ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » মিডিয়া » বিস্তারিত

সম্প্রচারমাধ্যমকর্মীরা চাকরিগত সুরক্ষার আওতায় আসবেন : তথ্যমন্ত্রী

২০২০ মার্চ ০৬ ১৭:২১:২৭
সম্প্রচারমাধ্যমকর্মীরা চাকরিগত সুরক্ষার আওতায় আসবেন : তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গণমাধ্যমকর্মী আইনের মাধ্যমে দেশের সম্প্রচারমাধ্যমকর্মীরা চাকরিগত সুরক্ষার আওতায় আসবেন এবং সম্প্রচার আইনের মাধ্যমে সম্প্রচারমাধ্যমের সুরক্ষার জন্যও সরকারের পদক্ষেপগুলো সুফল বয়ে আনবে।

শুক্রবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) দ্বিতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী এসময় এদেশের সাংবাদিকদের মেধা ও আন্তরিকতার প্রশংসা করেন।

ড. হাসান মাহমুদ বলেন, ‘সম্প্রচারমাধ্যমের পেশার সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন, অবশ্যই তাদের চাকরির সুরক্ষা প্রয়োজন। আমরা চেষ্টা করব খুব শিগগিরই গণমাধ্যমকর্মী আইন মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য এবং আগামী সংসদ অধিবেশনে এটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। গণমাধ্যমকর্মী আইন যখন চূড়ান্ত হবে তখন গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির আইনগত সুরক্ষা দেয়া সম্ভব হবে। এই ক্ষেত্রে আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই।’

সম্প্রচার আইন নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রচার আইন দেড় বছর আগে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিলো। সম্প্রতি আইন মন্ত্রণালয় এটির ভেটিংয়ের কাজ শুরু করেছে। আমরা আশা করছি দ্রুত ভেটিং হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছে যাবে। আপনারা জানেন সম্প্রচার নীতিমালা রয়েছে, এটি আইনে পরিণত হবে।’

একইসাথে গণমাধ্যমের মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির সুরক্ষার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের মালিকপক্ষকে অনেক বেশি তৎপর হতে হবে। ১০ বছর ধরে চাকরি করছেন, হঠাৎ সে জানালো তার চাকরি নেই। এটি গণতন্ত্রের পরিপন্থী, মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এটি কোনোভাবে কাম্য নয়। আইন দুটো পাস হলে এমনটি করা সম্ভব হবে না। আমি আশা করব এই ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে।’

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই দেশে বেসরকারিখাতে টেলিভিশন-বেতারসহ সম্প্রচার জগতের যাত্রা শুরু হয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘গত একযুগে এইখাতে ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। কিন্তু এটির পাশাপাশি সম্প্রচারের ক্ষেত্রে যে শৃঙ্খলা দরকার ছিল, বিশেষ করে টেলিভিশন সম্প্রচারের ক্ষেত্রে যে শৃঙ্খলা ও ডিজিটালাইজেশন প্রয়োজন ছিল, সেটি হয়নি।’

দেশি সম্প্রচারমাধ্যমের বিকাশের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন উদ্যোগ এবং তার সুফল তুলে ধরে ড. হাছান মাহমুদ জানান, আগে দেশের পণ্যের বিজ্ঞাপনগুলো বিদেশে চলে যেত, আমরা সেটি বন্ধ করেছি। এখন অন্তত বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন বিদেশি চ্যানেলে প্রচার হয় না। একটি দু’টির বিজ্ঞাপন প্রচার হয়, কিন্তু তারা সে দেশে নিবন্ধিত। আইনানুসারে কোনো ধরনের বিজ্ঞাপনই বিদেশি চ্যানেল প্রচার করতে পারে না। আমরা এটির কড়াকড়ি আরোপের চেষ্টা করেছি। ক্যাবল অপারেটিং ডিজিটাল হলে এটি রোধ সম্ভব হবে। আমরা এক্ষত্রে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়ে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে চাই।'

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা যারা অভিনয় করেন তারা অনেক স্মার্ট। কিন্তু আমরা দেখতে পাই, বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন বিদেশ থেকে দ্বিতীয় মানের শিল্পী দিয়ে তৈরি করে আনেন। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে যে কেউ বিদেশি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দিয়ে বিজ্ঞাপন বানিয়ে আনতে পারেন। কিন্তু অনেক বেশি ট্যাক্স দিতে হবে। শুধুমাত্র যিনি বিজ্ঞাপন চিত্রে অভিনয় করবেন তাকে নয়, যিনি বিজ্ঞাপন বানাবেন তাকেও ট্যাক্স দিতে হবে। যিনি প্রদর্শন করবেন তাকেও ট্যাক্স দিতে হবে। আমি এনবিআরের সঙ্গে কথা বলেছি, অর্থমন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়েছি। এটি হলে আমাদের দেশের কলাকুশলী ও শিল্পের সুরক্ষা হবে। একটি বাচ্চা ছেলের বিজ্ঞাপনও কি বিদেশ থেকে বানিয়ে আনতে হয়? এ ক্ষেত্রে আমরা কড়াকড়ি করতে যাচ্ছি। দেশের শিল্পকে সুরক্ষা দিতে এটি করতে যাচ্ছি।’

সম্মেলনের ‘নীতি সংলাপ- কর্মী সুরক্ষা’ শীর্ষক সূচনাপর্বে বিজেসির সভাপতি রেজওয়ানুল হক রাজার সভাপতিত্বে ও সদস্য-সচিব শাকিল আহমেদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, ঢাকায় নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেল ও বিজেসির উপদেষ্টা একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু।

(ওএস/এসপি/মার্চ ০৬, ২০২০)