ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

ভুয়ামুক্ত তালিকার দাবিতে মুক্তিযোদ্ধাদের বৃহত্তর ঐক্য একান্তই জরুরি

২০২১ সেপ্টেম্বর ০৫ ১৩:১৫:৪৫
ভুয়ামুক্ত তালিকার দাবিতে মুক্তিযোদ্ধাদের বৃহত্তর ঐক্য একান্তই জরুরি

আবীর আহাদ


মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও ভুয়ামুক্ত মুক্তিযোদ্ধা তালিকার দাবি এখন দেশের সব প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত সচেতন যুব-জনতার। এ দাবির মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধাদের অস্তিত্ব এবং তাদের মানমর্যাদা নিহিত। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর অতিবাহিত হতে চলেছে, অথচ স্বাধীনতা আনায়নকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া তো হলোই না, উপরন্তু গোঁজামিল সংজ্ঞায় এখনো মুক্তিযোদ্ধা পয়দা করা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় মর্যাদা ও ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। জনসমক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধারা হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কহীন কেউ কেউ যখন মুক্তিযোদ্ধা খেতাবে ভূষিত হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধাদি তারা হাতিয়ে নিচ্ছে,তখন একদিকে যেমন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা অপমানিত হচ্ছেন, অপরদিকে দেশের জনগণও অবাক হচ্ছেন। যেমন সম্প্রতি সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, যিনি একজন সাবেক মন্ত্রী, বর্তমানে সংসদ সদস্য, নিজেকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে জামুকার মাধ্যমে বেসামরিক গেজেটের মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেলেন! সেনাবাহিনীর লোক সেনা গেজেটধারী হবেন, এটাই তো নিয়ম। অথচ তিনি হলেন বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধা। এখন এই সূত্রে যদি কোনো বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধা দাবিদার সেনা গেজেটের মুক্তিযোদ্ধা হতে চান, তাকে কি জামুকার বিধাতারা সেনা গেজেটের মুক্তিযোদ্ধা বানাতে পারবেন? তবে অনেকেই ধারণা পোষণ করেন, অর্থ ও ক্ষমতার জোরে সবকিছুই সম্ভব। এসব ভুয়ামি জালিয়াতি গোঁজামিল ও অনিয়মের বিরুদ্ধে আজ বেশ কটি বছর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা নানান আন্দোলন-সংগ্রাম, বাদ-প্রতিবাদ করলেও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, জামুআ তথা সরকার কোনো ভ্রুক্ষেপই করছে না। এ অবস্থায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সর্বাত্মক আন্দোলনে নামা ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর নেই। আর সর্বাত্মক আন্দোলনটি গড়ে তুলতে হলে প্রকৃত সব মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে হবে এবং সেই সাথে সবাইকে একটি প্লাটফর্মে এসে জড়ো হয়ে এককেন্দ্রিক আন্দোলনে সামিল হতে হবে। অন্যথায় কোনো আন্দোলন গড়ে উঠবে না, দাবি-দাওয়াও পূরণ হবে না। ভুয়ামি গোঁজামিল ও জালিয়াতি চলতেই থাকবে। এ অবস্থায় চরম হতাশার মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে পরপারে চলে যাওয়ার দিনই শুধু গুণতে হবে !

প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ বা অনৈক্য নেই। যারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ও ভুয়া সৃষ্টির কারিগর তারাই আকারে, ইংগিতে, লেখায় ও বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কৃত্রিম ভেদাভেদ ও অনৈক্য সৃষ্টি করে রেখেছে যাতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা এক কেন্দ্রে ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে। কারণ ভুয়া ও ভুয়ার কারিগররা ভালো করেই জানে যে, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ঐক্যবদ্ধ হলে তাদের অস্তিত্ব ও প্রভাব থাকবে না। অপরদিকে সরকারের মধ্যকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী একটি দৃশ্য ও অদৃশ্য চক্রও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নানান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে। এ চক্রটিও জানে, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ঐক্যবদ্ধ হলে দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ডসহ সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও লুটপাট চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ফলে তারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের কারিগরদের নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা অঙ্গনে অধিকসংখ্যক ভুয়াদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ হিশেবে দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে!

