ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

পাপিয়ার পাপে ক্ষমতার নেতারা ভুলে গেছে মিছিল কন্যা আয়েশার কথা

২০২০ ফেব্রুয়ারি ২৯ ১৪:৩৪:৪২
পাপিয়ার পাপে ক্ষমতার নেতারা ভুলে গেছে মিছিল কন্যা আয়েশার কথা

মানিক বৈরাগী


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আজ সারাদিন পুলিশের হাতে সম্ভ্রম হারা একজন মায়ের ছবি ভাসছে। পড়ে দেখি চোখ অশ্রুসিক্ত ও রক্তাক্ত। এই ছবির বিনিময়ে কিন্তু আজকের সরকার ক্ষমতায়। প্রিয় পাঠক আপনারা বিরক্ত হবেন এই কাটকোট্টা লেখায়। এটাই সত্য এটাই নিয়তি এটাই বর্তমান আওয়ামী বাস্তবতা।

আওয়ামীলীগ সরকার দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতায় থাকার কারনে সরকারের আমলা থেকে শুরু জেলা পর্যায়ের নেতাদের ক্ষমতার চর্বি এতোই বেড়েছে হাতি যেমন তার দেহ কে দেখতে পায় ছোট চোখ ও বড় কানের কারনে, ঠিক একি ভাবে আওয়ামীলীগের নেতাদের চোখের ব্রুতেও চর্বি জমেছে।আর এই চর্বি কমানোর জন্য মন্ত্রী এমপি আমলাদের পাপিয়া বাইজির সাথে ব্যালেডেন্স দিতে হয়।তো এসব নেতাদের পাপিয়ার সঙ্গ দিতে দিতে আশপাশের খোঁজ নেয়ার সময় পায়না।

সময় পাওয়ার তো কথা না কারণ তাদের এখন পাপিয়ার কথাই উঠবস করতে হয়, যদি পাপিয়ার কথায় না চলে ইউটিউব সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে পত্রপত্রিকায় ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়বে তাদের নষ্টামি যৌনামি।তাদের রাজ্যে ভেসে যায় মরে কাঠ হয় আয়েশাদের জীবন। তো যেকথা লিখার জন্য এতো কথা যাদের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আজ আওয়ামীলীগ ও দেশরত্ন ক্ষমতায়, তাদের দিন যায় অর্ধাহারে বিনাচিকিৎসায়। আর পাপিয়ার পাপে মশগুল থাকে মন্ত্রী এমপি আমলা ও নেতা। এমন কি হওয়ার কথা ছিলো মুজিবাদর্শের সৈনিকদের।

আয়েশারা পদ পদবি এমপি কিছুই চায় নি।চেয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ ও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসুক।দেশের মানুষ সুসম সুন্দর কাটুক। তারা শেখ হাসিনার জন্য নিজের সম্ভ্রম দিলো, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলো। তারপর কি দেখছি সম্রাট আয়েশ, র‍্যাবের সাতখুন, বাংলাদেশ ব্যাংকের লকার লুট সহ আরও কতো কি। কিন্তু আয়েশা আপাদের জীবনের পরিবর্তন হয়নি, হয়েছি
অতিতে যা ছিলো তা ও মামলা মোকদ্দমা, চিকিৎসার পেছনে ব্যয় করতে করতে নিঃস্ব হলো। কিন্তু আয়েশারা যাদের সাথে লড়াই করতে গিয়ে পুলিশ যার সম্ভ্রম কেড়েছে তারাও আছে বেশ খোশ মেজাজে, আর যাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে সেই সব নেতা মন্ত্রীরা আছে ক্যাসিনো আর পাপিয়ার জলসা ঘরে কিন্তু আয়েশার ভাগ্য ফেরেনি কেউ ফেরায়ও নি। এমন তো হওয়ার কথা ছিলো না বঙ্গ কন্যার সরকার ব্যবস্থা পনায়।

আমি যখন আয়েশা আপা কে নিয়ে লিখছি বিছানায় শুয়ে শুয়ে তখন আমার মেরুদণ্ড বলছে আবার সোজা হয়ে দাঁড়া, হাত পা নাড়া মিছিলের জন্য খাঁড়া। যখনি ব্যথা ভুলে দাঁড়াতে গেলাম দেয়ালে ঝুলে থাকা পিতা মুজিবের ছবি তাঁর কন্যার ছবি।আমি কান্নায় ধপাস করে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লাম। "আমি চিৎকার করে কাঁদতে চেয়েও কাঁদতে পারিনি"।

