ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » অর্থ ও বাণিজ্য » বিস্তারিত

দাম বেড়েছে লবঙ্গ-এলাচ-দারুচিনির

২০২০ জুলাই ০৯ ১৪:৫২:১২
দাম বেড়েছে লবঙ্গ-এলাচ-দারুচিনির

স্টাফ রিপোর্টার : এক সপ্তাহ আগে কিছুটা দাম কমলেও কোরবানির ঈদ বা ঈদুল আজহা এগিয়ে আসায় বাড়তে শুরু করেছে লবঙ্গ, এলাচ ও দারুচিনির দাম। একদিনের ব্যবধানে এলাচের দাম কেজিতে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। লবঙ্গের দাম কেজিতে ২০০ টাকা এবং দারুচিনি ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর থেকেই মসলার দামে বেশ অস্থিরতা বিরাজ করছে। করোনার শুরুতে এক দফা দাম বাড়ার পর, রোজার ভেতর আবার দাম বাড়ে। তবে রোজার ঈদের পর সব ধরনের মসলার দাম কমে। গত সপ্তাহেও দাম কমে কিছু কিছু মসলার। কিন্তু কোরবানির ঈদ সামনে রেখে এখন আবার মসলার দাম বাড়তে শুরু করেছে।

তারা বলছেন, মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব কোরবানির ঈদ। ইতোমধ্যে কোরবানির ঈদের আবহাওয়া শুরু হয়ে গেছে। ঈদের আর ২০ দিনের মতো বাকি আছে। এ কারণে মসলার দাম বাড়তে শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে এলাচ, লবঙ্গ ও দারুচিনির দাম বেড়েছে। ধীরে ধীরে অন্যান্য মসলার দামও বাড়তে পারে।

ব্যবসায়ীরা আরও বলছেন, সারাবছর ধরেই মসলার চাহিদা থাকে। তবে কোরবানির ঈদে চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। যে কারণে প্রতি বছরই কোরবানির ঈদের অন্তত এক সাম আগে থেকে মসলার দাম বেড়ে যায়। কিন্তু করোনার কারণে এবার একটু দেরিতে দাম বাড়তে শুরু করেছে। অবশ্য করোনার কারণে বেশিরভাগ মসলার দাম এমনিতেই বাড়তি রয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দারুচিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা। এলাচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০০ থেকে ৩৬০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৯০০ থেকে ৩২০০ টাকার মধ্যে।

মাংস রান্নার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত আরেক মসলা লবঙ্গ’র কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। অবশ্য রোজার ঈদের আগে লবঙ্গের কেজি ১২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।

এলাচ ও লবঙ্গের দাম বাড়ার তথ্য উঠে এসেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনেও। টিসিবি জানিয়েছে, ৮ জুলাই এলাচ ও লবঙ্গের দাম বেড়েছে। এলাচের দাম ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ছিল ২ হাজার ৯০০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। আর লবঙ্গ’র দাম ৩ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়ে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী হাছান বলেন, গতকাল পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখি এলাচ, দারুচিনি ও লবঙ্গের দাম বেড়েছে। এলাচ ও লবঙ্গ’র কেজি প্রায় ৩০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়েছে। দারুচিনির দাম কেজিতে বেশি পড়েছে ৫০ টাকার মতো। ফলে আমরাও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

তিনি বলেন, গত সপ্তাহেও মসলার দাম ছিল কমতি। কিন্তু আস্তে আস্তে কোরবানির ঈদ কাছে চলে আসছে। এ কারণে মসলার দাম বাড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সামনে মসলার দাম আরও বাড়তে পারে। কারণ গত কোরবানির ঈদের তুলনায় জিরা, পেঁয়াজ, রসুনের দাম এখন কিছুটা কম। ঈদ কেন্দ্রীক কেনাকাটা শুরু হলে পাইকাররা সব ধরনের মসলার দাম বাড়িয়ে দেবেন।

রামপুরার ব্যবসায়ী শিপলু বলেন, গত সপ্তাহেও মনে হচ্ছিল এবার কোরবানির ঈদ কেন্দ্রীক মসলার দাম বাড়বে না। কিন্তু আজ সকালে পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম এলাচ, দারুচিনি ও লবঙ্গের দাম বেড়ে গেছে। অন্যান্য মসলার দামও বাড়তে পারে।

মালিবাগের ব্যবসায়ী কামাল বলেন, গতকালও এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ কম দামে বিক্রি করেছি। কিন্তু আজ পাইকারিতে সবকিছু বাড়তি দামে কেনা লেগেছে। ফলে আমরাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। গতকাল ১০০ গ্রাম লবঙ্গ ৭০ টাকা বিক্রি করেছি। আজ ৯০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। গতকাল ১০০ গ্রাম এলাচ ৩০০ টাকা বিক্রি করেছি। দাম বাড়ার কারণে আজ তা ৩৫০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৯, ২০২০)