ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

অর্থ-আত্মীয়তা ও রাজনৈতিক প্রভাবই এখন মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার কার্যকর সংজ্ঞা!

২০২১ সেপ্টেম্বর ২৬ ১৪:৩৬:৪৬
অর্থ-আত্মীয়তা ও রাজনৈতিক প্রভাবই এখন মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার কার্যকর সংজ্ঞা!

আবীর আহাদ


আমার একান্ত ধারণা, ১৯৭১ সনে সাড়ে সাতকোটি মানুষের মধ্যে পাঁচ কোটি মানুষ ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ তথা স্বাধীনতার পক্ষে। ঐ পাঁচ কোটির মধ্যে নিশ্চয়ই পনেরো থেকে চল্লিশ বছরের কিশোর-যুবকের সংখ্যা ছিলো প্রায় আড়াই কোটি! কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত মহাসমরে জীবন দেয়া-নেয়ার চেতনা ও ব্রত নিয়ে সশস্ত্র হয়ে মাঠে নেমেছিলো মাত্র দেড় লক্ষের মতো কিশোর-যুবকরা! বলতে দ্বিধা নেই, বাকিরা ছিলো মুক্তিযুদ্ধের মাঠ থেকে নিরাপদ দূরত্বে। তারা ছিলো ভীরু-কাপুরুষ, দোদুল্যমান, সুবিধাবাদী ও সুযোগসন্ধানী। তাদের কেউ কেউ ছিলো পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সমর্থক। কেউ কেউ ছিলো রাজাকার আলবদর আলশামস আলমুজাহিদ যারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান রক্ষার লক্ষ্যে সশস্ত্র যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলো।

বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেদিন বিজয়ী বীরের অভিধা অর্জন করে ঘরে ফিরেছেন, সেদিন থেকেই তারা বিপুল সংখ্যক ঐ ভীরু-কাপুরুষ ও রাজাকার অপশক্তির প্রতিহিংসার শিকার হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যকার কিছুসংখ্যক যোদ্ধা অসচেতনভাবে আত্মীয়তা অথবা বন্ধুত্বের কারণে তাদের অতিরিক্ত অস্ত্রগুলো বহন করে পার্শ্ববর্তী থানা অথবা মিলিশিয়া ক্যাম্পে জমা দেয়ার সুবাদে ঐ অমুক্তিযোদ্ধাদের কেউ কেউ মুক্তিযোদ্ধা খাতায় নাম লিখিয়েছিলো। এদেরকেই সিক্সটিন ডিভিশন বলা হয়, তবে আনুপাতিক হারে এদের সংখ্যা ছিলো খুবই নগণ্য। আর রাজাকার অপশক্তির একটি অংশ যুদ্ধবিজয়ী কিছু আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মীয়তার সুবাদে মুক্তিযোদ্ধা বনে গিয়েছিলো! বাকি রাজাকারগুলোর মধ্যে কিছু কারাগারে এবং কিছু অন্য এলাকায় পালিয়ে গিয়ে সাধারণ্যে মিশে গিয়েছিলো।

পরবর্তীকালে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরি-বাকরির সুযোগ, তারও পরবর্তীতে মাসিক ভাতা প্রচলন করা হলেই ঐ সেই ভীরু-কাপুরুষ ও রাজাকার দলের মধ্যকার অতিলোভী, প্রতিহিংসাপরায়ণ ও পরশ্রীকাতরতার মানুষগুলো আত্মীয়তা, রাজনৈতিক প্রভাব ও অর্থের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ইউনিয়ন উপজেলা জেলা ও কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল, নেতা এমপি মন্ত্রী এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের স্বার্থান্ধ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ঢুকে পড়ে।

বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার সরকার মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পোষ্যদের প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে ৩০% কোটা দিলেও অমুক্তিযোদ্ধা, রাজাকার-চেতনা ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আমলাদের প্রতিহিংসা ও চক্রান্তের শিকার হয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা মুক্তিযোদ্ধা কোটার ফল লাভ করতে পারেনি বলা চলে। সুযোগটি হাতিয়ে নিয়েছে প্রশাসনের ঐ অমুক্তিযোদ্ধা, রাজাকার-চেতনা ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আমলারা! তারাই তাদের আত্মীয়-স্বজন ও অনুসারীদের ছলেকলেকৌশলে প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে ঢুকিয়েছে। অন্যদিকে এসব কার্যক্রমের পশ্চাতে বিপুল ঘুষের হোলিখেলা চলেছে যা এখনো চলছে। এসব প্রতিহিংসা ও ঘুষবাণিজ্যের কাছে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা পুরোপুরি অসহায় ছিলো বলেই নিজেরা তো বটেই, তাদের সন্তানরাও একই পরিণতির নিষ্ঠুর শিকার হয়েছে।