আমার বুবু যাকেই বিশ্বাস করে নৌকা ও নেতৃত্ব তোলে দেন সেই হয় মীর জাফর খন্দকার মুস্তাক।
কিন্তু রাজনীতি বিজ্ঞান বলে রাজনীতি বিশ্বাস অবিশ্বাসের নয়। এটা নিয়মিত চর্চা পরিচর্যার বিষয়।
এটা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরিচালানা, পরিবর্তন, পরিচর্চা ও পরিবর্ধনের বিষয়। রাজনীতি নিয়মিত তথ্য আদান প্রদানের বিষয়। কিন্তু তার কোনটাই কি এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে তথ্যপ্রযুক্তির বাংলাদেশে আদৌকি আমাদের সরকার ও সরকারি দল এসব নিয়ে ভাবে করে? কিন্তু বক্তব্যের মঞ্চে কর্মীদের জন্য ভুবন ভোলানো গল্পের মতো করে তৃণমূল কর্মীদের সেই বর্গীর গল্প শুনিয়ে বক্তব্য করে চামচা ও লাইট্যালদের হাততালি নিয়ে মঞ্চ থেকে বেনসন এন্ড হেজেজে সুখ টান দিচ্ছি।পরবর্তী বক্তা কি বক্তব্য দিলো সেই দিকে কান দেয়ার ফুরসত কই চামচাদের বাহবা শুনতে শুনতে পরবর্তী বক্তার বক্তব্য ও শেষের পথে।

আজকে আয়েশার জন্য লিখতে হচ্ছে এ লজ্জা কিন্তু সরকার ব্যবস্থাপনার, সরকারি দলের। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের টাকা কিন্তু আহমদ শরিফের পকেটে যায়, কত নায়ক নায়িকার বিনোদন বক্সকেনার জন্য যায়, কিন্তু আয়েশারা প্রধানমন্ত্রীর নাগালও পায়না। আয়েশা যদি আওয়ামীলীগ না করে মিছিলে না গিয়ে এসবের পেছনে উপার্জিত অর্থ ব্যায় না করতো তার জীবন তার মতো সুন্দর হতো। এই অসুন্দরের জন্য আমি দায়ি করবো না পিতা মুজিব কে আমি দায়ি করবোনা মুজিব তনয়া শেখ হাসিনা কে।দায়ী ব্যবস্থাপনা দায়ি বুবুর দায়িত্ব পাওয়া মোনাফেক নেতা, এমপি মন্ত্রী চেয়ারম্যান সব।

প্রশ্ন হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলও কি কোন সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে? যারা এটা নিয়ন্ত্রণ করে তারা কতোটুকু সৎ ও বিশ্বস্ত?না-কি ওখানে ও কমিশন সিস্টেম?

আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের রাজপথের নেত্রী আয়েশা আপার মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। টাকার অভাবে ওষুধ খেতে পারছেনা। আমি আশা করবো এ লেখা প্রকাশিত হওয়ার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আয়েশার জন্য মিসকিন মার্কা ভিক্ষা দিবে না, আমাকে যেমন দিয়েছিলো, যা আমি চাইনি, আয়েশার চিকিৎসা ও পরবর্তী জীবন পরিচালনার জন্য কর্মক্ষম করে পুনর্বাসন করা হবে।

পরিশেষে বলতে চাই আমাদের মমতাময়ী নেত্রী সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এখবর পাওয়ার পরপরই নিজের তত্ত্বাবধানে আয়েশার চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবেন।
না হয় পাপিয়ারা বিজয়ী হবে পরাজয় হবে মুজিবাদর্শের লড়াকু সৈনিকের। তাই আপা আপনার সিদ্ধান্তে দয়া ও দোয়ায় আয়েশা পাবে নতুন জীবন, পাপিয়া পাক কঠোর শাস্তি।

লেখক : কবি ও নব্বইয়ের নির্যাতিত প্রগতিশীল ছাত্রনেতা, কক্সবাজার।