যাওয়ার অনেকেই হয়তো ধরে নিয়েছিলেন দ্বিতীয় সেশনেই শেষ হয়ে যাবে ম্যাচ। মুশফিককে সঙ্গ দেয়ার থাকবে না কেউ। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০ রানে শেষের পাঁচ উইকেট হারানোয় এমন ভাবনা আসা মোটেও অমূলক নয়।

তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ভিন্ন চিন্তাই করছেন মুশফিকুর রহীম ও মেহেদি হাসান মিরাজ। খেলার ধারার বিপরীতে দুজন মিলে অবিচ্ছন্ন সপ্তম উইকেটে জুটিতে এখনও পর্যন্ত যোগ করেছেন ৫৬ রান। ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন মুশফিক, ত্রিশের কোটা পেরিয়েছেন মিরাজও।

চা পানের বিরতি পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৯১ রান। ইনিংস পরাজয় এড়াতে এখনও করতে হবে ১৫২ রান। ক্যারিয়ারের ২০তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ৫৩ রানে অপরাজিত রয়েছেন মুশফিক। তাকে দারুণ সঙ্গ দেয়া মিরাজ খেলছেন ৩৮ রান নিয়ে।

এর আগে দিনের শুরুতে সরাসরি খেলা না দেখে শুধুমাত্র স্কোরকার্ড অনুসরণ করে থাকলে, যে কেউ দ্বিধায় পড়ে যেতে পারতেন। হয়তো ভাবতেন, এটি প্রথম ইনিংসই দেখছি না তো? ম্যাচের প্রথম দিন সাবধানী শুরুর পর ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন বাঁহাতি ওপেনার ইমরুল কায়েস, করেছিলেন ৬ রান।

দ্বিতীয় ইনিংসেও ঠিক ৬ রানেই আউট হন তিনি। এবারেও ঠিক ষষ্ঠ ওভারেই, তবে প্রথম বলে। প্রথম ইনিংসে আজিঙ্কা রাহানের হাতে ক্যাচে পরিণত হলেও, দ্বিতীয় ইনিংসে সোজা বোল্ড হয়ে ফিরেছেন অভিজ্ঞ এ ওপেনার।

ভারতের ছুড়ে দেয়া ৩৪৩ রানের লিডের নিচে চাপা পড়ে আজ (শনিবার) দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছে বাংলাদেশ। প্রথম পাঁচ ওভার দেখেশুনে ভালোভাবেই কাটিয়ে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও ইমরুল কায়েস।

কিন্তু ষষ্ঠ ওভারে বোলিং করতে এসে প্রথম বলেই দারুণ এক ইনসুইংগারে ইমরুলের লেগ স্টাম্প উপড়ে দেন উমেশ। প্রথম ইনিংসের মতোই ৬ রানে ফিরে যান ইমরুল।

একই ওভারের পঞ্চম বলে অল্পের জন্য টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হকের উইকেটটি পাননি উমেশ। তার ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে কোনো শট না খেলে ছেড়ে দিয়েছিলেন মুমিনুল, বল ছুঁয়ে যায় পেছনের প্যাড।

ভারতীয় ফিল্ডারদের করা জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। নিজেদের মধ্যে কথা বলে রিভিউ নেন বিরাট কোহলি। রিপ্লেতে দেখা যায় অল্পের জন্য অফস্টাম্প মিস করতো বলটি। ফলে বেঁচে যান মুমিনুল। রিভিউ নষ্ট হয় ভারতের।

অধিনায়ক বেঁচে গেলেও পরের ওভারে নিজের উইকেট সামলে রাখতে পারেননি তরুণ ওপেনার সাদমান। ইমরুলের দেখাদেখি তিনিও ঘটান প্রথম ইনিংসের পুনরাবৃত্তি।

বৃহস্পতিবার সকালে দিনের সপ্তম ওভারের শেষ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৬ রানে আউট হয়েছিলেন সাদমান। আজও দিনের সপ্তম ওভারের শেষ বলে আউট হয়েছেন তিনি। তবে এবার আর ক্যাচ নয়। ইশান্ত শর্মার শার্প ইনসুইং ডেলিভারিতে সরাসরি বোল্ড হয়েছেন সাদমান। এবারও করেছেন ঠিক ৬ রান।

নিজের রানের খাতা খোলার আগে মুমিনুল রিভিউয়ের হাত থেকে বেঁচে গেলেও কয়েক ওভার পর আর বাঁচাতে পারেননি নিজের উইকেট। মোহাম্মদ শামির করার প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে স্টাম্প গার্ড দিয়ে ডিফেন্স করেছিলেন টাইগার অধিনায়ক।

কিন্তু বল ব্যাট ফাঁকি দিয়ে আঘাত হানে পেছনের প্যাডে। প্রথমে আউট দেননি আম্পায়ার। আবার রিভিউ নেন কোহলি। এবার রিপ্লেতে দেখা যায় বল সোজা আঘাত হানতো লেগস্টাম্পে। ফলে ৭ রান করে আউট হয়ে যান মুমিনুল।

শুরুর তিন ব্যাটসম্যানের আঁটসাঁট ব্যাটিং দেখেই হয়তো পাল্টা আক্রমণের পথ ধরেছিলেন চার নম্বরে নামা মোহাম্মদ মিঠুন। চারটি চারের মারে দ্রুতই করে ফেলেছিলেন ১৮ রান। কিন্তু অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষী হয়ে বড় শট খেলার প্রয়াসে তিনি ধরা পড়েন শর্ট মিড উইকেটে দাঁড়ানো মায়াঙ্ক আগারওয়ালের হাতে। মাত্র ৪৪ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।

এরপর থেকে অতি সাবধানী হয়ে খেলতে থাকেন দুই ভায়রাভাই মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুজন মিলে কাটিয়ে দেন প্রথম সেশনের বাকি ৭.৫ ওভার, যোগ করেছেন ১৬ রান।

কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে ফিরেই আলসে শটে স্লিপে দাঁড়ানো রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ তুলে দেন ১৫ রান করা মাহমুদউল্লাহ। তার বিদায়েই উইকেটে আসেন লিটন। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ইতিবাচকভাবে খেলছিলেন লিটন কুমার দাস। দলের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে গড়ে ফেলেছিলেন ৬৩ রানের জুটি। নিজেও পেরিয়েছিলেন ৩০ রানের কোটা।

কিন্তু এরপর হুট করেই বাজেভাবে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে পুরো শট করেননি লিটন। ব্যাট চালিয়েও যেনো থেমে যান তিনি।

যে কারণে বলটি চলে যায় সোজা অশ্বিনের হাতে। সহজ ক্যাচটি তালুবন্দী করতে কোনো সমস্যাই হয়নি ভারতীয় স্পিনারের। আউট হওয়ার দারুণ কিছু শটে ৬ চারের মারে ৩৯ বলে ৩৫ রান করেন লিটন।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৬, ২০১৯)