শুধু তাই নয়, বীর মুক্তিযোদ্ধারা যাতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উপযুক্ত চিকিৎসাসেবা না পান তার জন্য চলে আসছে জঘন্যতম চক্রান্ত। তাদের নামে ও তাদের চিকিৎসার লক্ষ্যে ঢাকার মিরপুরে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করেও মহলবিশেষের হাসপাতালটি দখলের চক্রান্তে পড়ে সেটি আজ ২৫/২৬ বছর বন্ধ! এখন হাসপাতালটি পুরোপুরি ব্যবহার অনুপযোগী। অপরদিকে সরকারি ঘোষণা থাকলেও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিত্সার ক্ষেত্রে চরম অবজ্ঞার শিকার হতে হয়। চিকিসা নিতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেখালে তা ছিঁড়ে ফেলা ও অপমান করে তাড়িয়ে দেয়ার বহু উদাহরণ ইতোমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। অথচ আমাদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মহোদয় ও আমলারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবরের সুন্দর ডিজাইন করার জন্যে অশেষ কষ্ট করে যাচ্ছেন! তারা যেনো চাচ্ছেন, মুক্তিযোদ্ধারা অতি তাড়াতাড়ি কবরে চলে যান! আর সেই কবর প্রকল্পের অন্তরালে রয়েছে তাদের ঘুষ ও কমিশন খাওয়ার রঙিন স্বপ্ন! দু:খজনক হলো, মুক্তিযোদ্ধাদের শৌর্য ত্যাগ রক্ত ও বীরত্বে অর্জিত স্বাধীন দেশের আলোবাতাস বেড়ে উঠে জীবনে যিনি যা কল্পনা করেননি, তিনি তাই হতে পারছেন, অথচ সেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি হীনমন্যতা ও হিংসার বাণ নিক্ষেপ করে তাদেরকে যারা অপমান অবদস্ত অবহেলা করে আসছে তাদের পশ্চাতে রাজনৈতিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করে এসেছে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ সরকারের একশ্রেণীর কর্তাব্যক্তি।

অমুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার ক্ষেত্রে শুধু মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল, (জামুকা) ও রাজনৈতিক নেতাদের দোষ দিয়েও লাভ নেই। মূল দোষী সরকারের অনুসৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই সংজ্ঞা ও নির্দেশিকা। বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭২ সনে কারা মুক্তিযোদ্ধা এ-বিষয়ক যে ঐতিহাসিক সংজ্ঞা দিয়েছিলেন, সেটাই ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সংজ্ঞা । তাতে বলা হয়েছিলো : 'মুক্তিযোদ্ধা মানে এমন একজন ব্যক্তি যিনি একটি সশস্ত্র সংঘবদ্ধ দলের (ফোর্স) সদস্য হিশেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন'। কিন্তু বিভিন্ন সরকারের কী দুঃসাহস, তারা বঙ্গবন্ধুর সেই সংজ্ঞাকে অবজ্ঞা ও বাইপাস করে নিজেদের দলীয় নেতা-কর্মী ও আত্মীয়-স্বজনকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর লক্ষ্যে খেয়ালখুশি মতো মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞা ও নির্দেশিকা তৈরি করে এ-সুবর্ণ সুযোগটি করে দিয়েছে। এ-সুযোগটি গ্রহণ করেছেন ঐসব দুষ্কৃতিকারীরা । এই ভয়াবহ দোষে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বিএনপি-জামায়াত ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সমানভাবে দোষী।

আগেই বলেছি, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বসাকুল্য সংখ্যা দেড় লক্ষের নিচে। কিন্তু অতীতের বিএনপি-জামায়াত ও হালের আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে সে-তালিকা বৃদ্ধি পেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে দু'লক্ষ পঁয়ত্রিশ হাজারের মতো যার মধ্যে প্রায় আশি/পঁচাশি হাজারই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। এরা অমুক্তিযোদ্ধা তো বটেই, এমনকি তার মধ্যে হাজার হাজার রাজাকারও রয়েছে! বলতে দ্বিধা নেই, মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও সরকারের গোঁজামিলের সংজ্ঞার সুযোগসহ মুক্তিযোদ্ধা খাতায় নাম তুলে জাতে ওঠার অভিলাষে বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা, এমপি, মন্ত্রীরা পর্যন্ত প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সময় "বীর মুক্তিযোদ্ধা" বনে গেছেন! সংগতকারণে তাদের কতিপয়ের নাম এখনে উল্লেখ করা হলো। তারা হলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাবেক বিএনপি সরকারের মন্ত্রী মির্জা আব্বাস, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী এডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, লে. কর্নেল মুহম্মদ ফারুক খান (অব) এমপি, জহিরুল হক মোহন এমপি, রুস্তম আলী ফারাজী এমপি প্রমুখ।

মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও অর্থ আত্মীয়তা ও রাজনৈতিক প্রভাবে যখন তখন যে কেউ মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাচ্ছে এমনতর পরিস্থিতি অবলোকন করে আমরা ২০১৭ সনে সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ব্যানারে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা উচ্ছেদের একটি আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটাই। পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে তাদের ঐতিহাসিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি তুলি। দাবি দু'টি আজ গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।

এই যে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার বা সরকারি আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর জঘন্যতম প্রবৃত্তি, এর মূলে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চরম হিংসা, হীনমন্যতা ও তাদের মর্যাদার প্রতি পরশ্রীকাতরতা। সেই মুক্তিযুদ্ধকালীন ভীরু-কাপুরুষ ও রাজাকারের দল তাই মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে অর্থ, আত্মীয়তা ও রাজনৈতিক শক্তিতে বলিয়ান হয়ে আজ মুক্তিযোদ্ধা খাতায় নাম লেখাতে সক্ষম হয়েছে। আর এ মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জঘন্য প্রতিযোগিতায় উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক নেতা, এমপি, মন্ত্রী, সচিব, সামরিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, শিল্পপতিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের সুবিধাবাদী ও প্রতারকচক্র শামিল হয়েছেন। মোদ্দা কথা, মুক্তিযুদ্ধে যে অধিকাংশ নিম্নশ্রেণীর দরিদ্র মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন, সেসব নিম্নশ্রেণীর দরিদ্র মানুষকে জাতীয় বীর বা ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সন্তানের মর্যাদা দেয়া যাবে না অমুক্তিযোদ্ধা হলেও উচ্চবিত্ত ও উচ্চশ্রেণীর টাউট বাটপাঢ়দেরও ঐ মর্যাদায় আসতেই হবে! এটাই হলো প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি একাত্তরের সেই ভীরু-কাপুরুষ-রাজাকার ও সুবিধাবাদী যারা আজ অর্থবিত্তে ও রাজনৈতিক শক্তিতে বলিয়ান তাদের প্রতিহিংসা ও পরশ্রীকাতরতার জ্বলন্ত প্রকাশ।

আমাদের অনেক আন্দোলন সংগ্রাম ও লেখালেখির কারণে অবশেষে সরকার মুক্তিযোদ্ধা তালিকার মধ্যে অবস্থানকারী অমুক্তিযোদ্ধাদের অপসারণ করার একটি কার্যক্রম শুরু করেছেন। তবে এও আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করে আসছি যে, যেমন তথাকথিত যাচাই বাছাইয়ে যদি বাদ যায় ৫ জন, অন্যদিকে বিশেষ বিবেচনায় যাকে তাকে জামুকা মুক্তিযোদ্ধা বানায় ১০ জনকে! আমাদের অনেকেরই ধারণা এই যে, বেসামরিক গেজেট, লাল মুক্তিবার্তা, মুজিবনগর, সামরিক বাহিনী, পুলিশ-বিজিবি-আনসারসহ অন্যান্য তালিকার মধ্যে বিরাটসংখ্যক অমুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। আমরা আশা করি এবং দাবি জানিয়ে আসছি যে, মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের নামে যে প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় পর্ব, তৃতীয় পর্ব বা শেষ পর্ব বা সমন্বিত তালিকা বলে যা প্রকাশ করছেন, তা যেনো সঠিক হয়। আমরা এখনো বলছি, মুক্তিযোদ্ধা চূড়ান্ত তালিকায় যেমন কোনো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বাদ যেতে পারবে না, তেমনি মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অমুক্তিযোদ্ধা রাখা যাবে না। বল এখন জামুকা তথা সরকারের কোর্টে। কীভাবে তারা খেলবেন সেটা তাদের এখতিয়ার। তবে এটা নিয়ে কোনো কারণে যদি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদেরই খেলতে হয়, তাহলে তার পরিণাম শুভ হবে বলে মনে হয় না।

যে হিংসা ও পরশ্রীকাতরতার শিকার হয়ে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধারা এতোকাল ভুয়াদের কারণে সমাজে অপমান ও অপদস্থতার শিকার হয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও যারা বীর মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদায় ভাগ বসিয়েছে, সরকার তথা জনগণের অর্থ লুটপাট করে চলেছে তাদেরকে কোনো অবস্থাতেই বহাল রাখা যাবে না।

লেখক :চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।