ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

কিউবা থেকে কেরালা : করোনা মোকাবিলায় চমক দেখালো কমিউনিস্টরা!

২০২০ এপ্রিল ২৪ ২২:৪২:৪২
কিউবা থেকে কেরালা : করোনা মোকাবিলায় চমক দেখালো কমিউনিস্টরা!

আবদুল্লাহ মাহফুজ অভি


পুরো বিশ্ব যখন করোনাভাইরাসের আক্রমণে বিধ্বস্ত ঠিক তখন বিশ্বের দুই প্রান্তের দুই ভূখণ্ড ভিন্ন বাস্তবতার মুখোমুখি থেকেও করোনা মোকাবিলায় দারুণ ভূমিকা রেখে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সমাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় পরিচালিত কিউবা এবং ভারতের রাজ্য কেরালা করোনা মোকাবিলায় তাদের পদক্ষেপের জন্য বিশ্ব জুড়েই সমাদৃত হচ্ছেন।

দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, নিয়ন্ত্রণ ও সংকটকালীন মানবিক সব উদ্যোগ গ্রহণ করে করোনা নিয়ন্ত্রণসহ সৃষ্ট বিভিন্ন সামাজিক সংকটও মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে এখন পর্যন্ত। বিশ্বের আরো কয়েকটি দেশ এবং অঞ্চল করোনা মোকাবিলায় দারুণ সাফল্য দেখালেও কমিউনিস্ট শাসিত এই দুইটি অঞ্চলকে ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ রয়েছে তাদের স্ব স্ব বাস্তবতার কারণেই। প্রতিকূল পরিবেশকে মোকাবিলার করেই করোনার বিরুদ্ধে দাপটের সাথে লড়াই করছেন তারা। যা সীমিত সামর্থের দেশগুলোর জন্য যেমন উদাহরণ তেমনি অনেক সামর্থবান দেশের জন্যও উদাহরণ হতে পারে।

বিপ্লবের মধ্যে স্বাধীন হওয়া সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কিউবাকে অর্থনীতিসহ নানাভাবে পঙ্গু করে রাখার চেষ্টা করেছেন মার্কিন সরকার। দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে কিউবা। এই বাস্তবতাকে মোকাবিলা করেই কিউবা তার লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছে মর্যাদার সাথেই। এই করোনা পরিস্থিতিতে যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশে ভঙ্গুর চিকিৎসা ব্যবস্থার কঙ্কাল বেরিয়ে আসছে, অনেক জায়গাতেই ভেঙে পরেছে চিকিৎসা ব্যবস্থা, হিমশিম খাচ্ছে তথাকথিত উন্নত রাষ্ট্রগুলো, সেখানে কিউবা শুধু নিজেদের নাগরিকদের চিকিৎসা সেবায়ই নিশ্চিত করেনি, দেশে দেশে পাঠাচ্ছে তাদের স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসকদলকে।

অন্যদিকে ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কেরালার রাজ্য শাসন করছে বামফ্রন্ট। যাদের কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্বে আছেন বিজেপির মতো ধর্মীয় রক্ষণশীল রাজনৈতিক ধারায় পরিচালিত দল। ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে এবং কেন্দ্রের শাসন ব্যবস্থার চেয়ে কেরালার শাসন ব্যবস্থা ও সামাজিক পরিবেশ অনেকটা পার্থক্য রয়েছে। সমাজতান্ত্রিক ধারায় রাজ্য শাসিত কেরালার চিকিৎসা ও শিক্ষাখাত সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপায়। রাজ্য শাসন ব্যবস্থাতেও নানা মানবিক উদ্যোগ রয়েছে। কেরালার বামফ্রন্ট সরকার করোনা মোকাবিলায় দেখিয়েছেন চমকিৎ সাফল্য। তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর জন্য ভারতের অন্যসব রাজ্য থেকে যোগাযোগ করা হলে কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে.কে. শৈলাজ তাদের কর্মপদ্ধতি তুলে ধরার পাশাপাশি এটাও মনে করিয়ে দেন, ‘রাতারাতি কেরালার মতো ব্যবস্থাপনা অন্য রাজ্যে গড়ে তোলা কঠিন।’

কিউবা :

করোনা মোকাবিলায় কিউবা যেসব পরিকল্পনা নিয়েছে তা তারা কার্যকরভাবে পালন করতে পারছে। আগেই উল্লেখ করেছি কিউবার স্বাস্থ্যখাত হচ্ছে জনস্বাস্থ্যমুখী। তারা নাগরিকদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা। কোন শ্রেণিভেদ নয়, সব নাগরিকই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে থাকে তার প্রয়োজন অনুযায়ী। করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রেও কিউবা তাদের সেই ব্যবস্থা ধরে রেখেছে। করোনা সংকটকাল চলছে তাই বলে রোগীদের চিকিৎসার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াতে হয়না। স্বাস্থ্যকর্মীরাই তাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

দেশটির প্রতিবেশি আমেরিকা যখন করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে হাজার হাজার মৃত্যু আর লাখ লাখ আক্রান্তের সংখ্যা গুনে চলছেন এবং উদ্ভটসব কথা বলে যাচ্ছেন সরকার, কিউবান সরকার তখন করোনা পরিস্থিতি নিজেরা মোকাবিলা করার পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সহায়তার জন্য পাঠাচ্ছেন তাদের স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসকদল। ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কিউবায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিলো ১০৮৭ জন এবং মারা গেছে ৩৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৮৭ জন। পরীক্ষা ছাড়াই ‘করোনা উপসর্গ’ নিয়ে মারা যাচ্ছে এমন কোনো চিত্র এখানে পাওয়া যাচ্ছে না কারণ রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে সেচ্ছাসেবীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যজরিপ চালিয়ে যাচ্ছে। কাউকে করোনা আক্রান্ত কিংবা এমন উপসর্গ আছে মনে হলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য রোগীরা যেন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকটিও তারা বেশ দক্ষতার সাথেই নজর রেখেছেন। নাগরিকদের নিয়মিত স্বাস্থ্যতথ্যও সংগ্রহে আছে। এটা সম্ভব হয়েছে তাদের জনস্বাস্থ্যমুখী স্বাস্থ্যব্যবস্থার কল্যাণেই।

করোনা মোকাবিলায় কিউবা যে শুধু মৌখিক প্রস্তুতি নেয়নি তা বোঝা যায় রাষ্ট্রের বক্তব্য এবং কাজের মিলের মধ্যদিয়ে। জানুয়ারি মাস থেকেই তারা প্রস্তুতি গ্রহণ করে। জানুয়ারি মাসে কিউবা করোনা মোকাবিলায় ‘প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ’ নামে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এই পরিকল্পনার ভেতর ছিলো চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া, করোনা আক্রান্তদের কিভাবে চিকিৎসা দেয়া হবে কোথায় চিকিৎসা হবে সেসব ব্যবস্থা প্রস্তুত করা, কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা প্রস্তুত করা এবং পর্যটন কর্মীসহ জনগণের মাঝে করোনার লক্ষণ কী ও এই বিষয়ক সর্তকতা তৈরি করা।

১১ মার্চ কিউবাতে প্রথম ৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর পরপরই দ্রুত তাদের সানিধ্যে আসা লোকজনকে শনাক্ত করা হয় এবং পরীক্ষা করা হয়। এরপর কিউবার বিপুল পরিমাণ মেডিকেল শিক্ষার্থীদের দিয়ে তৈরি করা হয় জরিপ দল। এই জরিপে নেমে শিক্ষার্থীরা মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে তাদের স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করে। কারো ভেতর করোনার লক্ষণ পেলে তাকে পরীক্ষার জন্য স্বাস্থকেন্দ্রে পাঠানো হয়।

২০ মার্চ কিউবা যখন ২১ জন করোনা রোগী শনাক্ত করে তখন তারা পর্যটকদের কিউবা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞাজারী করে। এরপর ঝুঁকিতে থাকা অপেক্ষাকৃত দুর্বল স্বাস্থ্যের মানুষদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেন, বাড়িতে থেকে কাজ করার সুযোগ তৈরি করেন, কর্মীদের সুরোক্ষা ব্যবস্থা ও সামাজিকভাবে সব ধরনের সহায়তা করার ঘোষণা দেয় সরকার।

