ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » অগ্নিকন্যা » বিস্তারিত

শাহরাস্তির তিন জয়িতার গল্প

২০২১ মার্চ ২২ ২৩:০২:৫৯
শাহরাস্তির তিন জয়িতার গল্প

উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : শাহরাস্তিতে ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় ২০২০ সালের ৩ ক্যাটাগরীতে জয়িতা নির্বাচন করা হয়েছে।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী ক্যাটাগরীতে নিজমেহার গ্রামের সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদের স্ত্রী রোমানা বিলকিস জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন। স্নাতক ডিগ্রিধারী রোমানা বিলকিস শূন্য হতে বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন।

ঠাকুরবাজারে রোমান্স উইমেন কেয়ার নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে মাসিক ৫০ হাজার টাকা আয় করছেন। শাশুড়ি, স্বামী, ছেলে, মেয়ে নিয়ে তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন।

শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে সূচীপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দিকদাইর গ্রামের মোঃ রুহুল আমিনের স্ত্রী তামান্না আক্তার বিবেচিত হয়েছেন। কোরআনে হাফেজ বাবা ছিলেন একজন মসজিদের ইমাম। ১১ সদস্যের সংসারে বাবার সামান্য আয়ে সংসার চলতো না। মা পারিবারিক কাজের পাশাপাশি নকশিকাঁথা, পাটি, চাটাই ও মোড়া বানিয়ে বিক্রি করতেন। ওই কাজে মাকে তিনি সাহায্য করতেন। ২০০১ সালে ৫ম শ্রেণি, ২০০৭ সালে এসএসসি, পরবর্তীতে এইচএসসি ও ২০১৫ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ২০১০ সালে রাগৈ শিশু মঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। পরিবারের ৪ ভাই-বোন স্নাতক ডিগ্রিধারী। ছোট ২ ভাই চাঁদপুর সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে পড়ছে। ছোট ভাই-বোনদের পড়াশোনায় তামান্না আক্তারের সহযোগিতাসহ অনেক অবদান রয়েছে।

সফল জননী নারী ক্যাটাগরীতে শাহরাস্তি পৌরসভার বাত্বলা গ্রামের রশিদ আহমেদের স্ত্রী নাছিমা বেগম বিবেচিত হন। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া নাছিমা বেগম ছোটবেলা থেকে পড়াশোনায় ভালো ছিল। বড় না হতেই বাবা মারা যান। বড়বোন পড়ার খরচ যোগালেও ধর্মীয় বাধা-বিপত্তির জন্যে পড়াশোনায় বেশি এগুতে পারেননি। দরিদ্র ঘরে বিবাহিতা নাছিমা বেগম নিজে বেশী পড়াশোনা করতে না পারলেও নিজের সন্তানদের পড়াশোনার ব্যাপারে খুব তৎপর ছিলেন। আর্থিক অসচ্ছলতার জন্যে নিজে টিউশনি করেছেন, গরু, ছাগল পালন করেছেন। কষ্টের মধ্যেও বড় ছেলেকে এইচএসসি পাস করান। একমাত্র মেয়েকে বগুড়া মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করিয়েছেন এবং ছোট ছেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে।

সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের উদ্যোগে ৩ জন জয়িতাকে স্মারক, সনদ, উপহার ও ফুল দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ ইরান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আহসান উল্লাহ চৌধুরী, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ আবদুল আউয়ালসহ অতিথিবৃন্দ।

(ই্উ/এসপি/মার্চ ২২, ২০২১)