ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

করোনা সর্বমুখী : বৈচিত্র্যে মানবসমাজ

২০২০ মে ০৪ ১৬:২৭:২৩
করোনা সর্বমুখী : বৈচিত্র্যে মানবসমাজ

রণেশ মৈত্র


কাউকেই ছাড়ছে না করোনা। বৃটেনের রানা বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী, সৌদি আরবের রাজ পরিবার, বিশ্ব মোড়ল আমেরিকা, গণতন্ত্রের সুতিদকাগার ফ্রান্স, শিল্প সভ্যতার খ্যাতিসম্পন্ন ইতালি, একদা পরাক্রমশারী জার্মেনী ইসলামী বিপ্লবের উদগাতা ইরান, মুসলিম অধ্যাষিত মধ্যপ্রাচ্য, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, কমিউনিষ্ট শাসিত চীন-সবাই আজ কম বেশী ঐ বিষাক্ত ভাইরাস আক্রমণের শিকার।

পৃথিবীর সর্বত্র মৃত্যুর মিছিল। মানছে না ইষ্টার, মানছে না হিন্দুদের পবিত্র স্নানোৎসব মানছে না একাদশী-দ্বাদশী-অমাবস্যা-পূর্ণিমা, মানছে না-পবিত্র শবেবরাত, মাহে রমজান বা অন্য কিছু।

ছেলেমেয়েরা লেকাপড়া করবে না, সেখানে বাধা। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আড়াই মাস যাবত বন্ধ। শিক্ষাঙ্গনে নেই ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকার অবিরাম পদচারণা; নেই টি.এস.সিতে নাচ, গান, আলোচনা সভার কোন কলরব, গাড়ী ঘোড়া চলছে না, বাজছে না কোন কর্ম বিদারী হর্ণ।

লাইব্রেরী, পাঠাগার, ক্লাব, রাজনৈতিক দলগুলির অফিস-ঢাকাসহ সারাদেশের নানা খেলার মাঠ, ষ্টেডিয়াম, জনসভা, পথসভা, ছোট বড় সমাবেশ, মানববন্ধন বা এ জাতীয় অন্য কিছু।

চলাফেরার স্বাধীনতা? না-তাও নিয়েছে করোনার বিষাক্ত থাবা। একে তো সকল ধরণের গণ-পরিবহন বন্ধ-অপরদিকে সন্ধ্যা-সকাল ঘর থেকে বেরোনোয় সরকারি নিষেধাজ্ঞা। আর এ নিষেধাজ্ঞা কার্য্যকর করতে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পুলিশ, র‌্যাব, আর্মির তৎপরতা।

আজীবনের অভ্যাস সকাল বেলায় ৫/৭ টা সংবাদপত্র পড়ে দু’তিন ঘন্টা কাটানো। ২৬ মার্চ থেকে সে কাজটি বন্ধ। পাওয়া যায় না মফ:স্বল শহরগুলিতে কোন সংবাদপত্র পরিবহন সমস্যার কারণে। সকাল-সন্ধ্যা বইরে যাওয়া যাবে-তবে অবশ্যই জরুরী কোন কারণ ঘটলে মাস্ক-গ্লাভস পরে এবং অপর কোন মানবদেহের বা পশুদেহের স্পর্শ এড়িয়ে। আবার ফিরে এসেই সাবান-ডেটল দিয়ে হাত-পা ধোয়া, পরিধেয় বস্ত্রাদি ছেড়ে সাবান জলে আধা ঘন্টা চুবিয়ে রেখে কেচে রোদে শুকানো এবং অতি অবশ্যই স্নান করে (তা-ও সহনীয় পর্য্যায়ের গরম জলে) ঘরে ঢোকা।

