ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » দেশের খবর » বিস্তারিত

টাঙ্গাইল সদরের তিন ইউনিয়নের শতাধিক ঘরবাড়ি যমুনার পেটে

২০২০ সেপ্টেম্বর ২৯ ১৫:০২:৪৮
টাঙ্গাইল সদরের তিন ইউনিয়নের শতাধিক ঘরবাড়ি যমুনার পেটে

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : প্রমত্ত্বা যমুনায় পানি কমতে থাকায় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এক সপ্তায় কাকুয়া, কাতুলী ও মামুদনগর ইউনিয়নের মসজিদ, মাদ্রাসা ও বসতভিটা সহ কয়েকটি গ্রামের শতাধিক স্থাপনা ভাঙনের কবলে পড়ে যমুনার পেটে চলে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি পানি কমতে থাকায় যমুনায় ভাঙন দেখা দেয়। গত এক সপ্তায় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চরপৌলী, কাকুয়া, হুগড়া, গয়রাগাছা, চকগোপাল, কাতুলী, মাহমুদনগর, চালা বাকলা, বারোবাড়িয়া, কেশব মাইঝাইল সহ কয়েকটি গ্রামের মসজিদ-মাদ্রাসা সহ শতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙনের শিকার হয়ে নদীগর্র্ভে বিলীন হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের চাপে বর্ষায় ভাঙনে পাউবো কিছু জিও ব্যাগ ফেলে দায়িত্ব পালন করে থাকে। যুগের পর যুগ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে প্রতিবছর ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙন অব্যাহত থাকলে একদিন টাঙ্গাইল জেলা মানচিত্র থেকে মামুদনগর ইউনিয়নটি হারিয়ে যাবে।

কাকুয়া ইউনিয়নের পঞ্চাশোর্ধ বয়সী পল্লী চিকিৎসক নুরুল ইসলাম জানান, তার বাবার ৮০ বিঘা জমি ছিল। যমুনার ভাঙনে তারা সর্বশান্ত হয়েছেন। বর্তমানে সোনালী মোড়ে ফার্মেসী চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিনি জানান, ছোট সময় থেকে শুনেছেন যমুনা নদীর বাম তীরে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণ হয়নি।

স্থানীয় আবু তালেব জানান, গত এক সপ্তার ভাঙনে তার বাড়িঘর যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের তীব্রতা বেশি থাকায় বসতঘরটিও তিনি সড়িয়ে নিতে পারেন নি।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, সাম্প্রতিক বন্যার ক্ষয়ক্ষতির রেশ কাটতে না কাটতেই যমুনার ভাঙন শুরু হয়েছে। গত সাত দিনের প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তিনি জানান, কাকুয়া ইউনিয়নের শতাব্দী প্রচীণ চরপৌলী জামে মসজিদ, চরপৌলী মাদ্রাসা ও সামাজিক গোরস্থান ভাঙনের শিকার হয়েছে। এছাড়া চরপৌলী গ্রামের অর্ধশত ঘরবাড়ি যমুনায় বিলীন হয়েছে।

মাহমুদনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাজেদ তালুকদার জানান, ভাঙন কবলিত মানুষ ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কথা বললেও ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি সেবা হিসেবে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়নি।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, যমুনার বাম তীরে দুই ধাপে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী থেকে শুরু হয়ে সদর উপজেলার মামুদনগর এবং পরে দ্বিতীয় ধাপে মামুদনগর থেকে নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়ন পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ নির্মাণ করা হবে। শুকনো মৌশুমে প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

(আরকেপি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২০)