ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » অর্থ ও বাণিজ্য » বিস্তারিত

মহামারিতেও বাড়ছে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ

২০২০ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৮:১৭:৪৯
মহামারিতেও বাড়ছে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ

স্টাফ রিপোর্টার : বিনিয়োগে নানা শর্ত এবং মহামারি করোনায় সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বেড়েছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে আট হাজার ৭০৫ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এ অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৪৩ শতাংশ বেশি। গত বছরের জুলাইয়ে ছয় হাজার ৯১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা, ব্যাংকে আমানতের সুদহার কম হওয়ায় সাধারণ মানুষ এখন সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে সবচেয়ে বেশি ‘নিরাপদ’ মনে করছেন। বিভিন্ন শর্ত পরিপালন করেও সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা।

২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাইয়ে মোট আট হাজার ৭০৫ কোটি ৬২ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। বিপরীতে পরিশোধ হয়েছে পাঁচ হাজার কোটি ৩৯ লাখ টাকা। মূল অর্থ পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থ নিট বিক্রি হিসেবে গণ্য হয়। সেই হিসাবে আলোচিত সময়ে নিট বিক্রির পরিমাণ তিন হাজার ৭০৫ কোটি টাকা।

অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর সঞ্চয়পত্র অস্বাভাবিক বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় সরকার এ খাতের ওপর বেশ কয়েকটি বিধিনিষেধ আরোপ করে। আগে সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য কোনো ক্রেতাকে কর শনাক্ত নম্বর বা ই-টিআইএন জমা দিতে হতো না। কিন্তু এখন এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

দুর্নীতি কিংবা অপ্রদর্শিত আয়ে সঞ্চয়পত্র কেনা বন্ধ করতে ক্রেতার তথ্যের একটি ডাটাবেস সংরক্ষণের লক্ষ্যে অভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে। এছাড়া সঞ্চয়পত্রে বড় বিনিয়োগে কঠোর হয়েছে সরকার। চাইলেই ভবিষ্যৎ তহবিল বা প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থে সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ নেই। একই সঙ্গে পুরো বিক্রি কার্যক্রমটি এখন অনলাইনের মাধ্যমে মনিটর করায় কেউ ইচ্ছে করলে, সীমার অতিরিক্ত সঞ্চয়পত্র বা একই নামে বিভিন্ন জায়গা থেকে কিনতে পারবে না। এত সব শর্তের পর গত অর্থবছর উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি। কিন্তু ব্যবসায় মন্দা ও ব্যাংকগুলোতে আমানতের সুদহার কমে যাওয়ায় বেশি মুনাফার আশায় এখন বিভিন্ন শর্ত পূরণ করেও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করছে সাধারণ মানুষ।

এদিকে চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। বিশাল ঘাটতি মেটাতে এবার সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের বাজেটে যার লক্ষ্য ছিল ২৭ কোটি টাকা।

সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে (২০১৯-২০) মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, যা তার আগের অর্থবছর ছিল ৪৯ হাজার ৯৩৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থবছর সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমেছিল ৭১ দশমিক ১০ শতাংশ।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২০)