ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » ফিচার » বিস্তারিত

সাপ শরীরে জড়িয়েই তাদর জীবন-জীবিকা

২০২২ নভেম্বর ০৬ ১৪:১২:৫২
সাপ শরীরে জড়িয়েই তাদর জীবন-জীবিকা

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : মরিয়ম, হাসনা ও লিপি। সবার শরীরে জড়িয়ে আছে সাপ। হাট-বাজার ও শহরে এ সাপ নিয়ে তাদের চলছে নানা কসরত। এমন কসরত দেখিয়ে উপার্জন করছে নগদ টাকা ও ধান-চাল। এ দিয়ে তাদের চলে জীবন-জীবিকা।

শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকালে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা শহরে দেখা মেলে বেদে সম্প্রদায়ের ওইসব নারীদের। তারা যশোর থেকে ছুটে এসেছেন এখানে। এ শহরের বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে সাপের খেলা দেখাচ্ছিলেন। এ সময় উৎসুক জনতা খেলা দেখে ৫-১০ টাকা করে দিচ্ছিলেন সর্পরাজ এই নারীদেরকে।

জানা যায়, যশোর এলাকার বেদে সম্প্রদায়ের প্রায় ২৫টি পরিবার এসেছে গাইবান্ধার মীরপুরে। এখানে অস্থায়ী তাবুর নিচে বসবাস। এ পরিবারের স্বামী-স্ত্রী-সন্তানেরা সকাল হলে বেরিয়ে পড়ে প্রত্যান্ত অঞ্চলে। পেশা হিসেবে সবার কাঁধে রয়েছে সাপ ও তাবিজ। এভাবে ছুটে চলা হাট-বাজার-শহরসহ প্রত্যান্ত গ্রমাঞ্চলে। এসব জায়গায় দেখানো হয় সাপের খেলা। এরই মধ্যে বিক্রি করছে তাবিজ। অনেকে প্রয়োজনে ওইসব তাবিজ কিনে নিচ্ছেন। কেউবা সাপের খেলা দেখে টাকা দিচ্ছেন তাদের।

এভাবে বেদেরা আয়-রোজগার করে চলেছেন। এভাবেই চলছে তাদের জীবনযাপন। একটু সুখের জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। একই জায়গা বেশী দিন থাকেন না। যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়ায় এখানে-ওখানে। যেন জীবনযুদ্ধে বেঁচে থাকা তাদের।

লিপি আক্তার নামের এক বেদে জানান, স্থায়ী ঠিকানা যশোর জেলায় হলেও নেই তাদের ঘরবাড়ি। জীবিকার তাগিদে ভ্রাম্যমাণভাবে ঘুরতে হয় দেশ থেকে দেশান্তরে। মূল পেশা তার সাপের খেলা দেখানো। এ খেলা দেখে মানুষ খুশি হয়ে যা দেয়, তা দিয়ে চলে সংসার।

হাসনা বেগম বলেন, সাপই আমাদের জীবন। এ থেকে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকা আয় হয়। এ উপার্জনের টাকায় কোনোমতে জীবিকা নির্বাহ করা হয়।

এই মরিয়ম বেগম নামের আরেক বেদে বলেন, আগের মত হাটে-বাজার-গ্রামাঞ্চলে ব্যবসা হয় না। সাপের খেলা দেখতে মানুষের আগ্রহ কমেছে। সাপও তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। তাই পেশায় ভালোভাবে দিন কাটছে না।

গাইবান্ধার মোসলেম উদ্দিন নামের এক শিক্ষক জানান, এই মানুষগুলোর নিদিষ্ট কোন জায়গা নেই। ঝড়-বৃষ্টি ও শীতে তাদের কষ্টের অন্ত নেই। তাদের দুঃখ-কষ্টের সীমা নেই। দরিদ্র এই মানুষগুলোর সামাজিক মর্যাদা বাড়ানো দরকার।

(এসআইআর/এএস/নভেম্বর ০৬, ২০২২)