প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সবর্মোট সংখ্যা দেড় লক্ষের অনেক নিচে। এখন জীবিত থাকতে পারেন ষাট/সত্তর হাজার। অথচ সরকারি তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দু'লক্ষ পঁয়ত্রিশ হাজার। এর মধ্যে ভুয়াদের সংখ্যা আশি/পঁচাশি হাজার । এই যে পঁচাশি হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এদের সৃষ্টিকর্তা বিভিন্ন সরকারের গোঁজামিলের সংজ্ঞা, নির্দেশিকা, অর্থ, আত্মীয়তা ও রাজনৈতিক বিবেচনায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ইউনিয়ন থানা জেলা ও কেন্দ্রীয় কমাণ্ড কাউন্সিল, রাজনৈতিক দলের এমপি-মন্ত্রী ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।

জীবিত প্রকৃত ষাট/সত্তর হাজার মুক্তিযোদ্ধা এখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত আছেন। এর মধ্যের ভুয়ার সৃষ্টিকর্তা, ভুয়ার দালালসহ ৮০/৮৫ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হলো চেতনাহীন, টাউট, বাটপাঢ় ও সুযোগ সন্ধানী। এরাই হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, রাষ্ট্র ও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের শত্রু। এরা ধনে-জনে-শক্তিতে বলিয়ান। এদের বিরুদ্ধেই 'একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ' ও আমার সংগ্রাম। একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মাধ্যমে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন এবং ভুয়ামুক্ত মুক্তিযোদ্ধা তালিকার জন্যে অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।

প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমি তাই আহ্বান জানাচ্ছি, যতোই বাধা আসুক, চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলুক সেসবকে পদদলিত করে আপনারাও একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রয়াসের সাথে সম্পৃক্ত হোন। অথবা যার যার সংগঠন ও অবস্থানে থেকে এ দু'টি মৌলিক দাবির প্রতি সরব হোন। যারা নানাভাবে বিভ্রান্ত হয়ে বা ভুল বোঝাবুঝির কারণে আমাদের সংগঠন থেকে বের হয়ে গেছেন, অথবা অন্য কোনো বিভ্রান্তিকর সংগঠনের সাথে জড়িত হয়ে নিজেদের ভুল বুঝতে পারছেন ও অনুতপ্ত অবস্থায় রয়েছেন এবং যারা আদৌ কোনো সংগঠনের সাথে জড়িত নন তাদের সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ও তাদের পরিবারবর্গের বৃহত্তর স্বার্থে আস্থা ও বিশ্বাসের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের আশা-আকাঙ্খা ও চেতনার বাতিঘর একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি ।

আমাদের মধ্যে আদর্শিক বিভাজন না থাকলেও অন্ধ অহমিকা, আত্মম্ভরিতা, হিংসা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি কারণে মুক্তিযোদ্ধারা নানান সংগঠনে বিভক্ত। আমরা আমাদের মানসিক দৈন্যতার কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় স্বার্থে কেউ কাউকে ছাড় দিতে বা মূল্যায়ন করতে পারছি না। যে যার মতো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংগঠন সাজিয়ে নেতা হয়ে বসে আছি। অপথে কুপথে বিশাল অর্থ উপার্জন করে কেউ কেউ অর্থশক্তিতে বলীয়ান হয়ে কিছু বশংবদ জোগাড় করে সংগঠন তৈরি করে নেতার খাতায় নাম লিখিয়ে আত্মতৃপ্তি উপভোগ্য করে চলেছেন। কেউ কেউ আবার মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের নামে জায়গা জমি প্লট ইত্যাদি লোভনীয় টোপ দিয়ে সংগঠন গড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছেন। এক সংগঠন আরেক সংগঠনকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছেন। একে অপরের প্রতি ঈর্ষা প্রদর্শন করে চলেছেন। এভাবে মুক্তিযোদ্ধা সমাজ আজ বহুধাবিভক্ত। অথচ কে না জানে, বহুধাবিভক্ত সংগঠন দিয়ে কোনো কিছুই অর্জন করা যায় না। মুক্তিযোদ্ধারা বহুধাবিভক্ত বলেই তাদের সন্তানসহ মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মও বহুধাবিভক্ত। আর এই বিভক্তি এতোটাই প্রকট হয়ে পড়েছে যে, এখন মুক্তিযুদ্ধের সন্তান ও প্রজন্মদের মধ্যে নানান কিংভূতকিমাকার নামের শত শত সংগঠন গড়ে উঠেছে । এমনকি কিছুদিন পর নেতৃত্বের আসন নিয়ে বিভিন্ন সন্তান সংগঠনের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ার পর সেই সংগঠনের একই নামে একাধিক পাল্টা সংগঠন গড়ে উঠছে। ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের মতো সন্তান সংগঠনগুলোও বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে অনৈক্যের মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে ।