সমাজতান্ত্রিক কিউবাতে আগে থেকেই রেশনিং ব্যবস্থা আছে চালু আছে প্রতিটি নাগরিকদের জন্য। এই রেশনের আওতায় নাগরিকদের সুষম খাদ্য সরবরাহ করে নাগরিকদের। কিউবা তার নাগরিকদের খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা এবং বাসস্থানের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। ফলে লকডাউন কিংবা অবাধ চলাচলে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও ক্ষুধায় কিংবা বিনা চিকিৎসায় কাউকে মরতে হচ্ছে না। কিংবা ত্রাণের অভাবে বিক্ষোভ, ক্ষুধার কারণে লকডাউন ভেঙে পথে নামতে বাধ্য হওয়ার মতো ঘটনা নেই।

কিউবান সরকার যখন দেখলো শিথিল ব্যবস্থার কারণে ঠিক মতো শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা যাচ্ছে না তখন গণপরিবহণ চলাচলের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করে। অনেক ব্যক্তিগত গাড়ি এবং সরকারি গণপরিবহণ এবং তাদের চালকদের হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার কাজে নিয়োজিত করে। রেশনিং ব্যবস্থা ও জরুরি সেবার ব্যবস্থাগুলোকে বিশেষ নিরাপত্তার ভেতর নিয়ে এসেছেন।

শুধু নিজেদের চিন্তাই নয় বিপ্লবী রাষ্ট্র কিউবা নিজের দেশের জনগণের পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় ল্যাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশ, আফ্রিকা এবং ইতালিতেও পাঠিয়েছে তাদের চিকিৎসক স্বেচ্ছাসেবীদের। এখন পর্যন্ত ১৪টি দেশে কিউবান চিকিৎসকরা করোনা আক্রান্তদের জন্য চিকিৎসা সহায়তা করতে এগিয়ে গেছেন।

কেরালা :

ভারতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় কেরালায়। এই কেরালায় বেশ সতর্কতার সাথে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। ২০ এপ্রিল পর্যন্ত কেরালায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিলো ৪০২ জন। এর ভেতর মারা গেছেন ৩ জন আর সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৭০ জন। আবার একই সাথে নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষেরা যেন ক্ষুধায় কিংবা বিনা চিকিৎসায় না মারা যায় তার জন্যও নিয়েছে দারুণ সব মানবিক উদ্যোগ।

করোনা মোকাববিলায় রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরেই সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে দারুণ ভূমিকা পালন করছে। ব্যাপক হারে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসাদের দ্রুত খুঁজে বের করা, দীর্ঘ সময় কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থার পাশাপাশি হঠাৎ লকডাউনের কারণে আটকে পড়া কয়েক হাজার অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা ও শ্রমিকের কাছে নিয়মিত খাবার পৌঁছানো, নাগরিকদের বিশেষ সুযোগ সুবিধা প্রদান করা, দুই মাসের অগ্রিম পেনশন দেয়া, ফ্রি রেশনিং ব্যবস্থা চালু করাসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে দ্রুত সময়ের ভেতর।

এমনকি কোয়ারেন্টাইনে থাকা নাগরিকদের নিয়মিত মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাদের চাহিদা মতো খাদ্য, গতিশীল ইন্টারনেট সেবাসহ নানা সুযোগ দিচ্ছে যাতে কোয়ারেন্টাইনে থাকা নিয়ে বিশেষ আপত্তি তৈরি না হয়। লকডাউনের ভেতর কৃষকরা যাতে সময় মতো ধান কাটতে পারে এই জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি নায্যমূল্যে সরকার ধানচাল সংগ্রহেরও উদ্যোগ নেন। খাদ্যসংকট মোকাবেলা করতে যুদ্ধকালীন যে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হয় তেমনই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। পরিবহন শ্রমিক ও মজুরদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসুরাক্ষা নীতি গ্রহণ করেছে। প্রত্যেকটি সেক্টর ধরে ধরে কাজ করেছেন কেরালার সরকার।

