ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচ্ছদ » মুক্তচিন্তা » বিস্তারিত

বঙ্গবন্ধুর ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা গড়বো

২০২৩ মার্চ ১৬ ১৬:৫৪:১৯
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা গড়বো

আবীর আহাদ


শুক্রবার ১৭ মার্চ। বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী। আবহমান কালের বাঙালি জাতির এক মহা-ঐতিহাসিক গৌরবের দিন। আমরা সেই গৌরবে গৌরবান্বিত। আমরা আমাদের জীবদ্দশায় বঙ্গবন্ধুকে নিবিড়ভাবে দেখেছি। চিনেছি। জেনেছি। বুঝেছি। তিনিও বাঙালি জাতিকে পরম আস্থা ও মমতার পরশে নিজের হৃদয়ে স্থান দিয়েছেন। বাঙালির স্বাধীনতা, রাজনৈতিক, আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষ্যে তিনি তাঁর জীবন-যৌবনের মধুর দিনগুলো বারবারই মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বিজাতীয় শাসক-শোষক পাকিস্তানের কারান্তরালে বিসর্জন দিয়েছেন। নানান দু:খ-কষ্ট ও মৃত্যুকে উপেক্ষা করে প্রমাণ করেছেন যে, তিনি আমাদের লোক। বাঙালির পরম সুহৃদ। বন্ধু। অভিভাবক। তাইতো তিনি বঙ্গবন্ধু। জাতির পিতা।

আমরা বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে অতি আপন ভেবে, তাঁকেই চলার পথের গাইড এণ্ড ফিলসফার জ্ঞান করে, বন্ধু ও পিতার আসনে অধিষ্ঠিত করে তাঁরই সুমহান নেতৃত্ব ও আদর্শে জাগ্রত হয়ে ১৯৭১ সালে এক সীমাহীন রক্তাক্ত প্রান্তরে অবগাহন করে সর্বাত্মক মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তাঁর স্বপ্নের বাংলাদেশকে বিশ্বমানচিত্রে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিশেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ যখন গণতন্ত্র সমাজতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের দর্শনে বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন স্বনির্ভর দেশ হিশেবে এগিয়ে যাচ্ছিল -যখন আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিপক্ষে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে একটি শোষণ ও দুর্নীতিহীন, অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে বিশ্বের বুকে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করছিলো ঠিক তখনই দেশী-বিদেশি স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধকল্পে বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে এবং ৩রা নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, মনসুর আলী, কামরুজ্জামান ও বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করে। আর এভাবেই বহুকাল বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারা থেকে ছিটকে পড়েছিলো।

অতঃপর বহু আন্দোলন ও সংগ্রামের পথপরিক্রমায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক, সামাজিক, ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ধারাবাহিক প্রয়াসের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পরাজিত করে বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ধারায় পরিচালিত হচ্ছে। তবে একথাও অনস্বীকার্য যে, এর পাশাপাশি সরকারের অভ্যন্তরে লুক্কায়িত একটি দুর্নীতিবাজ লুটেরা সাম্প্রদায়িক ও গণবিরোধী অপশক্তি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দেশকে সরিয়ে নেয়ার নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দেশকে অনেকটাই সরিয়ে আনতে সক্ষমও হয়েছে!

আজ জাতির পিতার জন্বার্ষিকীতে দাঁড়িয়ে বাঙালি জাতিকে বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশকে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলায় প্রতিষ্ঠিত করার শপথ নিতে হবে।

লেখক :চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।