এই সুযোগে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি বিশেষ করে রাজাকার আলবদর ও তাদের উত্তরাধিকাররা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানান ঠুনকো অজুহাতে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গের ওপর একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজাকার আলবদর ও তাদের উত্তরাধিকারসহ বিএনপি জামায়াত শিবির ফ্রিডমপার্টি ও সামাজিক অপরাধীরা অনেকেই আওয়ামী লীগ নেতাদের অর্থ দিয়ে সেই দল ও তার অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন কমিটিতে অবস্থান করে নিয়েছে। তাদের কেউ কেউ এমপি উপদেষ্টা এমনকি মন্ত্রী পদও বাগিয়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের খাতায় নাম লিখিয়েই তারা এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গের ওপর হত্যা, নির্যাতন, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, জায়গা জমি দখল, লুটতরাজ ইত্যাদি কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগকে তারা অর্থ দিয়ে এমনি বশ করে ফেলেছে যে, তাদের এহেন কার্যকলাপের বিরুদ্ধে টু-শব্দটি করার শক্তি তারা হারিয়ে ফেলেছে। আওয়ামী লীগের নীরবতার দেখাদেখি প্রশাসনও একধরনের নির্লিপ্ত অবস্থানে আছে ক্ষেত্র বিশেষে প্রশাসনও অপকর্মীদের সহযোগিতা করে চলেছে। এ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধারা আজ তাদের সীমাহীন ত্যাগে অর্জিত দেশে পরবাসী জীবনযাপন করে চলেছেন। এ দুর্বিষহ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদেরকে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মুক্তিযোদ্ধারা ঐক্যবদ্ধ হলে তাদের সন্তানসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষজন ঐক্যবদ্ধ হতে বাধ্য। বাস্তব অবস্থাই বলে দিচ্ছে যে, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দুর্নীতিবাজ-লুটেরা শক্তি একজোট হয়ে আজ মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা গায়েপড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে ঝগড়া বাঁধিয়ে চলেছে। এ অবস্থায় সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের জীবন ও মানমর্যাদা রক্ষার প্রয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সন্ধানদের বৃহত্তর ঐক্যে সামিল হওয়া ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর নেই।

আমরা যদি জীবিত এই ষাট/সত্তর হাজার মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত লক্ষ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও যুবসমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে এককেন্দ্রিক আদর্শিক অবস্থানে থাকি, তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে মহলবিশষের ষড়যন্ত্র ও অত্যাচারকে আমরা যেমন প্রতিহত করতে সক্ষম হবো পাশাপাশি আমাদের দাবির চলমান আন্দোলন আরো বেগবান হবে, আমাদের প্রাণের দাবি বাস্তবায়ন সহজ হবে। মনে রাখবেন, বিভক্ত ও বিভ্রান্ত হয়ে কোনো আন্দোলন যেমন গড়ে তোলা যায় না, তেমনি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের মর্যাদাও রক্ষিত হয় না। এককেন্দ্রিক ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মে জড়িত থাকলে ভুয়া ও ভুয়ার কারিগরসহ ষড়যন্ত্রকারীরা যতোই শক্তিশালী হোক তাতে তারা আমাদের কোনোই ক্ষতিসাধন করতে পারবে না। ফলে আমাদের বিজয় অবশ্যম্ভাবী। তাহলে আসুন, মুক্তিযোদ্ধাদের বৃহত্তর কল্যাণ ও স্বার্থে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রবহমান রাখার লক্ষ্যে আমরা আমাদের মধ্যকার সব অনৈক্য, দ্বিধাদ্বন্দ্ব, হিংসা ও সংকীর্ণতাকে জলাঞ্জলি দিয়ে, মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও ভুয়ামুক্ত মুক্তিযোদ্ধা তালিকার দাবিতে একটি অভিন্ন প্লাটফরমে একতাবদ্ধ হওয়ার লক্ষ্যে একটি ঐতিহাসিক বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলি।এদেশে বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই আন্দোলন ও সংগ্রামের অন্যতম প্রতীক। দেশের প্রধানতম রাজনীতিক ও সরকার প্রধান হিশেবে তিনিও চান, মুক্তিযোদ্ধা তালিকার অমুক্তিযোদ্ধাদের অপসারণ। আমরা যদি এ আন্দোলনকে একটা যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারি, তাহলে নিশ্চয়ই তিনি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। যেমন তিনি তো মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে আন্দোলনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তেমনি ভুয়ামুক্ত তালিকা প্রণয়নের দাবিতে আমরা যদি সর্বসম্মত মতৈক্য পৌঁছে একটা কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারি, তখন জননেত্রী তাতে অবশ্যই সাড়া দেবেন। আমরা তাঁর ওপর আস্থা রাখতে পারি।

লেখক :চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।