অত:পর গৃহবন্দী-পুনর্মূষিকোভব। কিন্তু গৃহবন্দীও ভিন্নভাবে। প্রতি ঘরে একজন করে থাকবেন এবং অবশ্যই পরস্পর দুই মিটার দূরত্বে বসে গল্পগুজব, আলাপ-আলোচনা, টি.ভি. দেখা এবং এসব ক্ষেত্রে পরস্পরের নৈকট্য নৈব নৈব চ। স্বামী স্ত্রী ভিন্ন ভিন্ন ঘরে থাকবেন-একমাত্র শিশুরাই মাতৃক্রোড়ে তাও যদি উভয়েই করোনা মুক্ত হন। কিন্তু করোনা মুক্ত হয়েও অন্যরা একত্রে কোন কাজ নয়-আহারাদিও নয়। এ এক অদ্ভুত বিচ্ছিন্নতা। ডাক্তাররা বলেন, রোগটি ছোঁয়াচে-তাই নিয়মটি বাধ্যতামূলক।

সামাজিক জীব মানুষ-মানুষ শিল্পানুরাগীরাও বটে তাই জন্মগতভাবেই মানুষে মানুষে পারস্পারিক নৈকট্যে যুগ যগ ধরে অভ্যস্ত। কিন্তু সামাজিক অনুষ্ঠানাদি বন্ধ। যেমন, বিবাহ বার্ষিকী, জন্মদিন, শ্রাদ্ধ, শবদেহ কবরস্থানে সমাজের লোকেরা মিলে কাঁধে করে নেও, হিন্দু হলে কীর্ত্তন গাইতে গাইতে জনাকয়েক মিলে কাঁধে করে শ্মশানে নিয়ে দাহের ব্যবস্থা করা-না, তাও হবে না যদি শবদেহটি করোনাক্রান্ত মানুষের হয়। করোনাক্রান্ত মানুষের শবদেহটি শেষবারের মত দেখতেও ছুটে আসেন না আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া প্রতিবেশীরা। বরং কর্তৃপক্ষ ছুটে আসেন বাড়ীটিকে বা পাড়াটিকে বা গ্রামটিকে লক-ডাউন ঘোষণা করতে।

আবার বিয়ে-শাদীর মত আনন্দানুষ্ঠানও সে সামাজিক আয়েঅজনেই হোক বা বর-কনের নিজ নিজ ভালবাসার ভিত্তিতেই হোক বন্ধ। ঠিক করোনা যখনই মাস তিনেক আগে ছড়িয়ে পড়তে সুরু করলো-এই অনুষ্ঠান তখন থেকেই বন্ধ হয়ে গেল। ফেসবুকে কয়েকদিন আগে একটি ঘটনা চোখে পড়লো। বরযাত্রীসহ বর গিয়ে পৌঁছেছেন কনের পিত্রালয়ে। বিয়ের নির্ধারিত দিনে। বরযাত্রীরা যেই না গিয়ে কনের বাড়ীতে পৌঁছেছেন অমনি শহরটা লক-ডাউন ঘোষিত হলো। বিয়েটা সম্পন্ন হলো বটে কিন্তু বর যাত্রীরা কনের বাড়ীতে আটকা পড়ে গেলেন।

২২ দিন সকলে থাকার পরে লক-ডাউন প্রত্যাহার করা হয় নি ফলে সকলকে কনের বাড়ীতেই সকাল সন্ধ্যায় করোনা রোগীর চিকিৎসা করতে আটকে থাকতে হয়েছে। জানিনা ঘটনা সত্য কি না। কিন্তু সত্য যদি হয়, মেয়েরা বাবার বাড়ীর এবং বরযাত্রীদের নিজ নিজ বাড়ীর আনন্দ যে নিতান্ত ক্ষণস্থায়ী হয়ে গিয়েছিল এভং বর ও বরযাত্রীরা যে কনের বাবা-মায়ের কাঁধে এক অনাকাংখিত বোঝায় পরিণত হয়েছিলেন-তা বুঝতে কারও পক্ষেই কষ্ট হওয়ার কথা নয়।

