ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

অগ্নিঝরা মার্চ বাঙালির রক্ত দেওয়ার মাস, চরম ত্যাগের মাস

২০২৩ মার্চ ০২ ১৫:০৫:৩৬
অগ্নিঝরা মার্চ বাঙালির রক্ত দেওয়ার মাস, চরম ত্যাগের মাস

মোহাম্মদ ইলিয়াছ


আমাদের রক্ত দেওয়ার মাস মার্চ। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাঙালির জীবনে নানা কারণে এ মাস অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস। অসংখ্য ঘটনার উজ্জ্বল সাক্ষী। এ মাসেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য যে আগুন জ্বলে উঠেছিল- সে আগুন যেন ছড়িয়ে পড়ে বাংলার সর্বত্র। এরপর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সিঁড়ি বেয়ে একাত্তরের মার্চ বাঙালির জীবনে নিয়ে আসে নতুন বারতা। এ বছরের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

মার্চ এলেই মনে পড়ে অনেক কথা, অনেক স্মৃতি, অনেক ঘটনা। ১৯৭১ সালের মার্চ শুধু একটি মাস নয়, একটি অগ্নিঝরা সময়। এই সময়ে তৈরি হয়েছে আন্দোলনের কাহিনি, ছলনার কাহিনি, প্রতারণার কাহিনি, একটি স্বাধীন দেশের ক্রূর বিশ্বাসঘাতক শাসকগোষ্ঠীর নিজের জনগণের ওপর অশ্রুতপূর্ব নির্মমতার কাহিনি, একটি জনগোষ্ঠীর জেগে ওঠার কাহিনি, একটি দেশ সৃষ্টির কাহিনি। মার্চ আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে অনেক, দিয়েছেও অনেক এবং প্রতিদিনই নানা কর্মসূচির মাধ্যমে কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের স্বাপ্নিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ঘৃণা-ধিক্কার জানাচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের।

১৯৭১ সালে এসে যে রাজনৈতিক সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করে- তার গোড়াপত্তন হয়েছিল বহু বছর আগে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের শিক্ষা আন্দোলন ও ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের মার্চে এসে বাঙালির স্বপ্নসাধ যৌক্তিক পরিণতিকে স্পর্শ করে।

১৯৭১ সালের ১ মার্চ পাকিস্তানি স্বৈরাচারী সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের নির্ধারিত অধিবেশন বাতিল করেন। এ অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল ৩ মার্চ। ২ মার্চ এসেছিল জাঁকজমক সহকারে ছাত্র আন্দোলনের মিলনভূমি- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায়, যে বটতলা ছিল সে সময়কার ছাত্র আন্দোলনের মিলনভূমি। আর এ বটতলাতেই ২ মার্চ ঘটল অভাবনীয় ঘটনা। ওড়ানো হলো প্রথমবার সবুজের বুকে বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত প্রথম জাতীয় পতাকা। আমাদের নিজের পতাকা, আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক। কী উল্লাস তখন উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে; না দেখলে কাউকে সে উল্লাসের ব্যাপকতা বোঝানো অসম্ভব।

৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান তা স্থগিত ঘোষণা করেন। এতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় ছাত্র-জনতার মধ্যে। পূর্বাণী হোটেলে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তখন সংসদীয় দলের বৈঠক চলছিল। মুহূর্তে গর্জে ওঠে পুরো দেশ। পূর্ববাংলার ছাত্রসমাজ ও সাধারণ মানুষ স্লোগান তোলে ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো।’ সবাই গগনবিদারী স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে ছুটল হোটেল পূর্বাণীর দিকে, নেতার নির্দেশের জন্য। নেতা আন্দোলন আরো তীব্র করার আহ্বান জানান এবং পরের দুই দিন সারা পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল পালনের ডাক দেন। ঘটনাপরম্পরা থেকে এটুকু বুঝেছি, জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণার কারণে পহেলা মার্চেই মৃত্যুঘণ্টা বেজে উঠেছে পাকিস্তানের। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ৩ মার্চ সারা দেশে পালিত হয় হরতাল।

৫ মার্চে সারা দেশে হরতাল হয়েছিল জনতার ওপর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদস্বরূপ। তখন বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে এমনিতেই চলছিল বিক্ষোভ, বন্ধ ছিল অফিস-আদালত-দোকানপাট সব কিছু। তাঁর নির্দেশই তখন আইন; মুকুটহীন সম্রাটের আইন।

৭ মার্চ সাবেক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। এ সময় পাকিস্তানি শাসকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। মরতে যখন শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি, আরো দেব; এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লা। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’

বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ মুহূর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। তাঁর ঘোষণার পর বীর বাঙালি সেই যে ঘর থেকে বেরিয়েছিল, বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত, দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত আর ঘরে ফেরেনি। রেডিওতে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ প্রচার না করায় প্রচণ্ড ক্ষোভে ফেটে পড়ে সাধারণ মানুষ। সেদিনই সন্ধ্যায় শাহবাগে রেডিও অফিসে বোমা হামলা চালান কয়েকজন ক্ষুব্ধ তরুণ যুবক। তাঁদের মধ্যে একজন মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিক হারুন হাবীব। তিনি তাঁর ‘জনযুদ্ধের উপাখ্যান’ গ্রন্থে এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমরা রেডিও অফিসের আশপাশ দিয়ে বার কয়েক গাড়ি নিয়ে ঘুরলাম। আমাদের গতিবিধি যে সৈন্যদের নজরে পড়েছিল তা আমরা ঘুণারেও টের পাইনি। ...হঠাৎ স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের গুলির শব্দ কানে এলো। গাড়ির স্টিয়ারিং ধরে ঘটনার আকস্মিকতায় মুরাদ লাফিয়ে উঠল। পর পর ছোড়া হলো কয়েকটা হাতবোমা। প্রচণ্ড শব্দে সেগুলো ফাটল।... বুলেটবিদ্ধ হলো গাড়িটা।’

৭ই মার্চের ভাষণ এভাবেই তরুণ প্রজন্মকে ঘর থেকে টেনে এনেছিল সংগ্রামের পথে। এ ভাষণে ছিল না বলা অনেক কথা। তবু দেশবাসী যা বোঝার বুঝে ফেলে। তারা বুঝে ফেলে, রক্ত ঝরানো ছাড়া মুক্তি মিলবে না। রক্ত দিতে প্রস্তুত হতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ১৯ মিনিটের ঐতিহাসিক জ্বালাময়ী-প্রেরণাদায়ী ভাষণ উত্তপ্ত করে তুলল উত্তাল মার্চকে। পাকিস্তানের সামরিক জান্তার প্রতি হুঁশিয়ারি আর বাঙালিদের করণীয় সম্পর্কে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়ে তিনি সবাইকে শুধু মুক্তিপাগল করেই তোলেননি, সবার মধ্যে স্বাধীনতার আকাক্সাও তীব্র করে তোলেন, আগামীর গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতির সংকেত দিয়ে দেন, যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন।

৮ মার্চ সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা বেতার কেন্দ্র থেকে রেসকোর্স ময়দানে প্রদত্ত বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়ে সম্প্রচার শুরু হয়। অন্যান্য বেতার কেন্দ্র থেকেও তা রিলে করা হয়। এদিকে ক্ষুব্ধ শিল্পীরা বেতার-টেলিভিশনে শর্ত দিলেন, ‘আমরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করব, তবে সব অনুষ্ঠান আন্দোলনের অনুকূল হতে হবে।’ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপ শিল্পীদের এ শর্ত মানতে বাধ্য হয়। এ ঐতিহাসিক ভাষণের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কার্যত গোটা পূর্ব পাকিস্তানের শাসনভার গ্রহণ করেন। ৮ মার্চ থেকে ঢাকাসহ পূর্ব পাকিস্তানের সব শহর-গ্রামে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, কলকারখানা জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্ধ করে দেয়।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছে পূর্ব পাকিস্তানের সবাই। আওয়ামী লীগের নির্দেশে তখন চলছে সারা পূর্ব পাকিস্তান। কার্যত পাকিস্তানি শাসন অচল। চলছে ডিফেক্টো ‘প্রেসিডেন্ট’ শেখ মুজিবের শাসন। এমনি টালমাটাল পরিস্থিতিতে অনেক পানি ঘোলা করার পর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আসেন ১৫ মার্চ বিকেলে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার জন্য। আসলে আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণই ছিল মূল উদ্দেশ্য।

পরদিন ১৬ মার্চ বিকেল ৩টায় বৈঠক হলো। প্রায় আড়াই ঘণ্টার বৈঠকের ফল তথৈবচ। ওই সময় পশ্চিম পাকিস্তানে বসে ভুট্টো কষছিলেন অন্য চক্রান্ত। তিনি সংখ্যালঘিষ্ঠ দলের নেতা হয়েও গোঁ ধরছিলেন যে তাঁকে ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তিনি তা মেনে নেবেন না। তার মানে, ইয়াহিয়া-মুজিব আলোচনা মানেই ইয়াহিয়া-ভুট্টোর সাজানো নাটক। সংবাদপত্রে এমনই মন্তব্য করা হচ্ছিল, বিশেষ করে ইত্তেফাকে। ১৯ মার্চের দুটি ঘটনা পরিস্থিতিকে করে তোলে আরো উত্তাল। একটি ছিল দুপুরের একটু আগে শেখ মুজিব আর ইয়াহিয়ার আলোচনা বৈঠক; যে বৈঠকের ফলাফল ছিল আগের বৈঠকগুলোর মতোই নিষ্ফল। ইঙ্গিত পাওয়া যায় অচলাবস্থার। আরেকটি ঘটনা ছিল সেদিন জয়দেবপুরে (গাজীপুরে) জনগণের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের হঠাৎ সংঘর্ষ, যে সংঘর্ষে অনেক বিক্ষোভকারী ও নিরীহ মানুষ নিহত হয়। আহত হয় অগণিত মানুষ। সংঘর্ষটি ঘটেছিল যখন পাকিস্তানি সেনারা জয়দেবপুর সেনানিবাস থেকে ঢাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছিল।

