ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

করোনাভাইরাস সাম্রাজ্যবাদী সম্প্রসারণবাদী অর্থনৈতিক জীবানু যুদ্ধের হাতিয়ার, বাংলাদেশ তার বাইরে নয়

২০২০ মার্চ ১৮ ১৩:৫৭:০৯
করোনাভাইরাস সাম্রাজ্যবাদী সম্প্রসারণবাদী অর্থনৈতিক জীবানু যুদ্ধের হাতিয়ার, বাংলাদেশ তার বাইরে নয়

মানিক বৈরাগী


মার্কিন -চায়না সম্প্রসারণবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বাণিজ্য দখলের লক্ষ্যে বর্তমান জীবানু যুদ্ধের কারণে বিশ্ব এখন অস্থির। এই অস্থিরতার নাম করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বে ব্যবসা বাণিজ্য, মানুষের নিত্যনৈমিত্তিক জীবন আজ হুমকির মুখে।

বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও দুই রাষ্ট্রের পরস্পরের দোষারোপে এটাই প্রমাণিত হয় অপরের জন্য গর্তখুড়ে নিজেও একি গর্তে পতিত।তাদের ব্যবসা ও পুজির যুদ্ধে নিজেদের আধিপত্য বজায় বিস্তারের খেসারত আজ গোটা বিশ্বের জনগণকে দিতে হচ্ছে। এর বাইরে আমাদের প্রাণের বাংলাদেশও নিরাপদ নয়।

করোনা ভাইরাস আক্রমণের সময় থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের সরকার জনগণ, রাজনৈতিক দল ও ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর প্রপাগাণ্ডা নিয়ে কি রকম দেখা যাক।

স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করছে না কেন সরকার, আমার সন্তানের দায় কি সরকার নিবে?প্রয়োজনে আমার সন্তান কে এক বছর পড়াবো না।

এ হলো কঠিন সচেতন অবিভাবকদের করোনা সম্পর্কিত কথা বার্তা। যখন স্কুল বন্ধ হলো চলো স্কুল বন্ধ পাইছি ছেলেমেয়ে নিয়ে ঘুরে আসি।

বিদেশ ফেরত যারা আছে তাদের ব্যাপারে সরকারের যথাযথ কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।তাদের দেশে ঢুকতে দেয়া যাবেনা,এ হলো একপ্রকার স্বাস্থ্য সচেতন কতিপয় নাগরিকের আলোচনা ও উৎকন্ঠা।

বিমানবন্দরে বিদেশ ফেরতদের করোনা পরিক্ষার ব্যবস্থা করা হলো নাগরিকদের দাবি অনুযায়ী। কিন্তু বিদেশ থেকে আগতরা পরিক্ষা করাবেনা, তোরা ক্যাটা এ জাতিয় ভাব।

অস্বীকার করছি না বিমানবন্দরে ব্যবস্থাপনা কর্মীদের আচার আচরণ ইনশাআল্লাহ বিশ্ব নন্দিত!! এসব কর্তা ও কর্মীদের কাছে দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও অবশ্য মাঝে মাঝে অনিরাপদ হয়ে পড়ে।এ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়েছে,নিজেও ক'কলম লিখেছি।সভ্য দেশ গুলো থেকে আসা আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা বাংলাদেশে পা রাখার সাথে সাথেই অনেকেই নিয়ম কানুনের ধার ধারেনা, নিজ চোখে দেখা।

জীবনের দীর্ঘসময় বিদেশে প্রজা হিসাবে কাটানো বিদেশ মন্ত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার করুণায় মন্ত্রী হয়ে নিজেকে যখন ভাইসরয় মনে করতে থাকেন তখন কয়েকজন রেমিটেন্স যোদ্ধার অসদাচরণের কারণে সবাই কে নেতিবাচক অর্থে "নবাবজাদা " বলতে পারেন না। কারণ আপনি যেহেতু নবাব নয়। তো এ বক্তব্যের কারণে আমরা সবাই তার নিন্দে করছি।

আমার সেই সব রেমিট্যান্স যোদ্ধারা বর্তমানে "পর্যবেক্ষণ বিশ্রামাগারে" (কোয়া রেন্টেইন)এ না থেকে পালিয়ে গিয়ে ইচ্ছে মতো যদি ঘুরাঘুরি, বউ পোলা নিয়ে নাচানাচি করেন তখন যদি আপনি দেশ জাতি পরিবার পরিজনের ঘাতক হিসেবে এসেছেন দেশে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক মুসলিম হওয়াতে ইসলাম ফোবিয়া তো আছেই।তো এদেশে মানুষের নিত্যনৈমিত্তিক আলেম ওলামাদের দারস্থ হতে হয়।তাই এই সুযোগ টা কে অপব্যবহার করে আসছে একশ্রেণির আলেম ওলামাগণ।এই একশ্রেণির রাজনৈতিক আলেম গণ ৫২,৬২,৬৯,৭০সর্বোপরি মহান মুক্তিযুদ্ধেও তারা প্রবিত্র ধর্ম ইসলাম ও প্রবিত্র কোরান কে অপরাধের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে। ইউটিউব, ফেইসবুক খোল্লেই দেখা ও শুনা যায় তারা প্রত্যেকেই এক একজন করোনা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারে পরিনত হয়েছে। এদের ওয়াজ পানি পড়া দোয়ায় বিশ্বাসী হয়ে কোন আক্রান্ত ব্যক্তি চিকিৎসা না ঘরে বসে সবাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় কোন রোগী যদি মৃত্যু বরণ করে তার দায়িত্ব এ সব মোল্লারা কি বহন করবে?

আর একশ্রেণির নবী, ইসলাম, কোরান প্রেমি মুজাহিদ আছে ইহুদি নাসারাদের আবিষ্কৃত ফেইসবুক, ইউটিউব ব্যবহার করে আল্লাহ রাসুলের নামে মিথ্যা তথ্য, বানোয়াট গুজবের ভিডিও, বানানো ছবি প্রকাশ প্রচার করছে যা আদৌও সত্যনয় তা প্রচার করে তারা কি ইসলাম কায়েম করে ফেল্লো?আর এসব গুজব যদি কোন ইমানদার মুমিন মুসলিম বিশ্বাস করে বিপদগ্রস্ত হয় এবং পরে যখন সে বুঝতে পারে সে ইসলামের নামে প্রতারণার শিকার হয়েছেন।ফলে তাঁর মনে আপনাদের সম্পর্কে কি ধারণা হতে পারে একবার খেয়াল করুন।

এসব ভিডিও চিত্র ও ছবি ভিন্ন ধর্মাবলম্বী দেখে বুঝে যে এসব তো ভুয়া, এই ভুয়া ভিডিও,ভুয়া খবর ও ছবি দেখার পর তারা আপনার নবী, রাসুল,কোরান ও ইসলাম সম্পর্কে কি বিরূপ মন্তব্য করতে পারে একবার খেয়াল করুন।
বিভিন্ন ওয়াজ ব্যবসায়ী আলেম তাদের ওয়াজে অন্যধর্ম সম্পর্কে অসত্য ও কুরুচিপূর্ণ ওয়াজ করেন,বিষোদগার করেন, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ান এর ফলে তারা কি হেদায়েত প্রাপ্ত হবে বলে মনে করেন?

ইহুদি নাসারাদের দেশে যখন আপনাদের মতো কোন ব্যক্তি বা আপনাদের মতো কুরুচিপূর্ণ সাম্প্রদায়িক আচরণ করে তখন আপনারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন, কল্লা চান।কিন্তু নিজে যখন করেন তখন ওসবে প্রতি আর খেয়াল করেন না। নিজ ধর্ম সম্পর্কে তাদের সার্টিফিকেট আপনারা আবার ফলাও করে প্রচার করে রাজনীতি করেন।

এ যদি হয় আমার বাংলাদেশের নাগরিক আচরণ এখানে তো ফেরেস্তার হাতে ক্ষমতা ও ব্যবস্থাপনা তুলে দিলে তারাও ব্যর্থ হবে আমার বিশ্বাস।করোনা ভাইরাস উৎপাদক হলো দুই পুজির সম্প্রসারণবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসী মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র ও চায়নার অর্থনৈতিক দ্বন্দ্বের কুফল। ভাইরাস টির সাথে কোন ধর্মের বাণীর সাথে সম্পর্কিত নয়।
এটা মুলত আগ্রাসী রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অনৈতিক যুদ্ধের অভিসাপ।

করোনা ভাইরাস এটাই একবিংশ শতাব্দীতে এসে এটাই প্রমাণ করেছে যে সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রের কাছে তার নিজের জনগণও নিরাপদ নয়। এমনকি সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রের রাষ্ট্র পতি ও তার পরিচালকেরাও তাদের অপরাধের কাছে অনিরাপদ। ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বেরিয়ে আসছে।

সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসী জীবাণু যুদ্ধ থেকে পরিত্রাণ পেতে নিজদেশে নিজেরাই সচেতন হই। বিশ্বের সংকটময় মুহুর্তে নিজ দেশে সাম্রাজ্যবাদীদের স্বার্থ রক্ষাহয় এমন অপ-রাজনীতি বাদ দি।আসুন যার যার ধর্ম তার তার ইবাদত প্রার্থনায় সীমাবদ্ধ রেখে মানবজাতির মঙ্গল কামনা করি।

লেখক : কবি ও নব্বইয়ের নির্যাতিত প্রগতিশীল ছাত্রনেতা, কক্সবাজার।