করোনা রোগী কোথায় আছে তা খুঁজে বের করতে গোয়েন্দা নজরদারি জারি রেখেছেন। এই গোয়েন্দা দলের সদস্য হিসেবে স্বাস্থ্যকর্মীদেরও রাখা হয়। নিয়মিত পরীক্ষায় যাতে স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগেন এই জন্য বিশেষ বিশেষ উদ্যোগও গ্রহণ করেছেন। সরকার প্রথম থেকেই নাগরিকদের সাথে তথ্য দূরত্ব কমিয়ে আনতে সচেষ্ট ছিলো। পুরো পরিস্থিতি নিয়মিত ব্যাখ্যা করাসহ কিভাবে জনদূরত্ব তৈরা করা যায় তার স্পষ্ট রুপরেখাও তারা করে ফেলেন।

আর এসব কিছুই স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মীরা কাজের সমন্বয় করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পেরেছে বলেই আজ ‘কেরালা মডেল’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ভারতের এই ছোট রাজ্যটি।

কিউবা কিংবা কেরালা শুধু করোনার বিস্তারকেই নিয়ন্ত্রণ করেনি, সেই সাথে তারা উদ্ভুত পরিস্থিতিতে মানবিক উদ্যোগও গ্রহণ করতে পেরেছে। আর এই কারণেই তারা উদাহরণ হিসেবে সামনে আসছে বারবার। তাদের সাফল্য তারা মানবেতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে দেয়নি, এসব অঞ্চলে কর্মহীন মানুষদের ক্ষুধায় খাদ্যের জন্য বিক্ষোভ করতে হয়নি। অর্থনৈতিক মন্দা বিশাল চাপ সত্বেও কেরালার কৃষকরা এখনো দুঃশ্চিন্তা গ্রস্থ না। কিউবান কৃষকরা জানে এই সংকটে তাকে রাষ্ট্রের পিছে ছুটতে হবে না রাষ্ট্রই তার কাছে ছুটে আসবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে।

তারা এটা পেরেছে তাদের সমাজতান্ত্রিক পরিচালিত মানবিক রাষ্ট্রকাঠামোর কারণে। যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা সবার আগে। কেরালা তাদের বাজেটের সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে। আর এই বরাদ্দ যে হরিলুট হয়না তা বোঝা গেছে কেরালার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভারতের অন্যান্য জায়গার চেয়ে অনেক উন্নত সাধারণ মানুষের নাগালের ভেতরই।

অন্যদিকে কিউবার স্বাস্থ্যখাত পুরোটাই গণমুখী। এখানে চিকিৎসা সম্পূর্ণ ফ্রি। মানুষের ঘরে ঘরে তারা পৌঁছে দিতে পেরেছে স্বাস্থ্যসেবা। স্বাস্থ্যবাণিজ্যের কোনো সুযোগ এখানে নেই। যার ফলেই বিভিন্ন সংকটে হাজারো প্রতিকূলতার মাঝেও কিউবা স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারছে। একই ধরনের স্বাস্থ্যসেবা এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনা যারা করতে পেরেছে তারাই করোনা পরিস্থিতিতে অনেক উন্নত দেশের চেয়েও ভালো করেছে। কিউবা কেরালার বাইরেও অন্যতম উদাহরণ হতে পারে ভুটান। কিউবার মতো ভুটানও তার নাগরিকদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে। এবং তাদের সীমিত সামর্থের ভেতরও এই করোনা পরিস্থিতিতে সব কিছু নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমর্থ হয়েছে ভারত-চীন সীমান্তবর্তী দেশটি। আরো একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় হলো, ভুটান তার যেসব প্রবাসী নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে এনেছিলো তাদের জন্য খুবই উন্নত মানের কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা গ্রহণ করে। যার ফলে কোয়ারেন্টাইন নিয়েও কোনো আপত্তি ওঠেনি। করোনা প্রতিরোধে তাদের প্রস্তুতিও ছিলো বেশ ভালো।

লেখক : সংবাদকর্মী ও তথ্যচিত্র নির্মাতা।