ঢাকা, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

প্রচ্ছদ » মিডিয়া » বিস্তারিত

সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ

শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে প্রত্যাহারের দাবি প্রেসক্লাবের

২০২৪ জুলাই ০৭ ১৩:৫৭:০৮
শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে প্রত্যাহারের দাবি প্রেসক্লাবের

রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর পরিচালক হুমায়ূন কবিরকে প্রত্যাহারের দাবি করেছে ফরিদপুর প্রেসক্লাব।

রাসেলস ভাইপার সাপে কাটা এক রোগীর তথ্য নিতে ও বক্তব্য ভিডিও করতে গেলে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন ফটো সাংবাদিককে আটকে রেখে নাজেহাল করা হয়েছে। এ ঘটনায় অবিলম্বে ওই হাসপাতালের পরিচালক হুমায়ুন কবিরকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ফরিদপুর প্রেসক্লাব।

শনিবার (৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে হাসপাতালটির পুরনো ভবনের দোতলায় অবস্থিত পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। ওই সময় থেকে বিকেলে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ওই ফটো সাংবাদিককে আটকে রাখা হয় হাসপাতালে। পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পুলিশ ওই ফটো সাংবাদিককে উদ্ধার করে।

হাসপাতে নাজেহাল হওয়া ওই ফটো সাংবাদিকের নাম শেখ নয়ন (৩১)। তিনি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ক্যামেরা পারসন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য ও ফটো সাংবাদিক শেখ নয়নের সাথে কথা বলে জানা যায়, শনিবার দুপুর দুইটার দিকে তিনি হাসপাতালটির পুরনো ভবনের দোতলায় রাসেলস ভাইপার সাপে কাটা রোগীর ভিডিও করতে গেলে তাঁকে বাধা দেয় কর্মরত আনসার সদস্য সুব্রত দাস। আনসার সদস্য সুব্রত দাস শেখ নয়নকে ছবি তুলতে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি তার ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় নয়নের সাথে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে শেখ নয়নকে ওই ভবনের নিচ তলায় আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আসাদুল্লাহ সুমনের কক্ষে নিয়ে আটকে রাখা হয়।

দুপুর ২টা ৫০ দিকে সাংবা‌দিকরা ওই হাসপাতালের পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীরকে ফোন দিয়ে কেনো নয়নকে আটকে রাখা হয়েছে তা জানতে চান। জবা‌বে প‌রিচালক জানান, হাসপাতালের ভেতরে যে কোন ছবি নিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি প্রয়োজন হয়। সে সেই অনুমতি নেয়নি'।

সংরক্ষিত এলাকা ছাড়া ছবি নিতে অনুমতি প্রয়োজন হয় কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মন্ত্রণালয়ের নিষেধ আছে।

প্রায় এক ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে খবর পেয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহরিয়ার হাসপাতালে গিয়ে শেখ নয়নকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

শেখ নয়ন বলেন, চরভদ্রাসন উপজেলায় রাসেলস ভাইপার সাপে কাটা একজন রোগীর ছবি ও তথ্য সংগ্রহের হাসপাতালের পুরা‌নো ভবনের দোতালায় সার্জারি ওয়ার্ডে গিয়েছিলেন তিনি । সেখানে ছবি তোলা ও তথ্য সংগ্রহের সময় তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন আনসার সদস্যরা। পারে তাকে আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তার কক্ষে নিয়ে বসিয়ে রাখা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

বিষয়টি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহাসান তালুকদারকে জানা‌নো হয়েছে। তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এ ঘটনা‌টি নি‌য়ে ফরিদপুরের কর্মরত সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে শনিবার সন্ধায় প্রেসক্লাবে ঘটনা‌টি নিয়ে জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় হাসপাতালে সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাংবাদিকদের সাথে এমন নেক্কারজনক আচরণের বিচার দাবি করা হয়। হাসপাতাল পরিচালকের বেপরোয়া আচরণের বিষয়েও আলোচনা করা হয়। সভা থেকে অবিলম্বে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীরকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। অন্যথায়, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যেকোনো ইতিবাচক খবর থেকে বিরত থাকবে সাংবাদিক সমাজ মর্মে ‌সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এছাড়া আজ ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের ওই জরুরি সভায়।

(আরআর/এএস/জুলাই ০৭, ২০২৪)