ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচ্ছদ » অর্থ ও বাণিজ্য » বিস্তারিত

‘পণ্যের দাম বাড়লেই সরকারের সমালোচনা করা যাবে না’

২০২২ জুন ২৯ ১৩:৫৮:৪৬
‘পণ্যের দাম বাড়লেই সরকারের সমালোচনা করা যাবে না’

স্টাফ রিপোর্টার : কোনো পণ্যের দাম বাড়লেই সরকারের সমালোচনা করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি বলেন, দাম বাড়লেই দেখি অনেকে সরকারের সমালোচনা করেন। আমাদের আমদানিনির্ভর বাজারে অনেককিছু বিবেচনা করেই পণ্যের দাম নির্ধারণ হয়। ভোক্তারা সবসময় দামে কম কিন্তু মানে ভালো পণ্য চান। দুটো সবসময় একসঙ্গে হয় না।

বুধবার (২৯ জুন) কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্যাবের) ভার্চুয়াল প্রতিনিধি সম্মেলন ও ক্যাবের তথ্যভিত্তিক ডিজিটাল পোর্টাল ভোক্তাকণ্ঠ’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশির প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। পরে তপন কান্তি ঘোষ প্রধান অতিথির দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি বলেন, শুধু বাজার সুবিধা থাকলে হবে না, যখন আমরা পণ্যের মান ঠিক রেখে আন্তর্জাতিক বাজরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বাজার পরিচালনা করতে যাই, তখন দাম বাড়তে পারে। এটা ভোক্তাদের বুঝতে হবে। একটা পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমাদের সবদিকে নজর রাখতে হয়। অনেক সময় পণ্য আসতে দীর্ঘসময় লাগে। এই সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যায়। তখন চাইলেও হুট করে কমানো যায় না। এজন্য দাম বাড়লেই অনেকে অনেক কথা বলেন, সরকারের সমালোচনা করেন। দাম বাড়লেই কিন্তু সরকারের সমালোচনা করা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, ভোক্তা অধিকার শক্তিশালীকরণ একটি ব্যাপক ধারণা। এটির আইন আছে, অধিদপ্তর আছে। তারা নিয়ন্ত্রণমূলক কাজ করছে। একটা ঘটনা ঘটে গেলে তা ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু ভোক্তা অধিকার হচ্ছে এমন, যেসব বিষয় আমাদের ভোক্তাদের ওপর প্রভাব পড়ে সেগুলোর দিকে নজর রাখা। এজন্য আমাদের আরও ব্যাপক কাজ করতে হবে। যদি আমাদের ব্যবসায়ীরা ভেজাল না দেন, মূল্য সঠিক রাখেন। তাহলে তো এসব অধিদপ্তরকে কাজ করতে হয় না।

এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, অনেকেই আমাদের প্রশ্ন করেন, আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি কি না। আমরা স্বাধীনভাবেই কাজ করতে পারছি। ক্যাবসহ সবাই যেভাবে ভোক্তা অধিকারকে বারবার সামনে আনছেন, আমাদের কাজের ক্ষেত্রে আরও বেশি সুবিধা হচ্ছে। আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। এট অব্যাহত থাকবে। ক্যাবকে কীভাবে শক্তিশালী করা যায় সেদিকে আরও পরিকল্পনা করা দরকার। আমরা একসঙ্গে কাজ করলে ভোক্তাদের অধিকার আরও রক্ষা করতে করতে পারবো।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ও ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, আমাদের জাতীয়ভাবে মাথাপিছু আয় বাড়লেও করোনাপরবর্তী নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আয় কমেছে এবং উচ্চবিত্তের বেড়েছে। বিষয়টির দিকে নজর দিতে আমরা সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। পৃথিবীর অনেক দেশেই জিডিপি কমেছে। বাংলাদেশে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অব্যাহত আছে। কিন্তু এই প্রবৃদ্ধির ফল যেন সাধরণ মানুষ পায়। কারণ উচ্চবিত্তের প্রবৃদ্ধি বাড়বে আর সাধারণ মানুষ অল্পকিছু পাবে, তা সামঞ্জস্য নয়। সরকারকে এ ব্যাপারে সুনজর দেওয়ার অনুরোধ করছি, যাতে সাধারণ নিম্নবিত্ত মানুষের আয়ের জায়গা বাড়ে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ড. সহদেব চন্দ্র সাহা, ক্যাবের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম, ভোক্তাকণ্ঠের সম্পাদক কাজী আব্দুল হান্নান প্রমুখ।

(ওএস/এএস/জুন ২৯, ২০২২)