ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় আলেম ওলামাগণের ভূমিকা অপরিহার্য

২০২০ মার্চ ২৩ ২৩:৫৫:২২
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় আলেম ওলামাগণের ভূমিকা অপরিহার্য

মানিক বৈরাগী


বিশ্ব আজ ঘোর অমানিশার অন্ধকারে নিমজ্জিত। এই নিমজ্জন থেকে রেহাই পাচ্ছেনা কে কোন ধর্মের অনুসারী। কোভিড১৯ করোনা ভাইরাস থেকে রেহাই পাচ্ছেনা আমাদের এই প্রিয় বাংলাদেশ। তাই আমার আজকের এ লেখা টি আমার পরম শ্রদ্ধেয় আলেম ওলামা হুজুর বুজুর্গানে দ্বিনের করকমলে।

তাঁদের কলব মোবারকের প্রতি। পরম শ্রদ্ধেয় আলেমেদ্বিন গণ আপনারা আমাদের পেয়ারা নবী আমাদের আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সঃ)এর অন্যতম প্রতিনিধি। মানবজাতি ও মহান ইসলামের খেদমতগার ও রক্ষক।

আল্লাহ পাক রাব্বুল ইজ্জত আলেমুল গায়েব পেয়ারা নবী হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সঃ)কে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন মানবজাতির ইহকাল ও পরকালের মঙ্গলের জন্য।আর আপনারা হলেন সেই নবীর খেদমতগার ও নেতা।

ইসলাম ও কোরান সমগ্র মানবজাতির জন্য মহান বার্তা ও পথপ্রদর্শক। আল্লাহ শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলো মানুষ। আর এই মানুষ কে আল্লাহ পাক পরম আদর মমতা ভালোবাসা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। মানবজাতিকে আল্লাহ পাক এ জন্য সৃষ্টির সেরা জীব বলে ঘোষণা করেছেন।

আবার এই মানবজাতির কল্যানের জন্য পথপ্রদর্শক হিসাবে নবী রাসুল প্রেরণ করেছেন। এর মধ্যে পেয়ারা নবী হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সঃ)সর্বশেষ নবী। তিনি শুধু মুসলমানের নবী নন সমগ্র মানবজাতির ত্রাণকর্তা। হক্ল আজ ১৪শ হিজরি পর আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি চরম বিপদে। মৃত্যুর মুখোমুখি, অদেখা ঘাতক আমাদের।

এই অদেখা ঘাতকের নাম করোনা। আল্লাহর অশেষ নেয়ামত আলো বাতাস পানি খাদ্যে গ্রহণে আল্লাহ যেমন কাউকে বাধা দেয়নি আবার এই গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বাধাও পড়ছে না।ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আল্লাহর এই নেয়ামত তাদের চাহিদা অনুযায়ী বাতাস থেকে অক্সিজেন নিচ্ছে আর কার্বনডাইঅক্সাইড ছাড়ছে। একিভাবে আল্লাহ অন্যতম নেয়ামত সূর্য থেকে মানুষ শক্তি সঞ্চয় করছে পাশাপাশি সূর্যের আলো তাপ সময় মেপে মুমিন মুসলমান নামাজ পড়ছে। আবার অন্য ধর্মাবলম্বীরাও তাদের প্রাত্যহিক কাজের পাশাপাশি তারাও তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে।

এই সংকট মোকাবেলা করার জন্য মানবতার নবী,প্রেমের নবী মানবজাতির ত্রাণকর্তার নবীর উম্মত হিসাবে মুসলিম আলেম ওলামাগণ কে সর্বাধুনিক চিন্তা ও কর্মের অগ্রসেনা হিসাবে এগিয়ে আসা উম্মতে রাসুল হিসাবে আল্লাহ পাক রাহমানুর রাহিম আপনাদের দেখতে চায়।

বিশ্ব মানবজাতি যখন করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত এই সংকট মোকাবেলা ও নিজের ইমান আমল ঠিক রেখে এবাদত বন্দেগী করতেও নবীজী বিধিবিধান রেখেছেন। এই বিধিবিধান এ যদি সমাধান পাওয়া না যায় তখন ইজমা কিয়াসের কথা বলেছেন। তো ১৪শ হিজরি গত হওয়ার পর নবীজী শংকা সংশয়ও প্রকাশ করেছেন।

