প্রচ্ছদ » শিল্প-সাহিত্য » বিস্তারিত
বদরুল হায়দার’র একগুচ্ছ কবিতা
২০২২ জানুয়ারি ০২ ১৫:৫৮:০৮
ছলনা লিপি
কালভদ্রে তোমার পরম আদ্রতার কাছে লুকাই দুঃখ
শত ফুল ফুটতে থাকে তোমার অজান্তে।
বেদনার তরী ভাসে দীর্ঘশ্বাসে। না জানা প্রবাসে
তুলনামূলক অবকাশে তুমি ঘিরে থাকো রাহুগ্রাসে।
ভাবনারা অতীতের কাছে পরাজিত হয় নিরুপায়।
মন বিবরণের গুঞ্জনে তোমার বিবেকের কাছে
ধরা পড়ো নিজের কাছে।
ছলনা লিপিতে যোগ হয় অপারগতার
ধারাবাহিকতা। আমি আত্মঘাতী প্রাণে
কার্যতালিকায় বিনয় বিরাগে নাম লিখি।
মানহানীর গ্লানির কাছে নিন্দিত ভেজালে তুমি
মুনাফা আসক্তি খোঁজো বোধের অমিলে।
মন বিরাগের টানে স্বপ্নরা লুকায় বেদনার ঘরে।
শতাব্দির পাহারায় তুমি সত্যকে আড়াল করে
বানিজ্য নীতির কলে ফোটাও বেদনা।
শহুরে চিটারে আমি ছন্দপতনের বোবাস্বরে
মনের আবেগে প্রেম বরাবরে লিখে যাই
প্রতারণার ঠিকানা।
প্রেম প্রণয় প্রত্যাশা
শুভ বুদ্ধির উদয় হোক আত্মশুদ্ধির হৃদয়ে।
সমালোচনার মুখোমুখি হয়ে স্বপ্নের সাগরে
নিমজ্জিত সমর্পনে জীবনকে আশ্রয় দিয়েছি তুলাদন্ডে।
রাগঢাকে লোনাজলে ডুব সাঁতারে তোমাকে
না-বলা কথার ছলে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চেয়েও
ভাসমান মনে লুকাতে চেয়েছি স্বপ্ন।
সদালাপী তপস্যায় হৃদ চমকানো মনভুমি
বাসনার কাছে বশীভূত হয় চড়াদামে।
উদাসীনতা নিষ্ঠুরতায় রূপ নেয়। সুকোমল
উদারতা আমাকে নতুন জীবনের দিকে টেনে নেয়।
প্রেম প্রণয় প্রত্যাশা আমাকে সত্যের মুখোমুখি করে।
বিমুগ্ধতার দুঃখরা
বিমুগ্ধতা তোমার চারপাশের ইশারায় শতভাগ
বিদ্যুতায়নের আশ্বাস আমাকে জাগিয়ে তোলে।
ডাক বিভাগের জনযোগাযোগে আলো আঁধারের
হৃদয়ে শান্তনা ও প্রাপ্তির কথা ভুলে ঝরাফুলে
বেদনার নাম লিখি।
স্মরণখোলার আভিজাত্যে সত্য গোপনে লুকাতে থাকে।
বিনিময়ে তোমার ছায়াতে বেলাশেষে
আলোমাখা রোদ পাল্টায় পাষাণে।
গোধূলির আকাশে দুঃখ তারাপুঞ্জ হয়ে স্বপ্নের
শাসনে ডুব দেয় খোলামনে। ভালোবাসার সাজানো
অভিধানে ভিড় জমায় বিরহী সত্তা।
কান্নার পাহাড়ে শুরু হয় লাগাতার প্রেমের লক ডাউন।
দুরাশার আশা
শতবর্ষের আশাকে তাক করে রাখলাম আমার হৃদয়ে।
স্বপ্নের লালিত ভাঁজপত্রে তোমার দুরাশা
তিলে তিলে টেনে নেয় মনের অজান্তে।
কোলাহলে গরমিল হানাদেয় পাশার গোপনে।
আমি ঋষিমনে ভাবনার উজানে বেদনাকে টেনে নিই
হিসাবের প্রয়োজনে। দুঃখ দুরাশা বাসাবাধে প্রাণে।
আমি লকডাউনের অভিধানে কান্নার পাহাড় এনে
যোগ করি করোনার গানে।
দিন ও রাতের ব্যবধানে তুমিও আমি’র মায়াযানে
ভালোবাসার পাষানে আলাদা জীবনে ঘরবাঁধি সহজিয়া টানে।
মায়াযান
তোমার দুঃখগুলো তুমি লুকিয়েছো সুখের বাসরে।
