ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » ফিচার » বিস্তারিত

ভাস্কর্য শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ

২০২০ ডিসেম্বর ০৭ ১৫:৪২:৩৫
ভাস্কর্য শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ

ফোজিত শেখ বাবু : যার ভাস্কর্য দেখে তার আদর্শের আলোকে আলোকিত হয়ে আপন প্রভুর কথা মনে হয় তিনি আর কেউ নন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই ভাস্কর্যটি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সাদিক খান সাহেবের বাসার সামনে বসানো।

আমি ২০১৮ সালে যখন যুক্তরাজ্যে যাই, তখন দীর্ঘ সময় এই ভাস্কর্যটির পাশে অবস্থান করি। এ সময় দেখি, বিভিন্ন জাতি- ধর্মের লোক এই ভাস্কর্যটির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তারা নিজ নিজ ধর্ম ও সংস্কৃতি অনুযায়ী অত্যন্ত সম্মান প্রদর্শন করে। কেউবা এটিকে সালাম দেয়, কেউ একটু মাথা নত করে শ্রদ্ধা জানায়, আবার কেউবা ভাস্কর্যটিকে স্যালুট দেয়। অনেকেই ফুলের তোড়া বা মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। সেই সাথে ভাস্কর্যটির পাশে দাঁড়িয়ে তারা আপন প্রভুর নিকট প্রার্থনা করে। আশি বছরের ঊর্ধ্বে একজন বৃদ্ধকেও একই ভঙ্গিমাতে দেখা যায়। এই ধরনের একজন মহামানবের ভাস্কর্য বসানো ভালো না মন্দ সেটা আপনাদের বিবেচনা। আমার বাস্তব জীবনের দর্শন আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম।

এই ভাস্কর্য কোন ধর্মের জন্য সাংঘর্ষিক নয়, সকল জাত ধর্মের লোকেরা এটাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করে। ভাস্কর্য হচ্ছে মূলত: শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ। ভাস্কর্যের মাধ্যমে ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায়, একটি দেশের ইতিহাস বহন করে। ভাস্কর্যের মাধ্যমে দেশের অবস্থান তুলে ধরা হয়। মুছে যাওয়া সকল জাতি-ধর্মের ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায় ভাস্কর্যের মাধ্যমে। একটি দেশ কি পরিমাণ শিল্প-সংস্কৃতির নিদর্শন বহন করে তা ফুটে ওঠে একটি ভাস্কর্যের মাধ্যমে। স্থপতি ও প্রকৌশলী বিভাগে একটি দেশ কি পরিমাণ সফল, তার নিদর্শন বহন করে ভাস্কর্য। যে সময় মূর্তিপূজা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তৎকালীন সময়ে সকলেই মূর্তি তৈরি করতো একমাত্র পূজার জন্য। ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়।

লেখক : আলোকচিত্র শিল্পী।