আজ করোনা ভাইরাস শুধু ভিন্নধর্মী রাষ্টের বা অন্যান্য নবী পয়গাম্বরের উম্মত আক্রান্ত হচ্ছে না একিভাবে নবীজীর উম্মতও আক্রান্ত হচ্ছে।ইতিমধ্যে মুসলিম জাহানের তীর্থভূমি মক্কা মদিনাও রেহায় পায়নি।সেখানে তারা আপদকালীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবাদত বন্দগী কিভাবে করবে। নিশ্চয়ই তারা আমাদের থেকে অনেক বেশি অগ্রগামী।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশে মিরপুরে যে মুমিন মুসলমান পরহেজগার মুসল্লী প্রয়াত হয়েছেন তিনি ঘর ও মসজিদ ছাড়া আর কোথাও যেতোনা এই মর্মে তাঁর সন্তানদের বরাত দিয়ে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে।

আমি মসজিদে নামাজ না পড়ার কথা বলছি না।কথা হলো মানুষের জীবনের কথা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজির কথা ভেবে মুসল্লিরা আপদকালীন সময়ে বাসায় নামাজ পড়বে। এ সম্পর্কে আমার কয়েকটি প্রস্তাবনা ভেবে দেখতে পারেন।

১--বাসা-বাড়িতেই নামাজ পড়ুক,পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ ওয়াজিব সুন্নাত নফল নামাজ আদায় করুক।
পাশাপাশি অবশিষ্ট সময় কোরান তেলোয়াত করুক।

২-যাঁরা বাংলা পড়তে জানে অন্তত নিজের ভাষায় আল্লাহর অশেষ নেয়ামত ও বিধিবিধান প্রবিত্র কোরান শরিফ বাংলায় পড়ুক।আমার মতে এতে সোয়াব আরও বেশি হবে। যুক্তি হচ্ছে তিনি তাঁর ভাষায় কোরান কে বুঝলো।

৩-অন্যান্য নফল নামাজ ও কাজা নামাজ আদায় করুক।

৪--বেশি বেশি নফল নামাজ পড়ুক।

৫-তসবি তালিল করুক

৬- বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থ ও অন্যান্য ইসলামি বই পড়ে ইসলামি জ্ঞান আহরণ করুক। জ্ঞান আহরণ করাও সুন্নত বলে আমার পারিবারিক ভাবে জানা।

৭-ইমাম ও মুয়াজ্জিন মাক্স ও গ্লাবস পড়ে মসজিদে আসবেন এরপর অজু করে ওয়াক্তি আজান ও নামাজ আদায় করে দ্রুত বাসায় ফিরে যাবেন।

৮-খতিব ইমাম ও মুয়াজ্জিন তাহারা আল্লাহর কাছে মোনাজাত করবেন বাসা-বাড়িতেই যাতে এই মানবজাতি কে করোনা মহামারী থেকে উদ্ধার করে।

৯- ঘরে সবাই মিলে জামাতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করুন।এ ঘরে কতোদিন জামাতের সাথে পরিবার শুদ্ধ নামাজ পড়েনা।আসুন ঘরই হোক মসজিদ।

১০-নামাজের সময় ঘরেই আজান দেয়ার সুযোগ আছে। ঘর হোক আজান।

প্রিয় মুমিন মুসলিম ভাই ও বোন আমার মুরব্বি মুরব্বিয়ান আসুন বাসাবাড়ি থেকে আল্লাহ কে ডাকি ও গোনা মাফ চাই।রাষ্ট্রে ও জনগণের কল্যান কামনায় বেশি বেশি নফল নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করি।

আমার পরম শ্রদ্ধেয় আলেমিদ্বিন মুরিব্বি হুজুর গণ আল্লাহর ওয়াস্তে আপনারা বাংলার মুমিন মুসলিম সহ আল্লাহর সৃষ্টির সেরা মানবজাতি কে রক্ষার্থে একটু সজাগ হোন।রাষ্ট্রের আইন মেনে চলুন।বিশ্বের সমগ্র মুসলিম অধ্যুষিত সকল রাষ্ট্র করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় মসজিদ আপদকালীন সময়ের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন।

প্রিয় শ্রদ্ধেয় হুজুর গণ মুসলমানই যদি না বাঁচে আল্লাহকেইবা কে ডাকবে বলুন।মুসল্লিই যদি না থাকে আপনি আপনারা নামাজই কাদের নিয়ে পড়বেন এবং পড়াবেন। আসুন আল্লাহ রাসুলের ইবাদত যাতে দুনিয়াতে জারি থাকে তার নিরিখে ওয়াজ মাহফিল আপাতত বন্ধ রাখি।নামাজ কালাম ঘরে বসেই করি।আল্লাহ দুনিয়ার সকল মানবজাতি কে হেয়াদায়ত করুক। আমিন।

লেখক :কবি ও নব্বইয়ের নির্যাতিত প্রগতিশীল ছাত্রনেতা, কক্সবাজার।