আসরে মেতেছো নিরাবেগে। মেঘে ঢাকা পণ্যের চাহিদা ঘরে
সুদূর ওপারে সহস্র ব্যাথার অনুরাগে ভাসিয়েছি স্বপ্নতরী।
বিনীত আবেগে বাসা বাঁধে ভাবাবেগ। ঘোরলাগা সর্বনাশা
মনের দুয়ারে ভালোবাসার পাষানে টানে প্রেমের কুয়াশা।
সমঝোতার আড়ালে চলে শতাংশের গুণভাগ। আমি
রাগ-অনুরাগ পৃথক আনন্দে রেখে প্রেমের সিটিতে
সেঞ্চুরিতে যোগ করি মন বিলিয়ন হুমকিতে।
সুখ দুঃখের সাথী নেই কোনো কালে। পালের বাতাসে
কিংশুক কর্তব্য বিমুখ আশালতা ধরে রাখে মায়াযানে।
দুঃখের স্বজন
ছাপা অক্ষরের পাশাপাশি সময়ের সাথে
তাল মিলাতে চেয়েছি তোমাকে ঘিরে। অপারগতায়
মনের অবনতির কাছে হার মেনে উৎকণ্ঠায় রেখেছি যোগাযোগ।
অন্তর মাস্টার প্লানে চলে দু’মুখি বাণিজ্য রোগ আর
মন ত্যাগের হিড়িকে চলে পাইরেটেড প্রেমের অভিযোগ।
বিক্রি হচ্ছে প্রেমপ্রীতি। স্মৃতি পরিবহনের যাত্রী।
বাড়তি লোভের প্রাপ্তির আশায় ভোগান্তির দ্বন্দ্বে ভাঙে
ভালোবাসার প্রশান্তি।
বিধিভঙে অন্তর মহলে চলে ভ্রান্তি অভিমান
অপেক্ষার ফলাফলে প্রশ্নবিদ্ধ হয় হৃদয়ের গান।
বিচ্ছিন্ন নাটকে শুরু হয় ভাগ্যশীর্ষে অশান্তির হৃদয় বন্ধন।
দৃশ্যমান পন্ডশ্রমে সরগরম অন্তর গাঁয়ে নামে
সহনশীল হতাশা। আশার চোরাবালিতে ফোটে শান্তি।
বেদনার অঙ্গরাজ্যে শুরু হয় হাইপার টেনশন। তুমি
পারসোনাল জরুরি স্পেসে থাকো উদাসীন।
আমি বাধ্যতামূলক রূপান্তরিত বেদনা দমনে
প্রাণের অনুসন্ধানে ক্রান্তিকালের পালে টানি
সমুহ ভোগান্তি।
দ্বিগুণ ব্যয়ের রশি টেনে ধরে ক্রটিপূর্ণ প্রেমের উষ্ণতা।
মীমাংসার চূড়ান্ত হৃদয় অনুসন্ধানে পাষানের কানে
জড়ো হয় বিরহীর গান।
অফারের নামে দফারফার শপিংমলে চলে
অনলাইন প্রেমের দরদাম। জমকালো
আলোর বন্যায় ডোবে বিশ^াসের প্রেমতরী।
স্মৃতি রেখার ভ্রমণে তুমি আত্ম অভিমানে
ক্ষতিপূরণের মনে পদোন্নোতির বিরূপ আকর্ষণ।
আমি বিরহের আবাসনে দুঃখের দরশনে
শুরু ও শেষের খেলা শেষে ভালোবাসি দুঃখের স্বজন।
জ্যোৎস্নার লুকোচুরি
লক ডাউনের মনে গণ কোয়ারেন্টাইনে প্রেম
কাগুজে বাঘের প্রাণে বেঁচে থাকে। অলস চিঠিতে
লেখা হয় মনচক্রের সিক্রেট রুট।
হৃদয়ে ভাবনা জট লেগে থাকে অচল প্রেমের ধর্মঘটে।
বেদনা সাইটে ভোলামন অনলাইন রেকর্ডে
বিরুদ্ধ ব্যারাকে শান্তনার ইতিটানে। অপমানে
বন্ধ যোগাযোগে নতুনত্ব যোগ হয় বোধের আগুনে।
শর্তমেনে সতর্কতা কিনে বন্দিহয় হৃদয় জমিন
মন ফাঁকির ব্যবহারিক জরিপে আনে ঘাটতি বিরোধ।
প্রেম প্রতারণার পাষানে টানে বিরহের সারাবেলা
স্বপ্নের অভিবাসনে দীর্ঘস্থায়ী রুপনেয় বৈষম্যের টানে।
ভিত্তিহীনতার অবাক করা নির্মাণ শুরু হয় শব্দ বানে
বেকার হৃদয়ে থেকে আসে সম্পর্কের উঠা-নামা।
দ্বৈত প্রেম নিবন্ধণে বিধান অমান্য করে
সময়ের বিরুদ্ধ পাষাণ।