১৯ মার্চ সত্যিকার অর্থে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের আগেই মুক্তিযুদ্ধ, যখন সারা প্রদেশে চলছে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে লাগাতার অসহযোগ আন্দোলন। এরই মধ্যে ২০ মার্চ সকালের দিকে শুনলাম বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে রমনার প্রেসিডেন্ট ভবনে। এটি চতুর্থ দফা বৈঠক, এ হঠকারী প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। সন্ধ্যায় টেলিভিশনের খবরে জানা গেল, ২৩ মার্চ আবার শেখ মুজিবের সঙ্গে ইয়াহিয়া খানের আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে; কিন্তু বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়নি, স্থগিত করা হয়।

একে একে পার হয় ঝঞ্ঝাবিুব্ধ ২৫টি দিন। ২৫ মার্চ মধ্যরাতের অন্ধকারে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালির ওপর হামলে পড়ে। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নাম দিয়ে শুরু করে নৃশংস আক্রমণ, ব্যাপক গণহত্যা। নির্বিচারে হত্যা করে নিরীহ বাঙালিকে রাস্তায়, বাড়িতে, দোকানে, অফিসে, রেলস্টেশনে, বাস টার্মিনালে, বন্দরে, পুলিশ নিবাসে, যেখানে বাঙালি ছিল সেখানেই। এক রাতেই মৃত্যুপুরী বানিয়ে দেয় সারা ঢাকা শহরকে। অন্যান্য শহরেও ছিল হত্যার উৎসব। বেইমানি করল পাকিস্তানের সামরিক জান্তা, শাসকগোষ্ঠী।

প্রতারণা করল বাঙালির অবিসংবাদিত নেতার সঙ্গেও, যিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করার কিছুণের মধ্যেই বন্দি হলেন সামরিক জান্তার হাতে আর নীত হলেন পাকিস্তানের কারাগারে; যেখানে নিত্যদিন মুখোমুখি হয়েছেন মনুষ্যরূপী হায়েনাদের। স্বাধীনতার ঘোষক উপস্থিত ছিলেন না; কিন্তু তাঁর অনুগত সাড়ে সাত কোটি বাঙালি ২৬ মার্চ ভোররাত থেকেই শুরু করল মুক্তিযুদ্ধ।

দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর লাল-সবুজ পতাকার দেশ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। লাখ লাখ প্রাণের বিনিময়ে বিশ্ব মানচিত্রে নতুন একটি দেশের অভ্যুদয় ঘটে। মার্চ মাসেই বাঙালি জাতি তার চেতনাকে নতুন করে শাণিত করে। নতুন শপথে বলীয়ান হয়। অত্যাচার, নিপীড়ন আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে স্মারক মাস হিসেবে মার্চ প্রতিবারই আমাদের নতুন করে পথ দেখায়। মার্চ আমাদের গৌরবের মাস, মার্চ আমাদের অহংকারের মাস, মার্চ আমাদের স্বাধীনতা ঘোষণার মাস। মার্চ আনুষ্ঠানিক সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরুর মাস। এ মাসেই বাঙালি অর্জন করে কাঙ্খিত স্বাধীনতা। নিয়েছে প্রাণ, নিয়েছে সম্ভ্রম, নিঃশেষ করে দিয়েছে অনেক শান্তি; তবে দিয়েছে স্বাধীনতা, দিয়েছে সম্মান, দিয়েছে মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়ার অধিকার। এ মার্চ মাস বাঙালির মধ্যে জাগিয়ে তুলেছে পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে অন্য অঞ্চল থেকে আগত আগ্রাসীদের দ্বারা নির্যাতিত, লুণ্ঠিত জাতি থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে স্বাধীন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তীব্র বাসনা। তাই মার্চ মাসকে আমরা ভুলতে পারি না; ভুলবও না। হরিষে বিষাদের এ মাস আমাদের ইতিহাসে লিখিত হয়ে থাকবে স্বর্ণারে। তাই বলি, মার্চ আমাদের রক্ত দেওয়ার মাস, বাঙালির চরম ত্যাগের মাস, আমাদের স্বাধীন, মুক্ত হওয়ার মাস।

লেখক : সহকারী পরিচালক (অর্থ ও বাজেট), অবসর সুবিধা বোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা।