ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » রাজনীতি » বিস্তারিত

ফখরুল ‘ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত কি-না’ সন্দেহ হাছান মাহমুদের

২০২১ জানুয়ারি ২৫ ১৫:৪৮:১২
ফখরুল ‘ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত কি-না’ সন্দেহ হাছান মাহমুদের

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমার সন্দেহ হচ্ছে, মানুষ বুড়ো হয়ে গেলে একটা রোগ হয়। সেই রোগ হচ্ছে ডিমেনশিয়া, অর্থাৎ আবোল-তাবোল বলে।’

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হাছান মাহমুদ এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘গতকাল মির্জা ফখরুল ইসলাম বক্তব্য দিয়েছেন যে, এই টিকার ওপর নাকি তাদের আস্থা নেই। এই টিকার ওপর পুরো পৃথিবী আস্থা স্থাপন করেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আস্থা স্থাপন করেছে, ভারতের কোটি কোটি মানুষকে এই টিকা দেয়া হচ্ছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশও এই টিকা কিনে তাদের জনগণকে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য বলেছেন, এই টিকার ওপর জনগণের আস্থা নেই।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (মির্জা ফখরুল) আরও বালখিল্যের মতো বলেছেন, এই টিকা প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া হোক। আমরা সন্দেহ হচ্ছে, মানুষ বুড়ো হয়ে গেলে একটা রোগ হয়, সেই রোগ হচ্ছে ডিমেনশিয়া, অর্থাৎ আবোল-তাবোল বলে। এই রোগটা শুধু মানুষের হয় তা নয়, এটি মানবগোত্রীয় অন্যান্য প্রাণী যেমন- বানর-হনুমানেরও হয়। বানর-হনুমানও যখন বুড়ো হয়ে যায় তখন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হলে তারা উল্টাপাল্টা অনেক কাজ করতে থাকে, উল্টাপাল্টা অনেক চিৎকার করতে থাকে।’

‘মানুষের (ডিমেনশিয়া) হলেও মানুষ বুড়ো বয়সে অপ্রাসঙ্গিক, অবান্তর নানা ধরনের কথা বলে। আমার সন্দেহ হচ্ছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই ডিমেনশিয়া রোগ হয়েছে কিনা! না হলে তিনি যেভাবে কালকে ইয়ার্কি করার মতো কথা বলেছেন, একজন দায়িত্বশীল নেতার মুখ থেকে এমন বক্তব্য আশা করা যায় না।’

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমি মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ করব জনগণকে বিভ্রান্ত করার যে নোংরা খেলায় নেমেছেন; এটি দেশ, জাতি ও জনগণের সাথে প্রতারণা- আপনারা দয়া করে সেই প্রতারণাটা করবেন না।’

দৈব-দুর্বিপাকের সময় বিএনপি, তার মিত্ররা এবং একটি স্বার্থান্বেষী মহল সবসময় অপপ্রচারে লিপ্ত হয় জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালায়। এই করোনাভাইরাস বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়ার পর থেকে বিএনপি জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি। শুধুমাত্র সংবাদ সম্মেলন ও মাঝেমধ্যে দু-একটি মানববন্ধনের মধ্যেই তারা সীমাবদ্ধ ছিল।’

‘জনগণের জন্য লোক দেখানো কিছু ফটোসেশন করেছে ত্রাণ তৎপরতার। যেখানে আমাদের দলের পক্ষ থেকে এক কোটি ২৫ লাখ পরিবারের কাছে খাদ্য সহায়তা পাঠানো হয়েছে। বেশ কয়েক কোটি টাকাও বিতরণ করা হয়েছে। জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীও বিতরণ করা হয়েছে। দেশের কোনো রাজনৈতিক দল সেটা করেনি।’

মন্ত্রিসভার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিন্তু এরপর সবাই করোনামুক্ত করে কাজে নেমে পড়েছে, কেউ থেমে থাকেনি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এরপর তারা আশা করেছিল আমরা করোনার টিকা সঠিক সময়ে সংগ্রহ করতে পারব না। সেটি নিয়ে একটি ধুম্রজাল সৃষ্টির অপচেষ্টাও চালানো হয়েছিল। ভারতের একটি ভুল ও মিথ্যা সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে যেভাবে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি ঊর্ধ্বতন নেতারা যেভাবে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছিলেন, সেটি অত্যন্ত হাস্যকর ও ষড়যন্ত্রমূলক ছিল।’

ইতোমধ্যে ২০ লাখ ডোজ করোনার টিকা এসেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, ‘আজকে আরও ৫০ লাখ ডোজ টিকা এসেছে। বিএনপি আশা করেছিল সঠিক সময়ে টিকা আনা সম্ভব হবে না। যখন সঠিক সময়ে টিকা আসলো তখন এই টিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার আরেক অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। পৃথিবীতে আবিষ্কৃত কার্যকর টিকার মধ্যে এটি হচ্ছে অন্যতম।’

বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিরোধীদের নির্মূল করতে তথ্যমন্ত্রী প্রথমে বিএনপিকে টিকা দেয়ার কথা বলেছেন- এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যখন টিকা চলে আসল তখন বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হলো এই টিকা নিয়ে লুটপাট হবে। এই টিকা যারা ক্ষমতাবান শুধু তাদের দেয়া হবে। তাদের সেই কথা পরিপ্রেক্ষিতে বলেছিলাম, বিএনপি যদি চায় তবে আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাব বিএনপিকে আগে টিকা দেয়ার জন্য। রিজভী সাহেবের কথা মনে হচ্ছে তারা আদৌ টিকা নিতে চায় কিনা, তারা হয়তো টিকা নিতে চায় না।’

জনপ্রতিনিধিদের কবে টিকা দেয়া হবে- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি প্রথমে টিকা পাওয়ার অধিকার রাখের স্বাস্থ্যকর্মীসহ যারা করোনার মধ্যে ফ্রন্টলাইন ফাইটার হিসেবে কাজ করেছেন তারা। সরকার সেভাবেই একটি রোডম্যাপ তৈরি করছে। করোনার সময় জনপ্রতিনিধিরা জনগণের পাশে ছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমার অধিকারটা আগে নয়।’

তিনি বলেন, ‘কেউ যদি মনে করে পথ দেখানোর জন্য আমাদের আগে টিকা নিতে হবে, সেক্ষেত্রে ভলান্টিয়ার করতে আমরা কোন আপত্তি নেই।’

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ২৫, ২০২১)