আমরা কোন দুর্ভোগে বা কষ্টে বা রোগ-বেদনার্ত হলে সাধারণত: ভাবি, এটা নিজ নিজ পাপের ফল। তাই পাপমুক্তির জন্য কি করা? কেউ কোন পূজো দেওয়ার, কেউ গ্রামবাসীদেরকে পরিতৃপ্তি সহকারে খাওয়ানোর কেউ সংকীর্ত্তনের, কেউ মসজিদে বা অন্যত্র জমায়েত হগয়ে বিশেষ নামায বা দোয়া খায়েরের ব্যবস্থা করতে বাল্যকাল হতে দেখে আসছি। ঈশ্বরের এমন আরাধনাও সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত।

করোনায় মৃত্যু ঘটলে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয় তা উপরে বলেছি। কিন্তু মৃত্যুর আগে রোগীটির অবস্থা কেমন দাঁড়ান? সাহস ও আত্মবিশ্বাস সম্পন্ন রোগীদের অনেকে বাড়ীতেই থাকেন আবার অনেকে হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন। উভয় ক্ষেত্রেই পরিস্থিতিটা ভিন্ন চরিত্রের এই রোগের কারণে বড্ড করুন হয়ে দাঁড়ায় নিজ নিজ পরিবার, আপন জন ও বন্ধু-বান্ধবদের ক্ষেত্রে।

যাঁরা বাড়ীতে থাকেন-তাঁরা ভিন্ন একটি পৃথক রুমে অন্য সদস্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বাস করেন। মহিলা রোগীর স্বামী বা পুরুষ রোগীর স্ত্রীও কাছে যেতে পারবেন না ঐ ঘরে প্রবেশ ও করতে পারবেন না গায়ে একবার হাত বুলানো তো দূরের কথা। যদি টয়লেট একটি হয় তবে অতি সাবধানে দুটি থাকলে একটি রোগীর জন্য নির্দিষ্ট থাকবে এবং তাতে অন্য কেউ যাবেন না। বাথও তাই। খাবারের প্লেট দরজার কাছে রাকা থাকবে তুলে নিয়ে খেয়ে আবার থালা বাটি দরজার ও পারে রেখে দিতে হবে। কী দুঃসহ বিচ্ছিন্নতা যেন সব থেকেও নেই।

আবার হাসপাতালে খেতে চাইলো তো সুরু থেকেই সমস্যা। এমবুল্যান্স পাওয়া কঠিন পেলেও ড্রাইবার করোনা রোগী যাবে জানলে না-ও যেতে পারেন। আবার সে সমস্যা উত্তরালে ভর্তি ও বেড এ স্থানান্তর এমবুল্যান্স থেকে হাসপাতাল অবধি আপন কোড সঙ্গে যেতে পারবেন না। দেখাশুনা যা করার সবই ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী করবেন, করছেনও। ছোঁয়াচে রোগ-তাই রোগীর স্পর্শে অনেক চিকিৎসক, নার্স ও কর্মী করোনাক্রান্ত হয়ে মারাও যাচ্ছেন। তাই তাঁরা নমস্য। নিজ নিজ জীবন বিপন্ন করে তাঁরা রোগীর চিকিৎসা করে যাচ্ছেন দিবা-রাত্র। যাঁরা আক্রান্ত হয়ে পজিটিভ ধরা পড়ছেন তাঁরা হাসপাতালেই কোয়ারাইন্টাইনেই চলে যাচ্ছেন। ফলে যেমন রোগীর পরিবার-পরিজনদেরও দুশ্চিন্তার অস্ত যাবে না।

সর্বাপেক্ষা দুঃখজনক ঘটনা হলো জীবন বিপন্ন করে যাঁরা রোগীদের চিকিৎসা করতে এগিয়ে আসছেন, বহু ক্ষেত্রেই আমরা তাঁদের অনেককেই তাঁদের প্রয়োজনীয় কিটস, পি পি, মাস্ক (ভালজাতের) প্রভৃতি দিতে অসমর্থ হওয়াতেই রোগীকে ছোঁয়ার ফলে তাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন জীবন দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

এর পরও অনেক ডাক্তার-নার্স চিকিৎসক করোনা রোগীর চিকিৎসা করতে সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছেন। তাঁরা নিশ্চিতভাবেই জাতির অহংকার।

অর্থনৈতিক সংকট

করোনা সারা পৃথিবীব্যাপী এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করেছে। আমদানী রফতানী বন্ধ। বিমান যোগাযোগ সড়ক পরিবহন, রেলপথ, নদী পথ-সব বন্ধ। যোগাযোগ ব্যবস্থা পৃথিবীব্যাপী স্থবির হয়ে পড়ায় বিমান কোম্পনী ও তার হাজার হাজার কর্মচারী, রেল-কর্মচারী, শিল্প কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী, সড়ক পরিবহনের লক্ষ লক্ষ কর্মচারী ও শ্রমিক বেকার। বেসরকারি কর্মচারীরাও একই সংকটে। চোট দোকানদাররা পন্য আনা-নেওয়া এবং বিক্রী নিয়ে সংকটে। তারও বেকার তাদের কর্মচারীদের সহ। গ্রামীন পরিবহনও অচল অফিস আদালত সব কিছু বন্ধ থাকায়। ফলে একদিকে বেসারত্ব বৃদ্ধি অপরদিকে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি সংকটকে তীব্রতর করে তুলছে। অর্থাৎ নিম্নমধ্যবিত্ত থেকে বাদবাকী সকলেরই এক হাল। রমজান মাসের পবিত্রতার এবং সততার আহ্বান অতীতের মত এবরাও স্তমরে মরছে কিন্তু জনতার স্বার্থে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রতিবারের মত এবারও সরকার নির্বিকার।

ডাঃ জাফরুল্লাহ : গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র

করোনার আক্রমনে বিধ্বস্ত সারাটি পৃথিবী বিপর্য্যন্ত কোটি কোটি মানুষ। বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ হলেও ভাইরাসটির আক্রমনের হাত থেকে রেহাই পায় নি। কিন্তু চিকিৎসার ব্যবস্থা? করেনাকে ধন্যবাদ জানাতেই হয় করেনাই চোখে আঙ্গুলদিয়ে দেখিয়ে দিল আমাদের অহংকারী স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা, স্বাস্থ্য সচিবেরা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা কতই না প্রচারমুখী এবং অন্ত:সাব শূন্য। কোটি কেটি টাকা দিয়ে লক্ষ বা হাজার কয়েক টাকা দায়ের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি হাসপাতালগুলি জন্য কেনার পর দেখা যায় সেগুলি অচল। সরকারি হাসপাতালের বিনামূল্যের ওষুধ চলে যায় ওষুধের দোকানগুলিতে। ডাক্তারন পাওয়া যায় হাসপাতালে নয়-ক্লিনিকে বা প্রাইভেট হাসপাতালে ব্যক্তিগত বাড়তি উপার্জনের কাজে ব্যস্ত। আই.সি.ইউ ব্যবস্থা আজও জেলা পর্য্যায়ে সরকারি হাসপাতালগুলিতে পৌঁছলো না-তৈরী হলো না।

ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরী করলো করোনা। কিন্তু তার আক্রমন মানবদেহে হলো কিনা তা পরীক্ষার জন্য কিটস আজও জেলাগুলিতে তো দূরের কথা-ঢাকার সকল হাসপাতালেও পৌঁনো যায় নি। কারণ তার দুষ্প্রাপ্যতা, দুর্মূল্যতা। কিন্তু প্রয়োজন সর্বত্র যাতে দ্রুত টেষ্ট করে নিশ্চিত হওয়া যায় প্রকৃত পক্ষে দেশে করেনাক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কত।
এই কঠিন দুঃসময়ে এগিয়ে এলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, মানবদরদী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডাঃ জাফরুল্লাহ। তাঁর প্রতিষ্ঠানের গবেষকেরা বের করলেন টেষ্টিং কিট। দিলেন সংশ্লিষ্ট সরকারী সংস্থাকেকিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের বা অধিদফতরের প্রধান কর্ম কর্তারা অনুপস্থিত। অথচ এই কিট দিয়ে মাত্র ৩০০/৩৫০ টাকায় মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে টেষ্ট করে ফলাফল পাওয়া সম্ভব।

রাষ্ট্রের করনীয় সাদরে ঐ কিট গ্রহন করা, তার কার্য্যকারিতা দ্রুত পরীক্ষা করা, কার্য্যকর প্রমাণিত হলে ডাঃ জাফরুল্লাহ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করা এবং গবেষকদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা সহ অনুকূল সম্বর্ধনা দিয়ে উৎসাহিত করা ব্যপকভাবে কিটস উৎপাদন করে তার দেশীয় চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রফতানী করতে সহায়তা করা। ব্যাপকভাবে কিটস উৎপাদন করে তার দেশীয় চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রফতানী করতে সহায়তা করা।
কিন্তু ডা. জাফরুল্লাহ মুক্তিযোদ্ধা ও জনদরদী হলেও সরকারি দলের কেউ নন এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে বি এন পি ঘেঁষা। তাই জাতী উদ্বিগ্ন আকাংখিত সম্মান মর্য্যাদা তাঁকে, তাঁর প্রতিষ্ঠানকে, গবেষকদেরকে ও কিটসকে দেওয়া হবে কি না।

দল বাজির এই ভাইরাস সংক্রমিত করেছে আমাদেরকে তরুণ-তরুণীরা তার চিকিৎসায় দ্রুত এগিয়ে এলেই দেশ সঠিক পথে ফিরে আসতে পারে। জন বান্ধব রাজনীতিরও সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।

আলোর সন্ধান

অন্ধকারের প্যাচাল দীর্ঘ সময় ধরে পাড়লাম। এবারে দেশ-বিদেশে পাওয়া আলোর সন্ধানের কিছু কথা নিবেদন করি।
এক. চারিদিকে দেখি চাল চুরি, দুনীতির ব্যাপক প্রসার অনাহার, বেকারত্ব হাহাকারের ঘনকালো অন্ধকার। কিন্তু এগুলি ভেদ করে বেড়িয়ে আসা আলোকের রশ্মির দিকে তাকানো যাকঃ

(ক) ইংল্যান্ডে, জার্মানী ও চীনে করোনা ভ্যাকসিন আবিস্কারের উদ্যোগ আজ ফলবতী হওয়ার পর্য্যায়ে। ঐসব দেশের বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভ্যাকসিন কার্য্যকর প্রমাণিত হলে সেপ্টেম্বর নাগাদ বিশ্বের দেশগুলিতে বাজারজাত করা হবে।

(খ) মানুষ আধা-দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে চলছেন-বেকারত্ব বেড়েছে বহুগুন। ত্রাণ সাহায্য যা সরকার দিচ্ছে তার একটি অংশ চুরি করছেন সরকারি দলের লোকজনই।

সাবাস-নাজমুদ্দিন-স্যালিউট

এই পরিস্থিতির মধ্যে ভিক্ষা করে ( শেরপুর জেলার এক গ্রামের) কাঁচা নাজমুদ্দিন তার কাঁচাঘর মেরামতের জন্য কষ্ট করে জমানো ১০,০০০ টাকা মানুষের অনাহার-অর্ধহার দেখে বিচলিত বোধ করে পুরো টাকাই দিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলো। অভিনন্দন স্যালিউট হাজার হাজার নাজমুদ্দিনের জন্ম হোক।

লেখক : সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ, সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রাপ্ত।