নিরাপত্তার অভাবে ভাগ হয় প্রতিদিন
হৃদয়ের যোগ বিয়োগ গুণভাগের উপভোগ।
অন্তর বিরতি চলে সু-মন্তর যাদুমন্ত্রে।
দুঃখের অরুচি হার মানে অভিমানে
ব্যর্থতার গ্লানি থেকে দৃশ্যমান রসিকতা
জ্যোৎস্নার লুকোচুরি ভুলে থাকে।
প্রেমের অভিবাধন
ভালোবাসার আশাকে তুমি পাষানের মনে
লুকাতে চেয়েছো। কর্মযোগে ভোগের বিলাসে
যোগ করেছো স্বপ্নকে। বাজার মূল্যের
রেডিমনে আমদানি করো বাণিজ্য আবেগ।
সীমানার দাগ টেনে বুকে নিই হৃদয়ের পরিসীমা
অজানা দুঃখ মেনে আসে বুকের জমিনে।
দিনও রাতের অবয়ব পাল্টে যায় লোভের উজানে।
চাঁদ তারা নক্ষত্রের আলো জে¦লে মুছে দেয়
কালোরঙ বেদনার উচাটন।
সত্য সুন্দর আনন্দধারা পৃথিবীতে নেমে আসে।
প্রেম চিরায়ত বাঁধন হারার গান গেয়ে
আলোমতি প্রেম কুমারের কাহিনীতে
হৃদয় আবেগে হয় সোনাবান।
কিস্তিমাতে স্বার্থের আঘাতে ভালোবাসার বান-তুফানে
বিশ্বাসের দীর্ঘ শ্বাসে বেঁচে থাকে যন্ত্রনার অপ্রিয় জীবন।
না বলা কথার বন্দি মনের সিটিতে ভালোবাসার
মুখোমুখি হয় স্মৃতির অবদমন।
প্রতারণা চেহারা পাল্টাচ্ছে ডিজিটালে। আমি
বিশ্ব ভাবনায় ন্যায় ও শান্তিকে সঙ্গী করে
ভালোবাসি প্রেমের অভিবাধন।
বিরহের হৃদরোগ
ভালোবাসার কথায় ইদানিং বরফ গলে না।
বন্দিদশা আর দিল ভরসার যাতাকলে
মন ভোমরার গুঞ্জন করে দরিয়ার কূলে
স্বপ্নময়ী বিবিধ দূষণ।
সমযোতা মমতা আদর মানবতা ভুলে তুমি
নিঃসঙ্গের মাতালে পাষাণের প্রাণে টানো বিরোধীতা।
হরিদাস প্রেমের কপালে জন্ম নেয় রসিকতা। ব্যর্থতার
অপারগতায় মন ভুলে যায় বৈষম্যের অমরতা।
সভ্যতার ভরসা নদীর বাঁকে নৈর্ব্যক্তিক কুটক্তি আমাকে
আশাহত করে।
ভালোবাসার নিষিদ্ধ নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন যুক্ত হয়
ভাবের প্রযুক্তি। নির্মোহ নিয়তি প্রেমে ধরা দেয়
অশান্ত উজানে। স্মৃতিভারা বেদনার দামে ক্রয় করি
বিস্মৃতির দুখের সাহারা।
বোধের খরায় নামে কান্নাভরা ভাবাবেগ।
ভালোলাগার আরোগ্য প্রেম দুঃখ বিরাগে টানে
বিরহের হৃদরোগ।
স্বপ্নতারা দুঃস্বপ্নের আকাশে বন্দি মনের সারৎসার
ভালোবাসা শব্দটি এখন প্রেমহীন হতাশার কারাগার।
স্বপ্ন পরবাসি
নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার আক্ষেপ তোমাকে ঘিরে।
পরিবেশ বান্ধব মনস্ফিতির পদক্ষেপ চলে আবেগ নিরাপত্তায়।
ভার্চুয়াল প্রেমের দখলে নামে লাভ উইদ আউট হাট।
গাফিলতির বাণিজ্য সংক্রান্তি।
আমি অন্তর খেলাপীর ঋণে তদন্তের অধীনে জীবনে
ঘুরে দাঁড়াই শঙ্কায়। হোঁচট খাওয়া আশঙ্কায় মেগাপ্রেমে
নিজেকে জড়াই মন কোয়ারেন্টাইনে।
হৃদয় অবগতির রসি টেনে ধরি অভিমানে। অনড় লকডাউনে
তুমি প্রযুক্তির কারিগরি ভুলে সুদাসলে বাজার বৈষম্যে রাখো
সুবিধার খোলামন।